মালয়েশিয়ায় মাটিচাপায় নিহত দুই বাংলাদেশি তরুণের মরদেহ পেতে মায়ের আকুতি

মালয়েশিয়ায় কেলানতাং রাজ্যের মাচাং জেলার একটি হাসপাতালের হিমঘরে এক সপ্তাহ ধরে পড়ে আছে মাটিচাপায় নিহত ৩ তিন বাংলাদেশির মরদেহ। এর মধ্যে শরীয়তপুরের দুই তরুণের পাগলপ্রায় মা শেষবারের মতো ছেলের মুখ দেখার আকুতি জানিয়েছেন। এরা হলেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ কেবলনগর গ্রামের জাহেদুল ইসলাম (২০) ও জাজিরার আহাদ্দি মাদবরকান্দি এলাকার সাজ্জাদ হোসেন (২০)।

২ নভেম্বর মালয়েশিয়ার কেলানতাং রাজ্যের মাচাংয়ে মাটি কাটা শ্রমিকের কাজ করার সময় তাঁরা নিহত হন। তাঁদের সঙ্গে মনিরুল ইসলাম (৩১) নামের পাবনার এক যুবকেরও মৃত্যু হয়। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের পর মাচাংয়ের হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।

অভাব দূর করতে দেশ ছেড়েছিলেন দুই তরুণ। তাঁদের লাশ এখন মালয়েশিয়ার হিমঘরে পড়ে আছে। তাঁদের এমন পরিণতি মানতে পারছেন না স্বজনেরা। ছেলের জন্য সারাক্ষণ কেঁদে চলেছেন জাহেদুলের মা আলেয়া বেগম ও সাজ্জাদের মা নুরজাহান বেগম।

Travelion – Mobile

জাহেদুলের মা আলেয়া বেগম বলেন, ‘পরিবারের সবার ছোট জাহেদুল খুব আদরের ছিল। আমার মানিক মারা যাওয়ার দুই দিন আগে ফোন করেছিল। আল্লাহ কেন আমার বুক থেকে মানিকরে নিয়ে গেল। আমি কি জাহেদুলের মুখটা আর দেখতে পামু না?’

সাজ্জাদের মা নুরজাহান বেগম বলেন, ‘১০ মাস ধইরা ছেলেকে দেহি না। আমি ছেলের মুখটা দেখতে চাই। সরকার কি আমার ইচ্ছাটা পূরণ করব না? ওর লাশটা কি হাসপাতালেই পইড়া থাকব, নাকি দেশে আনা হইব?

তাঁদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়ে মালয়েশিয়ায় থাকা দুই তরুণের স্বজন শফিক লিবলু ব্যাপারী বলেন, ‘তাঁদের কাগজপত্র হাইকমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন, সেখান থেকে ক্ষতিপূরণ ও বিমার টাকা পেতে দেরি হচ্ছে। প্রক্রিয়া শেষে তাঁদের লাশ ফেরত পাওয়া যাবে। তখন মরদেহ নিয়ে বাংলাদেশে রওনা হবো’।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘ আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ রাখছি। তাঁদের মরদেহ দেশে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আইনগত কিছু প্রক্রিয়ার জন্য দেরি হচ্ছে।’

স্বজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সদরের চিকন্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ কেবলনগর গ্রামের গ্রাম পুলিশ আবদুর রশিদ খানের ছোট ছেলে জাহেদুল গত ২৩ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেন। দালালের চুক্তি অনুযায়ী পোশাক কারখানায় কাজ করার কথা থাকলেও কাজ পান একটি নির্মাণপ্রতিষ্ঠানে।

আর জাজিরার কুন্ডেরচর এলাকায় পদ্মার ভাঙনে নিঃস্ব কৃষক শাহজাহানের ছেলে সাজ্জাদ নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। পরিবারের অভাব দূর করতে তিনি গত ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়ায় যান।

সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!