ইতালিতে বিশ্ব সম্মেলনে বাংলাদেশের সাফল্য-অর্জন তুলে ধরলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ইতালিতে অনুষ্ঠিত চতুর্থ গ্লোবাল মেন্টাল হেলথ সামিটে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের সাফল্য, অর্জন আর সরকারের নেওয়া নানা যুগান্তকারী পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

১৩-১৪ অক্টোবর রাজধানী রোমে অনুষ্ঠিত দু’দিন ব্যাপী সম্মেলনে বিশ্বের ৫২টি রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থা অংশ নেয়। ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং ‘কমিউনিটি মেন্টাল হেলথ’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন তিনি । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রী রবার্তো স্পেরেনজা।

সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য-‘দক্ষতা, অধিকার এবং যত্ন’ এই তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে সকলের জন্য কমিউনিটি ভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়।

Travelion – Mobile

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে বাংলাদেশের জনসম্পৃক্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিস্ময়কর অর্জনের উদাহারণ দিয়ে কমিউনিটি ভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

>প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

১৪ অক্টোবর সকালে কান্ট্রি ইন্টারভেনশন পর্বে জাহিদ মালেক কমিউনিটি মেন্টাল হেলথ এবং ইনোভেশন এন্ড মেন্টাল হেলথ এর উপর তথ্য ও উপাত্তসহ বক্তব্য উপস্থাপন করেন তিনি।

আরও পড়তে পারেন : বাংলাদেশ-ব্রুনাইয়ের মধ্যে ১ চুক্তি ও ৩ সমঝোতা স্মারক সই

এসময় স্বাস্থ্য মন্ত্রী কোভিড মোকাবেলা এবং কোভিড টিকাদানে বাংলাদেশের অনন্য সাফল্যের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাস্থ্যখাতে সাফল্যের ধারাবাহিকতায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকেও সফলভাবে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে সক্ষম হবে।

তিনি বাংলাদেশের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ আইন, নীতি এবং কর্মকৌশল রয়েছে বলে উল্লেখ করে বলেন, দেশের জনগণের মানসম্মত মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নীতি ও কর্মকৌশলের বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।

‘৮ টি বিভাগীয় শহরে নতুন ৮টি মানসিক স্বাস্থ্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ এবং জেলা উপজেলা পর্যায়ে এনসিডি কর্ণারে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেবার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে’ তিনি যোগ করেন।

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য স্কুল মেন্টাল হেলথ কার্যক্রম, এমএইচগ্যাপ প্রশিক্ষণসহ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের বিষয় সম্মেলনে তুলে ধরেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ।

বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সম্পদ সীমিত এবং মানসিক স্বাস্থ্য খাতে দক্ষ জনবলের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও ই-মেন্টাল হেলথ, এ্যাপভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য সেবাসহ নানা উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা বিকেন্দ্রীকরণের প্রক্রিয়া চলমান’।

আরও পড়তে পারেন : জার্মানিতে গবেষণা, ফসলে নাইট্রোজেন নিয়ন্ত্রণের নতুন জিন আবিষ্কার বাংলাদেশির

এই প্রক্রিয়াসমূহকে আরো বেগবান করে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবায় মানসিক স্বাস্থ্যকে অন্তর্ভূক্ত করতে ‘স্পেশাল ইনিশিয়েটিভ ফর মেন্টাল হেলথ’ কার্যক্রমে বাংলাদেশকে অন্তর্ভূক্ত করায় মন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান।

সম্মেলন শেষে মন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি দলের সাথে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে দেশে দক্ষ জনবল সৃষ্টির জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেন।

এসময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি কোভিড মোকাবেলা ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের অসাধারণ সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

মন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধির সাথে আলোচনায় কমিউনিটি বেইজড মেন্টাল হেলথ সার্ভিস প্রদানে দেশের বিদ্যমান প্রাথমিক স্বাস্হ্য সেবা অবকাঠামো যেমন ১৪০০০ কমিউনিটি ক্লিনিক, ৪০০০ ফেমিলি ওয়েলফেয়ার সেন্টার, ৫০০ উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালসহ অন্যান্য স্বাস্হ্য সেবা প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করার কথা বলেন।

আরও পড়তে পারেন : ৩ মাসে বিমানের রেকর্ড যাত্রী পরিবহন, আয় ১৫৬৩ কোটি টাকা

>প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

তিনি কমিউনিটির মাধ্যমে মানসিক স্বাস্হ্য সেবা প্রদানের জন্য ব্যক্তি নির্বাচন, তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি, অর্থায়ন ইত্যাদির উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এসকল বিষয়ে তিনি বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্থার সহায়তা কামনা করেন। তাছাড়া, প্রধান মন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে প্রণীত মানসিক স্বাস্হ্য বিষয়ক আইন, নীতিমালা ও কর্মকৌশলের কথা উল্লেখ করেন।

এর আগে ১২ অক্টোবর মন্ত্রীর নেতৃত্বে ৪-সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল রোমে পৌঁছালে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান বিমানবন্দরে স্বাগত জানান।

মন্ত্রী রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং দূতাবাসের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!