মালিতে দুই হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ, ১৩ ফরাসি সেনা নিহত

সোমবারের (২৫ নভেম্বর) আফ্রিকার দেশ মালিতে জিহাদিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলাকালে দুটি ফরাসি হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১৩ সেনার প্রাণহানি ঘটে। নিহতদের মধ্যে ছয় জন কর্মকর্তা, একজন মাস্টার কর্পোরাল এবং বাকিরা সৈনিক।

ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণারয় আন্তজার্তিক বার্তা সংস্থোগুলোকে জানিয়েছে, একটি টাইগার এ্যাটাক হেলিকপ্টার এবং একটি বড় সামরিক পরিবহন হেলিকপ্টারটির সাথে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘট । কি কারণে এমনটি ঘটল, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে বুর্কিনা ফাসো এবং নাইজারের সীমানার কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে, যখন হেলিকপ্টারগুলি লিপ্তাকো অঞ্চলে বিদ্রোহীদের ঘাঁটিতে অভিযান জোরদার করেছিল।

Travelion – Mobile

অভিযানে একটি মোটরবাইক এবং একটি পিক-আপে করে পালাতে থাকা বিদ্রোহীদের পিছু নিয়েছিল টাইগার এ্যাটাক হেলিকপ্টারটি, এ সময় কুজার সামরিক পরিবহন হেলিকপ্টারটির সাথে সংঘর্ষ ঘটে। দুটি হেলিকপ্টারই একে অপরের খুব কাছাকাছি বিধ্বস্ত হয় এবং সকল আরোহী নিহত হয়।

দেশটি ছাপিয়ে যাওয়া সশস্ত্র দলগুলিকে ফিরিয়ে আনতে ছয় বছর আগে ফ্রান্সের হস্তক্ষেপের পর এই দুঘর্টনাসহ এ পর্যন্ত মালিতে ৩৮ জন ফরাসি সেনা সদস্য নিহত হল।

এ ঘটনা গত কয়েক দশকের মধ্যে ফরাসি সেনাবাহিনীর জন্য সবচেয়ে বেশি মর্মান্তিক। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁখো হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় গভীর দুঃখপ্রকাশ করেছেন।


মঙ্গলবার রাজধানী বামকো থেকে টেলিফোনে মালির সরকারী মুখপাত্র ইয়া সাঙ্গারে বলেন, “আমরা ১৩ ফরাসী সেনার পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।”
“মালিতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং মালির ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য বরখানে ফ্রান্স এবং তার সামরিক অভিযান গুরুত্বপূর্ণ ছিল”, তিনি যোগ করেন।

তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি ট্র্যাক করতে ও টার্গেট করার উদ্দেশ্যে ফরাসী ও মালিয়ান সেনারা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মেনাকা অঞ্চলে তাদের অভিযান জোরদার করে। এই বিশেষ অঞ্চলে মালিয়ান সেনাবাহিনীর গ্যারিসনদের বিরুদ্ধে দুটি বড় আকারের হামলার পরে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল বলে সাঙ্গরে জানিয়েছেন।

মালিতে ইসলামি জঙ্গিদের নির্মূল করতে ২০১৩ সালে হাজার হাজার সেনা পাঠায় ফ্রান্স। মালির সেনাবাহিনী ফ্রান্সের সহায়তায় অনেক এলাকা জঙ্গিমুক্ত করলেও সেখানে এখনো জঙ্গিদের তৎপরতা ও সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে।

মালি, মৌরতানিয়া, নাইজার বুরকিনা ফাসো ও চাদে জঙ্গিদের মোকাবিলায় প্রায় ৪ হাজার ৫০০ ফরাসি সেনা কাজ করছে।

ফরাসী তত্ত্বাবধায়ক বাহিনীর সামরিক অভিযানে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছিল ১৯৮৩ সালে লেবাননের সেনা স্টেশনগুলির বিরুদ্ধে আক্রমণে, যখন ড্রাকর নামক ভবনে বোমা হামলায় ৫৮ জন ফরাসি সেনা নিহত হয়েছিল।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!