যুক্তরাষ্ট্রে বাবা-মায়ের অপেক্ষায় ১৩০০ আফগান শিশু

রয়টার্স প্রতিবেদন

গত আগস্টে তালেবানরা আফগানিস্তান দখল করার পর ৭০ হাজারেরও বেশি আফগান নাগরিক দেশটি ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ১৩০০ শিশু রয়েছে, যারা বাবা-মা বা অভিভাবক ছাড়াই মার্কিন মুলুকে গিয়েছে। এদেরই একজন ১০ বছর বয়সী মনসুর। বাবা-মার সঙ্গে আর কবে তাদের দেখা হবে কিংবা আদৌ দেখা হবে হবে কি না, জানে না এই শিশুরা।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে এক আত্মীয়ের সঙ্গে বসবাস করছে মনসুর। সে প্রায় প্রতিদিনই জিজ্ঞেস করে, কবে আফগানিস্তানে ফিরে যেতে পারবে?

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আফগানিস্তান ছেড়ে আসার সময় বাবা-মা ও সহোদরদের থেকে আলাদা হয়ে যায় মনসুর। কাবুল থেকে তাকে ওয়াশিংটনে নিয়ে এসেছে আত্মীয় শোগোফা। তারা যখন কাবুল বিমানবন্দরে প্রবেশ করে, ঠিক ওই মুহূর্তে বাইরে গোলাগুলি শুরু হয় এবং সেনারা গেইট বন্ধ করে দেয়। এ কারণে আর বিমানবন্দরে ঢুকতে পারেনি মনসুরের পরিবার।

বাবা-মাকে ছাড়াই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  দিন কাটছে আফগান শিশুরা। ছবি: রয়টার্স
বাবা-মাকে ছাড়াই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দিন কাটছে আফগান শিশুরা। ছবি: রয়টার্স

সাদাম আজিজ (নামাজরত), ১৫ বছর বয়সী এই বালকও মনসুরের মতোই বাবা-মা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। তার বাবা-মা তালেবানের ভয়ে আফগানিস্তানে পালিয়ে আছে।
তিন দিন কাবুল বিমানবন্দরে কাটানোর পর একটি মার্কিন সামরিক বিমানে করে শোগোফার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসে মনসুর। তখন আশা ছিল, হয়তো পরের ফ্লাইটে মা-বাবাও চলে আসবে। কিন্তু তারা আর যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারেনি।

Travelion – Mobile

নিজের দুই সন্তান, মনসুর এবং অন্য আত্মীয়দের সঙ্গে প্রথমে নিউজার্সির মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে পৌঁছান শোগোফা। এর কয়েক সপ্তাহ পর সেখান থেকে বোন নিলুফারের সঙ্গে সিয়াটলে চলে যান তিনি। অন্যদিকে, মনসুরের বাবা-মা তালেবানের ভয়ে বর্তমানে আফগানিস্তানে পালিয়ে আছেন। কারণ, তারা পূর্বে নির্বাচিত আফগান সরকারের সঙ্গে কাজ করতো।

পুরো নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিলুফার জানান, মনসুর এখন দিনের অধিকাংশ সময় একা একা বসে থাকেন এবং খুব কমই অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করে থাকে। মূলত পুরো নাম প্রকাশ করতে নিষেধ করার কারণ, আফগানিস্তানে পালিয়ে থাকা আত্মীয়দের তালেবানরা খুঁজে বের করে ফেলতে পারে। এই শঙ্কায় কেবল মূল নাম ব্যবহার করতে অনুরোধ করেছেন নিলুফার।

তিনি আরও জানান, যদি তালেবানরা শনাক্ত করে ফেলে, সেই ভয়ে মনসুরের বাবা-মা মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না। গত আগষ্টের পর সর্বশেষ ১ নভেম্বর বাবা-মার সঙ্গে কথা বলতে পেরেছে মনসুর।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!