ওমানে করোনায় ৭ জন আক্রান্তের খবর স্রেফ গুজব
ওমানে এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাস-কোভিড নাইনটিনে আক্রান্তের কোন ঘটনা পাওয়া যায়নি। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় (এমওএইচ) নিশ্চিত করেছে যে, সুলতানাতে এই ভাইরাসের এর কোনও অস্তিত্ব এখনও রেকর্ড হয়নি।
ওমানের রাজধানী মাসকাটে করোনাভাইরাসে সাত জন বাসিন্দা পাওয়া গেছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে খবর গুজব ছড়িয়েছে তা একেবারেই ভুয়া খবর ও গুজব বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ।
মন্ত্রণালয় দেশের সকল নাগরিক ও প্রবাসীদের সরকারী উৎসগুলি অনুসরণ করতে এবং গুজবে কান না দেওয়া আহ্বান জানিয়েছে।
ওমানের নাগরিক ও প্রবাসীদের করোনাভাইরাস (২০১৯ এন-কোভ) সম্পর্কিত যে কোন তথ্যে জানতে কিংবা জানাতে ২৪৪৪১৯৯৯ নাম্বরে কল সেন্টারে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে, কীভাবে করোনভাইরাসটির লক্ষণগুলি সন্ধান করা যায় সে সম্পর্কে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। “লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং তীব্র নিউমোনিয়া। এর জন্য একটি নিবিড় যত্ন ইউনিটে কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাস এবং সমর্থন প্রয়োজন হতে পারে।”
ওমানের নাগরিক ও প্রবাসীদের কারো যদি এমন লক্ষণ দেখা যায় তাকে দ্রুত চিকিত্সার সহায়তা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রণালয় ।
মন্ত্রণালয়ের আরও পরামর্শ,“হাঁচি বা কাশির সময় কোনও টিস্যু ব্যবহার করুন এবং তারপরে আবর্জনার বিনে বা ক্যানের মধ্যে ফেলে দিন। যদি কোনও টিস্যু পাওয়া না যায় তবে আপনার কনুইতে হাঁচি বা কাশি আটকান। তারপর হাত সাবান ও পানি দিয়ে ভাল করে ধুয়ে নিন এবং সেগুলি না পাওয়া গেলে আপনি একটি হাত স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে পারেন, বিশেষত হাঁচি বা কাশির পরে। হাত পরিষ্কার বা জীবাণুমুক্ত না হলে তা(হাত) দিয়ে আপনার চোখ এবং নাকে স্পর্শ করবেন না । যারা অসুস্থ তাদের সাথে হ্যান্ডশেক বা চুম্বনের মতো সরাসরি যোগাযোগ এড়িয়ে চলুন এবং তাদের ব্যক্তিগত প্রভাবগুলি ভাগ করবেন না। যতটা সম্ভব জনাকীর্ণ স্থানগুলি এড়িয়ে চলুন এবং সব সময় শরীরে উন্মুক্ত অঙ্গগুলো পরিষ্কার করুন।”
করোনাভাইরাসের প্রাদূর্ভাবের খবর ছড়িয়ে পড়ার থেকেই এটির প্রতিরোধে কড়াকড়ি ব্যবস্থা এবং সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয় ওমানে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় (এমএইচ) সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও বেসরকারী স্বাস্থ্য সংস্থাগুলির সঙ্গে সমন্বয় করে যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিশ্চিত করে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বিমান, সমুদ্র ও স্থল বন্দর প্রবেশ পথ বা পয়েন্ট অব এন্ট্রিতে আগত যাত্রীদের কঠোরভাবে স্ক্রিনিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করে। ওমানের সিভিল এভিয়েশন (পিএসিএ) ২ শে ফেব্রুয়ারি থেকে চীনের উদ্দেশ্যে জাতীয় বিমান সংস্থা ওমান এয়ারসহ সকল বেসামরিক বিমান চলাচল স্থগিত করেছে।
এমওএইচ নাগরিক এবং প্রবাসীদের চীন ও সংযুক্ত অঞ্চলে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ এড়াতে অনুরোধ করেছে । কেউ যতি জরুরী প্রয়োজনে ভ্রমণ করেন তবে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের ভ্রমণ গন্তব্যগুলি ঘোষণা করতে হবে এবং এই অঞ্চলগুলি থেকে ফিরে আসার পর আবার রিপোর্ট করতে হবে।
এছাড়া সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে নার্সারিগুলোতে বিশেষ নির্দেশনা জারি করে।
এর আগে জানুয়ারি শুরুতে সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে কয়েক বছর আগে মধ্যপ্রাচ্যের রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম করোনাভাইরাস (এমইআরএস) প্রাদূর্ভাবের একটি পুরানো অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে ওমানে করোনভাইরাসের প্রথম ঘটনা বলে দাবি করা হয়েছিল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই খবর মিথ্যা প্রমাণিত করে দিয়ে এই জাতীয় গুজবের জন্য প্রকাশকদের বিরুদ্ধে সকল আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করার হুশিয়ারী দিয়েছিল। একই সঙ্গে করোনভাইরাস সম্পর্কিত কোনও তথ্য প্রকাশের আগে নাগরিক ও বাসিন্দা (প্রবাসী) সকলকে সরকারী চ্যানেলগুলি অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে চীনে ৬৬ হাজার ৯২২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং এ পর্যন্ত ১হাজার ৫২৩ জন মারা গেছেন,যাদের বেশিরভাগই হুবেই প্রদেশের। মূল ভূখণ্ডের চীনের বাইরে জাপান, হংকং, ফিলিপাইন এবং ফ্রান্সে চারজনের মৃত্যুর সাথে প্রায় দুই ডজন দেশ ও অঞ্চলগুলিতে প্রায় ৫০০ জন শনাক্ত হয়েছে।
আগের খবর
ওমানে করোনাভাইরাসের কোনও ঘটনা নেই : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
ওমানে করোনাভাইরাস সতর্কতায় শিশুদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা
ওমানে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বিমানযাত্রীদের ‘স্ক্রিনিং’
ওমানের নাগরিকদের বিনা প্রয়োজনে চীনে না যাওয়ার পরামর্শ