পর্তুগালে জাতীয় শোক দিবস পালিত

পর্তুগালে দিনব্যাপী তিনপর্বের কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে বাংলাদেশে দূতাবাস।।

১৫ আগস্ট সকালে রাজধানী লিসবনে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে দিন ব্যাপী কর্মসূচীর সূচনা করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান।

বিকেলে এ উপলক্ষে “আলোকচিত্রে সংগ্রামী বঙ্গবন্ধু”শীর্ষক এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছাত্রাবস্থা থেকে শুরু করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত সময়ে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের যুগান্তকারী ঘটনাভিত্তিক আলোকচিত্র স্থান পায় ।

Travelion – Mobile

সন্ধ্যায় আয়োজিত শেষপর্বে রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশি কমিউনিটি সংগঠনের নেতারা জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন। এ উপলক্ষে স্মরণ সভার শুরুতে জাতির জনক ও তাঁর পরিবারবর্গ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ ছাড়া জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনানো হয়।

পর্তুগালে জাতীয় শোক দিবসে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করে  বাংলাদেশ কমিউনিটি সংগঠনের নেতারা
পর্তুগালে জাতীয় শোক দিবসে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করে বাংলাদেশ কমিউনিটি সংগঠনের নেতারা

স্মরণ সভায় বক্তারা ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এর অভিশপ্ত রাতে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির নীল নক্সায় শাহাদাৎ বরণকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যগণসহ সকল শহিদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

জাতির পিতার অতুলনীয় অবদান ও তাঁর জীবনের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রাণনাশের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীরা শুধু ব্যক্তি মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেনি, তারা চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিশ্চিহ্ন করতে। কিন্তু ঘাতকেরা বাঙ্গালির মন থেকে যেমন বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবিকে মুছে ফেলতে পারেনি; তেমনই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চিরন্তন শিখাকেও নিভিয়ে দিতে পারেনি।

বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রীর উপর বারবার আক্রমণের কথা উল্লেখ করে তিনি সতর্ক করেন যে, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র কখনো থেমে থাকেনি। প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের এই হুমকী মোকাবেলা করে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে বাস্তবে রূপান্তর করার কাজে সবাইকে সংকল্পবদ্ধ হবার জন্য আহবান জানান।

জাতীয় শোক দিবসে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করছে পর্তুগাল-বাংলা প্রেসক্লাবের নেতারা
জাতীয় শোক দিবসে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করছে পর্তুগাল-বাংলা প্রেসক্লাবের নেতারা

আলোচনা শেষে, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্র/সরকার প্রধান হিসেবে ”বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব” এবং ”বঙ্গবন্ধুর শাহাদৎ বিষয়ের উপর নির্মিত দুটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
এর পর, বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পর্ব নিবেদন করা হয়। এতে, জাতির পিতার শাহাদাৎ বরণের উপর রচিত কবিতা আবৃত্তি পরিবেশন করা হয় এবং “যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই” শীর্ষক গানের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।

সবশেষে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

পরিবারের অন্যান্য শহীদ সদস্য ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!