যুক্তরাষ্ট্রের পেরিস সিটিতে হলো স্থায়ী শহীদ মিনার

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের পেরিস সিটির প্রবাসী বাংলাদেশিরা পেল স্থায়ী শহীদ মিনার। শহরের একটি পাবলিক হলের সামনের পার্কে ১ লাখ ৮৭ হাজার মার্কিন ডলার ব্যয়ে স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করেছেন সিটি কাউন্সিল।

আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষে প্রবাসীরা ছাড়াও শহরের ভিনদেশিরা প্রভাতফেরিসহ নানা কর্মসূচিতে অংশ নেবেন স্থায়ী এ বেদিতে।

বাংলাদেশিদের আবেদনে সাড়া দিয়ে সিটি মেয়রের আন্তরিক উদ্যোগে গড়ে উঠেছে বাঙালির সংগ্রাম, আত্মত্যাগ আর অহংকারের প্রতীক এ শহীদ মিনার।

Travelion – Mobile

 যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসের খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

বাংলাদেশ কমিউনিটি সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ ডে ইনক. সংগঠনের ব্যানারে প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্থায়ীভাবে শহীদ মিনারের আর্জি জানিয়ে সিটি মেয়র মাইকেল এম ভার্গাসের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করে।

পরে এ নিয়ে মেয়রের সঙ্গে বাংলাদেশ কমিউনিটি প্রতিনিধি দলের মতবিনিময় বৈঠকে শহীদ মিনারের একটি নকশা (কাঠের তৈরি শহীদ মিনার) উপস্থাপন করা হয়।

বাংলাদেশি কমিউনিটি আবেদন ও উপস্থাপনায় মেয়র আগ্রহী হন এবং প্রচলিত রীতিতে সিটি কাউন্সিলের অর্থায়নে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের ঘোষণা দেন।

বৈঠকে ‘ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ ইনক. এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কমিউনিটি নেতা মোহাম্মদ খলিলুর রহমান রাজু, বর্তমান সভাপতি শহীদ আহমেদ মিঠু, সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল শাহীন, সহসভাপতি টিটো ইসলাম, অ্যাম্বাসেডর শওকত আলম, কনভেনর সাঈদ হিমু, জনসংযোগ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল, উপদেষ্টা সাইফুর ওসমানী জিতু, ইসমাইল হোসেন এবং মোহাম্মদ আলী উপস্থিত ছিলেন।

মো. খলিলুর রহমান রাজু বলেন, ‘মেয়রের আন্তরিকতার কারণে খুব দ্রুত উদ্যোগ নেয় সিটি কাউন্সিল। গত সেপ্টেম্বরে শুরু হয় নির্মাণ কাজ এবং ৩ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়।’

গত ২ ডিসেম্বর মেয়র মাইকেল এম ভার্গাস ও লস এঞ্জেলেসে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল সামিয়া আঞ্জুমসহ বাংলাদেশ কমিউনিটি প্রতিনিধি দল শহীদ মিনারটি সরেজমিন পরিদর্শন করে।

এ সময় মেয়র মাইকেল এম ভার্গাস বলেন, ‘মাতৃভাষার জন্য সংগ্রামের পথ বেয়ে বাঙালিরা স্বাধীন একটি ভূখণ্ড লাভ করেছেন-এটি ইতিহাসে বিরল ঘটনা। বাঙালির এই ত্যাগের কথা সকল ভাষাভাষী মানুষকে জানানোর প্রয়োজন রয়েছে ভীষণভাবে। এই শহীদ মিনার হয়ে উঠবে সে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।’

‘এ ছাড়া এটি পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে নির্মিত হওয়ায় ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের কৌতুহলের অবসানও ঘটাতে সক্ষম হবে’, তিনি বলেন।

বাংলাদেশ কমিউনিটি নির্মাণ কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এমন উদ্যোগের জন্য মেয়র ও সিটি কাউন্সিলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

পরে মেয়র দপ্তরে অনুষ্ঠিত মতবিনময় বৈঠকে শহীদ মিনারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের ও আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালনের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

ক্যালিফোর্নিয়ার বৃহত্তম শহর লসএঞ্জেলেস সিটি থেকে ৭১ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এক সময়ের রেলওয়ের সিটি হিসেবে খ্যাত পেরিস সিটিতে হাজার দশেক বাংলাদেশির বসবাস। নতুন বসতির এ বাঙালিরা নব উদ্যমে আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের পথে থাকলেও সঙ্গে জড়িয়ে রেখেছেন বাঙালির চিরায়ত সংস্কৃতি এবং সংগ্রামী চেতনা। বাড়ির আঙ্গিনায় কাঠের ফ্রেমে শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এসেছেন।

আরও পড়তে পারেন :
মুক্তিযুদ্ধের বিকৃতি রোধে যুক্তরাষ্ট্রে ৩ প্রবাসী সংগঠনের সম্মিলিত আয়োজন
নিউইয়র্কে ‘গাইবান্ধা মুক্ত দিবস’ উদযাপন
গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের স্মৃতি রক্ষার দাবি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের
মিশিগানে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি নিহত
যুক্তরাষ্ট্র শিল্পকলা একাডেমির ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
বাংলাদেশে বাউলদের উপর হামলার প্রতিবাদে নিউইয়র্কে বিক্ষোভ
নিউইয়র্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী উদযাপন
নিউইয়র্কে ‘সাহিত্য একাডেমির’ যুগপূর্তিতে বর্ণাঢ্য আয়োজন
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকার নতুন নেতৃত্ব
নিউইয়র্ক মাতলো লালন উৎসবে
নিউইয়র্কে মুগ্ধতা ছড়ালো নীলা জেরীনের ‘অষ্ট নায়িকা’

লসএঞ্জেলেস সিটিতে বহুবছর আগে ‘লিটল বাংলাদেশ’ স্থাপিত হলেও এখন পর্যন্ত স্থায়ী একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে ৩ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি অধ্যুষিত নিউইয়র্ক সিটিতে আজ অবধি স্থায়ী একটি শহীদ মিনারের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।

বর্তমানে নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের প্যাটারসন এবং টেক্সাসের হিউস্টনে স্থায়ী শহীদ মিনার রয়েছে। মিশিগানের হেমট্রমিক সিটিতে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে কম্যুনিটি ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!