নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি তরুণীদের দেশি পাত্রে ‘আগ্রহ কম’

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা তরুণীদের অধিকাংশেরই বিয়ে করতে দেশীয় পাত্রের প্রতি ‘আগ্রহ কম’। প্রবাসী সংস্থা ‘কানেক্ট বাংলাদেশ’ -এর সামপ্রতিক এক জরিপের এ তথ্য ওঠে এসেছে।

নিউ ইয়র্ক প্রবাসী চিকিৎসক ও সমাজকর্মী ফেরদৌস খন্দকার পরিচালিত ‘অঙ্কুর’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠান এ তথ্য প্রকাশ করা হয় ।

‘অঙ্কুর’ কর্মকর্তারা জানান, জরিপে অংশ নেওয়া ৯০ জন কিশোর-কিশোরীর কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। একটি প্রশ্ন ছিল- তারা কি বড় হয়ে মা-বাবার দেশের ছেলে বা মেয়েকে (যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত) বিয়ে করতে আগ্রহী? এমন প্রশ্নে ৭৩% হ্যাঁ বলেছে। তার মধ্যে ৭০ শতাংশ ছেলে স্বদেশী মেয়েকে বিয়ের কথা বললেও মেয়েদের মধ্যে এই হার মাত্র ৩০ ভাগ।

Travelion – Mobile

তবে জরিপে অংশ নেওয়া ছেলেদের সংখ্যা ছিল বেশি। মোট ৯০ জনের মধ্যে ৫৬ জন ছেলে ও ৩৪ জন মেয়ে। অংশ নেওয়াদের মধ্যে ৫৮ জনের বয়স ছিল ১১ থেকে ১৮ বছর, ১৬ জনের বয়স ছিল ১৯ থেকে ২৬ বছর এবং ১৪ জনের বয়স ছিল ৩ থেকে ১০ বছর।

একটি প্রশ্নের উত্তরে ৯৬% অংশগ্রহণকারী বলেছে, তারা বাংলাদেশে ভ্রমণ করেছে। মাত্র ৪ শতাংশ এখনো বাংলাদেশ দেখেনি। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই বলেছে মা-বাবার দেশ দেখে মুগ্ধ তারা। এর কারণ হিসেবে তারা সবুজ শ্যামল দেশটির প্রতি নিজেদের ভালো লাগার কথা তুলে ধরেছে। বাংলাদেশের মানুষ খুব বন্ধুপরায়ণ, পারিবারিক বন্ধন খুব শক্ত। সামাজিক মূল্যবোধের কথাও তুলে ধরেছে তারা।

তবে খুব অল্প কয়েকজন বলেছে দূষণ, ঘনবসতি, বিশৃঙ্খলা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ কিছু কারণে তাদের বাংলাদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ভালো হয়নি।

একটি প্রশ্নের উত্তরে জরিপে অংশ নেওয়া শতভাগ কিশোর-কিশোরী বলেছে, একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান হিসেবে তারা গর্বিত। তাদের প্রায় সবাই বড় হয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চায়।

‘অঙ্কুর’ প্রধান ও কর্মসূচির উদ্যোক্তা ফেরদৌস খন্দকার বলেন, “আমরা কিছু প্রশ্ন রেখে কিশোর-কিশোরীদের কাছ থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলাম। এটা তাৎক্ষণিকভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপরও খুব ভালো কিছু পর্যবেক্ষণ আমরা পেয়েছি। ভালো লেগেছে প্রবাসে বেড়ে উঠলেও শিশু-কিশোররা বাংলাদেশ নিয়ে ভাবে। দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চায়।”

বিয়ে নিয়ে বাংলাদেশি তরুন-তরুণীদের ভাকনার বিসয়ে তিনি বলেন, “পুরো বিষয়টি হয়তো তাদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। অবস্থা ও কালের পার্থক্যে এমনও হতে পারে, এ প্রশ্নের উত্তরে কিছু তারতম্য ঘটবে। কিন্তু আপাতত আমরা যে উত্তর পেয়েছি সেটাই কেবল সবার সামনে তুলে ধরেছি।”

ভবিষ্যতে ফ্লোরিডা, ক্যালিফোর্নিয়া, বস্টন ও ওয়াশিংটন ডিসিসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ‘কানেক্ট বাংলাদেশ’ কর্মসূচি চালাবে বলে জানায় সংস্থাটি।

সেই সঙ্গে অন্যান্য অঙ্গরাজ্যেও এমন জরিপ চালানোর পরিকল্পনার কথা জানান তারা। তখন প্রশ্নের উত্তরের পাশাপাশি কিশোর-কিশোরীদের ভাবনাগুলোর ব্যাখ্যাও জানতে চাওয়া হবে। পরে প্রতিবেদন আকারে তা প্রকাশ করা হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!