মাঝে আকাশে উড়োজাহাজে আগুন, শিউরে ওঠে বিশ্ব!

কিছু যাত্রী উড়োজাহাজে খুব আরামদায়ক একটি জানালার খোঁজে থাকেন। পাহাড়ের একটি দুর্দান্ত দৃশ্য, দিগন্তের সূর্যাস্ত দেখা বা কিছু মনোরম সাদা মেঘের বিন্যাসে অবাক হয়ে তাকানো। তবে মাঝে মাঝে উড়োজাহাজে ছোট জানালায় এমন কিছু জিনিস ধরা দেয় যা কেউ কখনও দেখার আশা করেন না। আর তা যদি হয় উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে ধরা আগুনের লেলিহান শিখা, নিশ্চয়ই সেটা ভয়ংকর।

ঠিক এমন ‘দেখার’ অভিজ্ঞতা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ম্যানিলা যাওয়ার ফিলিপাইন এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের যাত্রীদের। ঔ ফ্লাইটের কেবিন এবং বাইর থেকে তোলা ভয়ংকর ভিডিও প্রকাশ পায় সোশ্যাল মিডিয়ায়, যা দেখে শিউরে ওঠে বিশ্ব।

বোয়িং ৭৭৭-৩০০ উড়োজাহজটির ডানার নিচে ইঞ্জিনের তীব্র আগুনের শিখা ছড়িয়ে পড়ার পরে “মেডে” ঘোষণা এবং জরুরী অবতরণ করতে বাধ্য হয়। এমন ভয়াবহ মুহুর্তটি কিছু হতবাক যাত্রীর ভিডিওতে ধরা পড়েছিল, যারা বোধগম্য কারণে উদ্বিগ্ন ছিলেন। ভিডিওটিতে ডান ইঞ্জিন থেকে আগুনের শিখাগুলি দেখা যাচ্ছে এবং যাত্রীদের “কিছু একটা ভুল” বলতে শোনা যায়।

Travelion – Mobile


লস অ্যাঞ্জেলেস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের উধৃবতি দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো খবরে বলা হয়, ফ্লাইটটি ফিলিপিন্সের রাজধানী মানিলা যাচ্ছিল। লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ওড়ার পরেই ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। সঙ্গে সঙ্গে উড়োজাহাজটি ফিরিয়ে আনা হয়, লস অ্যাঞ্জেলেস বিমানবন্দরে। দমকল ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা উড়োজাহাজে কাছে দ্রুত পৌঁছে যান। আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। কেউ আহত হয়নি।

ভিডিওর ব্যাকগ্রাইন্ডে, পরিষ্কার শোনা যাচ্ছে একজন যাত্রী বলছেন, “ওহ নো”। সঙ্গে অন্য যাত্রীর জিজ্ঞাসা’কী হতে যাচ্ছে’। আশ্চর্যজনকভাবে অন্য একজন বলেছেন, “আমাদের উচিত ফেরত যাওয়া “। তবে এই পর্যায়ে কোনও সন্দেহ নেই, যাত্রীরা ভাবছিল যদি ঘুরিয়ে ফেরত যাওয়া কি যথেষ্ট হবে?

বোয়িং ৭৭৭-৩০০ উড়োজাহজটির ডানার নিচে ডান ইঞ্জিনের আগুন ধরে যাওয়ায় জরুরী অবতরণ করতে বাধ্য হয়।
বোয়িং ৭৭৭-৩০০ উড়োজাহজটির ডানার নিচে ডান ইঞ্জিনের আগুন ধরে যাওয়ায় জরুরী অবতরণ করতে বাধ্য হয়।
বোয়িং ৭৭৭-৩০০ উড়োজাহজটির ডানার নিচে ডান ইঞ্জিনের আগুন ধরে যাওয়ায় জরুরী অবতরণ করতে বাধ্য হয়। [/caption]
এই ঘটনার পরে এলএএক্স বিমানবন্দরে এনবিসি নিউজের সাথে সাক্ষাত্কারে ঔ উড়োজাহাজের যাত্রী দেববি সিসন বলেন, “আমি কাঁপতে শুরু করেছিলাম, কারণ আমি ভীত হয়ে পড়ি, কি হতে হচ্ছে? ”

কেবিন থেকে তোলা অন্য একটি ভিডিওতে একজন যাত্রী ইঞ্জিনে আগুনের বিষয়ে কম উদ্বিগ্ন বলে মনে হচ্ছে কারণ তিনি উত্তেজিতভাবে বলে উঠলেন “ওহে আমার প্রভু, আমরা আগুনে পড়ে আছি এখানে। আমি এর আগে কখনও দেখিনি ”। সন্দেহ নেই যে তিনি আশা করছেন তিনি একই পরিস্থিতি আর দেখতে পাবেন না।
ফাদার অ্যাডাম টেলর ফ্লাইটের যাত্রী তার মেয়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, আগুনের শিখা যখন সে দেখল প্রথমে ভেবেছিল যে এটি ব্যাকফায়ারিংয়ের মতো স্বাভাবিক, তবে দ্রুত বুঝতে পেরেছিল যে এটি তার চেয়ে গুরুতর। সে বলছিল,”আমি জানি ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টরা আতঙ্কিত হওয়ার কথা নয়, তাই এই মুহুর্তে আমার মনে হয় এটি বেশ গুরুতর।”

লস অ্যাঞ্জেলেস বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণের পর তোলা একটি ভিডিওতে পরিষ্কার দৃশ্যমান ছিল ডানার নিচে আগুনের শিখা ।

তবে সবার আগে যে ভিডিওটি শুক্রবার বিশ্বব্যাপী ভাইরাল হয়ে আলোড়ন তুলে সেটি ছিল অ্যান্ড্রু নামের এক ব্যক্তি পরিচালিত বিগ রেড টুইটার হ্যান্ডলে আপলোড করা। ১৫ সেকেন্ডের ‘ভয়ঙ্কর’ ভিডিওটিতে দেখা গেছে, মাঝ আকাশ থেকে দ্রুত নেমে আসছে একটি উড়োজাহাজ। পিছনের অংশে আগুনের শিখা, সেই সঙ্গে বেরিয়ে আসছে কালো ধোঁয়া।


ভিডিওটি ১২ ঘণ্টায় প্রায় ১৭ হাজার বার দেখা হয়েছে। ফক্স ১১ লস অ্যাঞ্জেলস এই ভিডিওটি ব্যবহার করার অনুমতি চেয়ে টুইট করেছে। এ ছাড়াও প্রচুর টুইটার হ্যান্ডল থেকে কমেন্ট করা হয়েছে।

এর বাইরেও উড়োজাহাজের আরও যাত্রী, বিমানবন্দর কর্মিরাও অনেকগুলো ভিডিও নিজেদের একাউন্টে আপলোড করে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!