লেবাননের নতুন সরকারকে প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ
লেবাননের নতুন সরকার সরাসরি তার প্রথম প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়, মঙ্গলবার যখন দেশজুড়ে প্রতিবাদকারীরা প্রধানমন্ত্রী হাসান ডিয়াবের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের মন্ত্রীসভা প্রত্যাখ্যান করে রাস্তায় নামে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি প্রাসাদে সরকার গঠনের জন্য হাসান ডিয়াবের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী বৈরুতের নিজমেহ স্কয়ার এবং ত্রিপোলির আল-নুর স্কয়ারসহ তিন মাস আগে যে গণঅভ্যুত্থানের উত্থান স্থানগুলোতে প্রতিবাদকারীরা জড়ো হতে শুরু করে। তারা বলল, “ইয়াল্লা, হাসানকে বের করে দাও”।
বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে বৈরুত, ত্রিপোলি, সিডন এবং বেকা উপত্যকার প্রধান মহাসড়কসহ সারাদেশে সড়ক অবরোধ করেছিল।
বৈরুতের পার্লামেন্টের বাইরে স্থানী সাংবাদিকদের ৪৩ বছর বয়সী নওহাদ সালোম বলেন, জনগণ স্বাধীন সরকারের দাবিতে ৯৭ দিন ধরে আত্মত্যাগ করছে, তবে [রাজনীতিবিদরা] তাদেরই উপযুক্তটা বেছে নিয়েছে ।”
দিয়াব জনগণের অনুমোদন পেতে ব্যর্থ হয়েছে, যা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে বিদ্যমান রাজনৈতিক শ্রেণীর অংশ হিসাবে বিবেচনা করে যারা কয়েক দশক ধরে দেশ পরিচালনা করে আসছে।
তিনি ১৯ ডিসেম্বর হিজবুল্লাহ, ফ্রি পেট্রয়িক মুভমেন্ট, আমল মুভমেন্ট এবং তাদের মিত্রদের দ্বারা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মনোনীত হয়েছিলেন, যারা প্রত্যেকে দিয়াবের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীর নাম দিয়েছিলেন।
মনোনয়নের পর থেকে ডিয়াবের বৈরুতের বাসভবনের বাইরে অসংখ্য বিক্ষোভ ও মিছিল হয়েছে, যা লেবাননেন ৯৮ দিনের জনবিক্ষোভের দুই মাসের মাথায় হয়েছিল।
৩৫ বছর বয়সী রামি বলেছেন, “আমাদের নতুন সরকারকে নামিয়ে আনা দরকার, এটি কেবল আগের সরকারের প্রতিচ্ছবি।”
লেবাননের সাম্প্রদায়িক ব্যবস্থা এবং প্রতিনিধিত্বের জন্য বিভিন্ন দলের দাবি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার সমঝোতা করতে ডিয়াব এক মাসের বেশি সময় ব্যয় করেছেন ।
আইনজীবী নাথালি বলেন, “আমরা এই সপ্তাহে সত্যিই দু:খজনক কিছু দেখেছি। লেবাননের জনগণ রাস্তায় ছিল একটি স্বতন্ত্র সরকারের দাবিতে এবং তাদের অধিকারের দাবিতে, তবে [রাজনীতিবিদরা] কোটা নিয়ে, তাদের দাবি নিয়েই আলোচনা ব্যস্ত ছিলেন যা আমরা দেখতে চাইনি। ’
ফ্রি মুভমেন্ট, লেবানিজ ফোর্সেস, প্রগ্রেসিভ সোশালিস্ট পার্টি এবং কাটায়েব পার্টি অংশ নেবে না বলে ঘোষণারআসার পরে ডিয়াবের সরকারকে “একতরফা” মন্ত্রিসভা হিসাবে ব্যাপক সমালোচনায় পড়তে হয়েছে।
পশ্চিমা এবং সৌদি আরব দ্বারা সমর্থিত এই দলগুলি ছাড়া ডিয়াবের সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং ২০১৮ সালে সিডিআরই সম্মেলনে লেবাননের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রায় ১১বিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তায় পেতে সংগ্রামে নামতে হবে।
“এই দেশে আপনার দুটি জিনিস দরকার: জনগণের অনুমোদন এবং দাতাদের অনুমোদন। আপনারা কি ভাবেন যে এই সরকার দাতাদের অনুমোদন পাবে?” প্রশ্ন ৫৫ বছর বয়সী ফাওয়াজের।
মঙ্গলবারের শীতল পরিস্থিতিতে কয়েকশো পুরুষ, মহিলা এবং শিশু নিজমেহ স্কয়ারের বাইরে জড়ো হয়েছিল, তবে অনেকেই নতুন সরকার গঠনে আগ্রহী ছিল না। ১৮ বছর বয়সী কারিন বলেছিলেন, “আমি জনগণ এবং বিপ্লবের সাথে আছি, আমি কারও বিপক্ষে নই। আমি কেবল চাই যে কেউ আমাদের কথা শুনুক; এটাই আমরা চাই।”
সূত্র : ডেইলি স্টার