উহান থেকে বাংলাদেশিরা ৬ ফেব্রুয়ারির আগে ফিরতে পারবে না

আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে তথ্য প্রকাশ

৬ ফেব্রুয়ারির আগে চীনের উহানে আটকাপড়া কোনো বাংলাদেশি ফিরতে পারবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকার থেকে চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। চীনের কর্তৃপক্ষ ১৪ দিনের আগে তাদেরকে ছাড়তে রাজি হয়নি।

আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

একইসঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্র জানিয়েছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখন পর্যন্ত কোথাও করোনাভাইরাসের কারণে ভ্রমণের ওপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশনা দেয়নি। তবে আমরা অধিকতর সতর্কতার জন্য সাময়িক সময়ে চীনে যাতায়াত নিরুৎসাহিত করছি। অন্যদিকে বাংলাদেশে যে চীনা নাগরিকরা আছেন তাদের দিকে নজর রাখা হচ্ছে।

Travelion – Mobile

মন্ত্রী বলেন, এখনো দেশে কোনো করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি। একজন চীনের নাগরিক ইউনাইটেড হাসপাতালে সাধারণ সর্দি-কাশি জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছে। তবে এখন তিনি সুস্থ আছেন নিজেই দেশে ফিরে যেতে চান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতাল ও সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল বিশেষভাবে আইসোলেটেড ইউনিট প্রস্তুত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সারাদেশের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও জেলা হাসপাতালের একইভাবে আইসোলেটেড ইউনিট প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক সাংবাদিকদের জানান, গত ১৫ দিনে দুই হাজার ৩০৮ জন যাত্রী স্ক্যান করা হয়েছে। প্রতিদিন তিন থেকে চারটি উড়োজাহাজে যাতায়াতকারী সবাইকেই স্ক্যান করা হচ্ছে।

ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডক্টর আবুল কালাম আজাদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

করোনা ভাইরাসের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থায় চীনের উহানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা
করোনা ভাইরাসের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থায় চীনের উহানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধের লক্ষ্যে ১৪ দিন পর্যন্ত উহানে কাউকে প্রবেশ কিংবা চীনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশটিতে যেতে দেবে না স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এ কারণে চীন থেকে যেসব বাংলাদেশি দেশে ফিরতে চান, তাদের ১৪ দিন হিসেবে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানী বেইজিংয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটার পর এই প্রথম বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফ করে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে চীনের মধ্যাঞ্চলের প্রদেশের হুবেইয়ের সব শেষ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা হয়।

করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহান শহরে চার শতাধিক বাংলাদেশি আছেন। আতঙ্কিত তাঁদের অনেকেই দেশে ফেরার আকুতিও জানিয়েছেন । প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে এরই মধ্যে চীনকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সে সঙ্গে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে।

চীনের উহানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল হাফিজ
চীনের উহানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল হাফিজ

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহানে থাকা বাংলাদেশিদের দেশে ফেরার আকুতির প্রেক্ষিতে আগ্রহীদের দেশে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়ে রোববার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

প্রস্তুতির বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন,বাংলাদেশিদের ফেরাতে সরকারের পরিকল্পনার বিষয়টি জানিয়ে চীন সরকারেরর কাছে প্রয়োজনীয় সহায়তা চেয়েছি। ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের ফিরিয়ে আনতে কীভাবে উড়োজাহাজ পাঠানো যায় তা নিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।

সামগ্রিকভাবে সব বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

আগের খবর
চীন থেকে ১৪ দিন পর ফিরতে হবে বাংলাদেশিদের
চীন থেকে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
চীনের উহানে অবরুদ্ধ বাংলাদেশিরা,ফেরার আকুতি
থাইল্যান্ডে সনাক্ত করোনা ভাইরাস, ব্যাপক সতর্কতা
ওমানে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বিমানযাত্রীদের ‘স্ক্রিনিং’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!