গত তিনি মাসে যাত্রী পরিবহনে রেকর্ড করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। একই সময়ে সর্বোচ্চ পরিমাণ রাজস্ব আয় করেছে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থাটি।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জাহিদ হোসেন আজ রাজধানীর উত্তরায় বিমানের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, বিমান গত তিনি মাসে প্রায় ৮ লাখ ৮০ হাজার যাত্রী পরিবহন করেছে। অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে এসময় আয় হয়েছে ১ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা। এই ধারা বজায় রাখতে পারলে এক বছরে ৩২ লাখ যাত্রী পরিবহন করবে বিমান।
তিনি বলেন, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিসেও প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নতি হয়েছে। এখন ৪৫ মিনিটের মধ্যে যাত্রীদের সমস্ত লাগেজ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
জাহিদ হোসেন বলেন, গত তিন মাসে রাজস্ব আদায়, যাত্রী হ্যান্ডলিং ও যাত্রীসেবায় প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়েছে। যেভাবে যাত্রী বাড়ছে তাতে আগামী এক বছরে অন্তত ৩২ লাখের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হতে পারে। একইভাবে রাজস্বও বাড়বে।
যাত্রীসেবা সম্পর্কে তিনি বলেন, মানসম্মত যাত্রীসেবা নিশ্চিত করাই বিমানের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
‘এ জন্য, বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের সময়সীমা আরও কমানো হয়েছে। এখন একটি ফ্লাইটের প্রথম লাগেজ ১৮ মিনিটের মধ্যে দেওয়া হয় এবং শেষ লাগেজটি সর্বোচ্চ ৪৫ মিনিটের মধ্যে দেওয়া হয়। ব্যাপক মনিটরিং, তত্ত্বাবধান এবং ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তনের কারণে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে।’
গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিসের সার্বিক কার্যক্রম তদারকি করতে সপ্তাহে চার দিন বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকার কথা উল্লেখ করে জাহিদ হোসেন বলেন, বিমান নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো বিমান চার বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। বাংলাদেশের বিমান আইএটিএ স্বীকৃত একমাত্র প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি ইএএসএ কর্তৃক পরিচালিত অডিটে বিমানকে কোনো ধরনের পর্যবেক্ষণ দেয়নি। এটা অবশ্যই বড় অর্জন।
‘আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান দ্বারা বিমানের সেফটি অডিট করা হয়। সেদিক থেকে দেশে বিমানই একমাত্র প্রতিষ্ঠান। এসব বিবেচনায় অন্য আর দশটা এমডির চেয়ে বিমানের এমডি অবশ্যই সেরা।’
থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং করার সক্ষমতা বিমানের কতটুকু রয়েছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আগামী দু থেকে তিন মাসেই গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ে লোকবল নিয়োগ ও জনবল বাড়াচ্ছি। তখন বিশ্বমানের সেবা দেওয়ার জন্য আমরাও ফাইট দেব।
আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে যোগ দিতে চাইলে এখানে ক্লিক করার অনুরোধ
বিমানের দুটি এয়ারক্র্যাফট দুর্নীতি নিয়ে দুদকের তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে যাহিদ হোসেন বলেন, দুদক একটা তদন্ত করছে। ফৌজদারি কার্যবিধিতে যেসব তদন্ত চলে সেগুলো নিয়ে কথা বলার আমাদের প্রয়োজন নেই। এ ধরনের তদন্তে আমরা সহযোগিতা করব।
এ ঘটনায় পলাতক ক্যাপ্টেন ইশরাতকে তলব করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কাছে যখন কোনো সংস্থা যে তথ্য চাইবে আমরা সেটাই দেব, সহযোগিতা করব। ইশরাতের নামে কিছু চাওয়া হয়ে থাকলে তথ্য দেওয়া হবে।
পাইলট নিয়োগ নিয়ে নানা দুর্নীতি ও নারী পাইলটদের হয়রানি সম্পর্কে ক্যাপ্টেন সাজিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে যাহিদ হোসেন বলেন, অবশ্যই যেসব অভিযোগ পাওয়া যাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিভিন্ন মেইল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি। কিন্তু এখনো কোন নারী পাইলট বিমানের কাছে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেয়নি। তবে আমরা এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করেছি। ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাংবাদিকদের তথ্য পেতে সহযোগিতা না করায় এভিয়েশন ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের আজকের সংবাদ সম্মেলন বর্জনের বিষয়ে জানতে চাইলে জাহিদ হোসেন বলেন,’তাদের বয়কট করার অধিকার আছে। আমি আশ্বস্ত করছি আগামী তিন মাসে আপনারা অনেক কিছু দেখতে পাবেন। আপনার প্রাপ্য সম্মান দেওয়ার জন্য আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’