কাতারে আইনসভার প্রথম নির্বাচনে জিতলেন না কোনো নারী

কাতারে আইনসভার (শুরা কাউন্সিল) প্রথম নির্বাচনে কোনো নারী প্রার্থীই জিততে পারেনি। উপসাগরীয় দেশটিতে গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনে কোনো নারী প্রার্থীকে ভোটাররা সমর্থন করেননি। এ নিয়ে হতাশ তাঁরা।

নারী প্রার্থীদের সান্ত্বনা দিয়ে কাতারের জনপ্রিয় লেখক এবতেশাম আল-সাদ টুইটারে লেখেন, ‘আপনারা লড়াইয়ে হেরেছেন কিন্তু অংশগ্রহণের লড়াইয়ে জিতেছেন।’

শনিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৪৫টি আসনের মধ্যে ৩০টিতে ভোটাভুটি হয়। এতে ২৬ জন নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, নির্বাচনে ভোট প্রদানের হার ছিল ৬৩ দশমিক ৫ শতাংশ। দেশটিতে রাজনৈতিক চর্চা নিষিদ্ধ হলেও রাষ্ট্রে সীমিত পর্যায়ে আইনকানুন ও নীতিমালা অনুমোদনের সুযোগ পাবে এই কাউন্সিল।

Travelion – Mobile

দোহার মারখিয়া জেলা থেকে নির্বাচনে প্রতিদন্ধিতা করেছিলেন নার্সিং ম্যানেজার আয়শা হামাম আল-জসিম (৫৯) ।প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করেছিলেন, নারীরা নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মধ্য দিয়ে আমি তাঁদের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি’।

ভোটে হারলেও তিনি নিজেকে একজন শক্ত–সমর্থ ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবেই দেখেন। বলেন, ‘আপনি আমাকে দুর্বল মনে করতে পারেন, তা আপনার ব্যাপার। কিন্তু আমি দুর্বল নই।
আমি নিজেকে একজন পুরুষের মতোই উপযুক্ত বলে মনে করি’।

তিনি আরও বলেন, “সব পুরুষ থাকা কাতারের স্বপ্ন নয়।” তিনি কাতারি নারীদের প্রতি আহ্বান জানান, “তারা যা বিশ্বাস করেন তা প্রকাশ করা” এবং ভবিষ্যতে শক্তিশালী নারী প্রার্থীদের ভোট দিন।

কাতারে প্রথম আইনসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ
কাতারে প্রথম আইনসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ

সব নারী প্রার্থী হেরে যাওয়ায় হতাশা নারী ভোটাররা। শাম্মা নামের এক ভোটার এএফপিকে বলেন, ‘আমি খুশি না। কেননা, সব পুরুষ প্রার্থী জিতেছেন। সত্য বলতে, আমি বিস্মিত। এই ভোট সুষ্ঠু হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, তাঁর আশা, নারী-পুরুষের প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে এই ভারসাম্যহীনতা দূর করতে আমির তাঁর মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে নারীদের রাখবেন।

আইনসভার বাকি ১৫ আসনে নিয়োগ দেবেন কাতারের আমির। আমির কখন আইনসভার মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করবেন, সেই বিষয় এখনো জানা যায়নি। শাম্মা বলেন, ‘নারীদের জন্য পাঁচটি আসনই যথেষ্ট হবে। কেননা, আমি মনে করি, একজন নারীই পৃথিবী বদলে দিতে পারেন।’

নির্বাচনে নারী প্রার্থীদের অংশগ্রহণকে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের উপসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক এলহাম ফাখরো ভোট গ্রহণের আগে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ খুবই ইতিবাচক একটি পদক্ষেপ। তবে আমি মনে করি, তাঁদের ভূমিকার বিষয়ে আমাদের প্রত্যাশাকে সীমিত করতে হবে। কেননা, মাত্র ২৬ জন নারী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এতে বিস্ময়ের কিছু নেই।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!