১০ হাজার নয়, ১৭০২টি পাসপোর্ট আটকে আছে ইতালি প্রবাসীদের
নানা কারণে বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদপ্তরে ইতালি প্রবাসীদের ১ হাজার ৭০২টি পাসপোর্ট আটকে রয়েছে । এর মধ্যে তথ্য পরিবর্তনের কারণে ৭৮২টি এবং পুলিশ ভেরিফিকেশনের কারণে ৯২০টি পাসপোর্ট রয়েছে। তাই ইতালি প্রবাসীদের ১০ হাজারের অধিক পাসপোর্ট জটিলতা রয়েছে বলে সাম্প্রতিককালে যে প্রচার চালানো হচ্ছে তা ভিতিহীন ও বিভ্রান্তকর।
৭ নভেম্বর ইতালির রাজধানী রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের স্থায়ী ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মলেন পাসপোর্টের হালনাগাদ তথ্য তুলে ধরে কর্মকর্তার বলেন, ১০ হাজার পাসপোর্ট নয়, রোম দূতাবাসে প্রক্রিয়ায় আছে ইতালি প্রবাসীদের ১৭০২টি পাসপোর্ট। এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন কর্মকর্তারা।
অল ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাব ও বাংলা প্রেসক্লাব ইটালির সাংবাদিকরা উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মলেনে প্রবাসীদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের নানা সুযোগ-সুবিধাগুলোও তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর সিকদার মো. আশরাফুর রহমান ও এরফানুল হক এবং প্রথম সচিব শেখ সালেহ আহমেদ সাংবাদিকদের সামনে এই তথ্যগুলো তুলে ধরেন।
২০১৪ সাল থেকে চলতি বছরের ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরে প্রথম সচিব সালেহ আহমেদ জানান, ২০১৪ সাল থেকে ডিজিটাল পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ শুরু হয়। তখন ৪১৭টি পাসপোর্ট জমা পড়ে, দূতাবাস প্রদান করে ৪১৭টি। ২০১৫ সালে জমা পড়ে ২৫ হাজার ৭৫৪টি, প্রদান করা হয় ২৫ হাজার ৬৩৭টি। ২০১৬ সালে জমা পড়ে ১৬ হাজার ৯০৮টি, প্রদান হয় ১৬ হাজার ৯৯৮টি।
২০১৭ সালে জমা পড়ে ১০ হাজার ৯৮৬টি, প্রদান করা হয় ১০ হাজার ৫৪০টি; ২০১৮ সালে ১০ হাজার ৭৮৬টি জমা পড়লে প্রদান করা হয় ৭ হাজার ৯৬৭টি; সর্বশেষ ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত জমা পড়ে ৮ হাজার ৫৮৭টি আর দূতাবাস প্রদান করে ১১ হাজার ৪৫৬টি।
তথ্য পরিবর্তনের কারণে পাসপোর্ট প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ৭৮২টি এবং পুলিশ ভেরিফিকেশনের কারণে পেইন্ডিং আছে ৯২০টি পাসপোর্ট। সব মিলিয়ে ১৭০২টি পাসপোর্ট বর্তমানে আটকে রয়েছে বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদপ্তরে।
এসব পাসপোর্ট আবেদনকারীদের বেশিরভাগের বিষয়ে তথ্য গোপন করার অভিযোগ রয়েছে। এভাবে তথ্য গোপন করে পাসপোর্ট আবেদন না করারও আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
রেমিটেন্স নিয়ে কাউন্সিলর এরফানুল হক বলেন, ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১০ হাজার ইউরো পর্যন্ত বৈধপথে রেমিটেন্স প্রেরণকারীদের পুরস্কার প্রদান করা হবে। এখানে উৎসাহ প্রদানের জন্য পুরুষ থাকবে তিনজন এবং নারী থাকবে দুইজন। এক্ষত্রে ৩০ নভেম্বর আবেদন গ্রহণের শেষ তারিখ বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে শতকরা ২ শতাংশ প্রণোদনা কার্যকর করেছে এবং যেই ব্যাংকগুলো এখনো করেনি সেগুলোও এই প্রক্রিয়া শুরু করবে। পাশাপাশি ওয়েজ অনার্স কল্যাণ বোর্ডে নিবন্ধন করলে সন্তানদের লেখাপড়া সংক্রান্ত সহযোগিতা, প্রবাসী ঋণ ও প্রবাসীদের মরদেহ বহনের খরচসহ বিভিন্ন সুবিধাগুলোর কথাও তুলে ধরেন তিনি।
এর আগে গত ২৭ অক্টোবর রোমে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের ‘বিশ্ব সিলেট উৎসব’ প্রবাসীদের স্বার্থে বাংলাদেশ দূতাবাস নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন ইতালিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার ।
আগের খবর
তথ্য ভুলে পাসপোর্ট আটকা পড়েছে ইতালি প্রবাসীদের