রোববার শুরু হচ্ছে বিশ্বসেরা ‘দুবাই এয়ার শো’
যোগ দিচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী
রবিবার ((১৭ নভেম্বর) সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ও সফল এয়ার শো এবং মধ্যপ্রাচ্য এশিয়া ও আফ্রিকার বৃহত্তম এয়ারোস্পেস ইভেন্ট ‘দুবাই এয়ার শো -২০১৯ ’ শুরু হচ্ছে। রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫ দিন দুবাইয়ের আল মাকতুম বিমানবন্দরের নিকটস্থ নির্ধারিত ভেন্যুতে চলবে এ প্রদর্শনী দ্বিবার্ষিক।
বিশ্বের বৃহত্তম বিমান সংস্থাগুলি তাদের সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার ও যাত্রীবাহী বিমান প্রদর্শন করবে, নতুন প্রযুক্তি উন্মোচন করবে এবং নতুন চুক্তি ঘোষণা করবে। দুবাইয়ের আকাশে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল ফুরসান এবং প্যাট্রোইল ডি ফ্রান্সর – সাহসী বিমান উড্ডয়ন প্রদর্শনী দর্শনার্থীদের বিমোহিত করবে।
দুবাইয়ের শাসক মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুমের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘দুবাই এয়ার শো -২০১৯ ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। এই বর্ণাঢ্য প্রদর্শনী ও আরো কিছু অনুষ্ঠানে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শনিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চারদিনের সরকারি সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাত রওনা হয়েছেন।
সারা বিশ্বের ৮৭ হাজার অংশগ্রহণকারী ও ১ হাজার ৩শ’ এক্সিবিটর দুবাইয়ের ভবিষ্যৎ বিমানবন্দর দুবাই ওয়ার্ল্ড সেন্টারে এ উপলক্ষে সমবেত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আশা করা হচ্ছে এটি ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত এয়ার শো সাফল্যকে ছাড়িয়ে যাবে। ২০১৭ সালের ১১৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যে অর্ডার পাওয়া গিয়েছিল। এতে ৬৩টি দেশের ৭৯ হাজার ৩৮০ জন যোগদানকারী ও ১২শ’ এক্সিবিটরকে স্বাগত জানানো হয়েছিল।
দুবাই এয়ার শোতে এয়ারবাস ও বোয়িংয়ের মতো বড় সংস্থাগুলির পাশাপাশি ছোট ছোট সংস্থা, বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী সংস্থা তাদের সামরিক ও বেসামরিক পণ্য প্রদর্শন করতে জড়ো হবে। এতে মোট ১৬৫ টি উড়োজাহাজ প্রদর্শিত হবে। শোটিতে পাঁচ দিনে প্রায় ৯০ হাজার দর্শনার্থী অংশগ্রহন করবে বলে আশা করছে আয়োজকরা।
বছরের পর বছর ধরে এই প্রদর্শনীতে বড়-বড় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং বিশ্বের বড় দু্ই প্রতিদ্বন্দ্বী বিমান প্রস্তুতকারক এয়ারবাস এবং বোয়িংয়ের মধ্যে প্রতিযোগিতা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
২০১৭ সালের শোতে, এয়ারবস একটি বিস্ময়কর ৫২ বিলিয়ন ডলারের বিমান বিক্রি করেছিল যেখানে বোয়িংও প্রায় ৪৭ বিলিয়ন ডলারের বিমান বিক্রি করে খুব বেশি পিছিয়ে ছিল না। ২০১৩ সালে সবাইকে অবাক করে বোয়িং ৯৫ বিলিয়ন ডলারের বিমান বিক্রি করেছিল। এই বছর তেমন কোন চুক্তি হবে কিনা তা পরিষ্কার নয়।
স্ট্যাটিক ডিসপ্লেতে বিশ্বের বিখ্যাত এবং নতুন কিছু উড়োজাহাজ প্রদর্শিত হবে শো’টিতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার স্টিলথ এফ ২২ রেপ্টর এবং এফ ৩৫ লাইটনিং জেটগুলি প্রদর্শন করবে। বিশ্বের অন্যতম উন্নত বিমান এফ ৩৫ মধ্যপ্রাচ্যের কোন এয়ার শোতে প্রথম বারের মত প্রদর্শিত হবে। প্রদর্শনীতে থাকা অন্যান্য ক্লাসিক সামরিক উড়োজাহাজের মধ্যে রয়েছে এ ১০ থান্ডারবোল্ট, অ্যাপাচি এবং এমভি- ২২ বি (MV-22 B) অস্প্রে হেলিকপ্টার ।
প্রতিদিন সকাল ১০:০০ থেকে বিকেল ৫:৩০ প্রদর্শনী চলবে। দুপুর ২ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত দুবাইয়ের আকাশে চলবে উড়োজাহাজের উড়ান প্রদর্শনী।
শোতে সব প্লেন উড়বে না তবে এখনও নিশ্চিত হওয়া ডিসপ্লেগুলিতে একটি এয়ারবাস এ ৩৩০ নিও, একটি বোয়িং৭৪৭ ড্রিমলাইনার, ফরাসি রাফালে যুদ্ধবিমান এবং আরএএফ ইউরোফাইটার টাইফুন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
দুবাই এয়ারশো একটি বাণিজ্যিক ইভেন্ট এবং সাধারণ মানুষের জন্য তা উন্মুক্ত নয়। তবে আল মাকতুম বিমানবন্দরের আশেপাশের অধিবাসীরা কিছু উড়োজাহাজের উড়ান প্রদর্শনী উপভোগ করতে পারেন।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এবারের প্রদর্শনীতে বড় হয়ে দেখা দিবে বোয়িংয়ের ৭৩৭ ম্যাক্সের ঝামেলা? সেটা মিটবে কিনা সেই প্রশ্ন সবার। ২০১৩ সালে বোয়িংয়ের বিশাল চুক্তির একটি বড় অংশ ছিল ফ্লাই দুবাইয়ের ২২৫টি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজের অর্ডার।
মডেলটির সাথে জড়িত দুটি মারাত্মক দুর্ঘটনার পরে মার্চ থেকে উড়ো জাহাজগুলির উড়ান বিশ্বজুড়ে স্থগিত রয়েছে। বোয়িং আত্মবিশ্বাসী যে খুব শীঘ্রই ম্যাক্স বিমানগুলি পুনরায় উড়ার অনুমতি পাবে। শো চলাকালীন বিমানটি সম্পর্কে একটি আশার বাণী শোনার অপেক্ষায় রয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা।