লেবাননে ডলার সংকটে চরম দূর্ভোগে প্রবাসী বাংলাদেশিরা

লেবাননে ডলার সংকটে চরম দূর্ভোগে পড়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দাম বেড়ে যাওয়ায় লিরাকে মার্কিন ডলারে রপান্তরিত করতে খরচ পড়ছে বেশি। ফলে দেশে পরিবারের কাছে সময়মত টাকা পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না । আর এমন পরিস্থিতির হয়েছে দেশটিতে অর্থনৈতিক জরুরী অবস্থা বিরাজ করায় ।

মার্কিন ডলারের উপর নির্ভরশীল লেবাননের স্থানীয় মুদ্রা লিরা। দুই দশকেরও বেশি সময়ে সম্প্রতি প্রথমবারের মত মূল্যহ্রাস হয় লিরার। ফলে সংকটে পড়ে দেশটির অর্থনৈতিক খাত । এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে লেবানন সরকার দেশে অর্থনৈতিক জরুরী অবস্থা ঘোষনা করে। দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকারের মতে, দুই বছর আগেই অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হলেও গত একবছরে তা প্রকট আকার ধারণ করে।

সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই মার্কিন ডলারের তীব্র সংকট দেখা দেয়। ১৯৯৭ সাল থেকে ১ হাজার ৫ শো লিরায় পাওয়া যেত ১ মার্কিন ডলার। বিগত কয়েক সপ্তাহে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৫০ লিরায়। আরো বাড়তে পারে বলে আশংকা দেশটির অর্থনীতিবিদদের।

Travelion – Mobile

অর্থনৈতিক গবেষকদের ডঃ মাকরাম রাবাহের মতে, পাশ্ববর্তী দেশ সিরিয়ার বাজারে জ্বালানী নিশ্চিত করতে কিছু ব্যবসায়ী লেবাননের কালো বাজার থেকে ডলার কিনে মজুদ করছে। যার কারণে ডলারের সংকট বেড়ে যায়। ব্যাংকসহ এটিএম বুথগুলো থেকেও গ্রাহককে ডলার দেওয়া হচ্ছে না।

এদিকে ডলার সংকটে জ্বালানীসহ বিভিন্ন পণ্যের মূল্যে বেড়েই চলছে। আর ডলার সংকটে সবচেয়ে বড় সমস্যায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা। কারণ লেবানীজ মালিকরা সবসময় ডলারেই কর্মিদের মাসিক বেতন পরিশোধ করে থাকে। এখন কেউই ডলারে বেতন দিচ্ছে না। এখন পরিশোধ করছে লিরায়।

দেশে টাকা পাঠাতে মানি ট্রান্সফার কোম্পানীগুলোকে ডলারের বিপরীতে কয়েকগুন বেশি ফি দিতে হচ্ছে। আগে যেখানে লিরাকে ডলারে রুপান্তরিত করতে প্রতি এক শো ডলারে এক ডলার দিতে হত , এখন সেখানে ৬/৭ ডলার দিতে হচ্ছে। অনেকে আবার বেশী দিয়েও ডলার পাচ্ছে না। ফলে দেশে পরিবারের কাছে সময়মত টাকা পাঠাতে না পেরে অস্থিরতায় দিন কাটাচ্ছে দেশটিতে বসবাসরত প্রায় সোয়া লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি ।

YouTube video

বেশি বিপাকে পড়েছে সীমিত বেতনের প্রবাসীরা। তারা জানায়, লেবাননে দীর্ঘদিনের প্রবাস জীবনে এই প্রথম ডলার সংকটে পড়ে তারা খুবই উদ্বিগ্ন। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে প্রবাসীরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করছে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে অবহিত করা হবে। প্রয়োজনে শ্রম মন্ত্রণালয়সহ লেবানন সরকারের সাথেও আলোচনা করা হবে বলে জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার ।

প্রবাসীরাই শুধুই নয় অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে দেশটির সাধারন জনগন এবং ব্যবসায়ীরাদেরো দূর্ভোগে পড়তে হয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!