বিশ্ব এভিয়েশনে করোনা-ধ্বস, স্লট বিধি স্থগিতের আহবান আয়াটার
আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের নেতৃত্ব দেয়া সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ)- আয়াটা সাময়িকভাবে বিমানবন্দরের স্লট বিধিমালা স্থগিতের আহবান জানিয়েছে।
করোনা ভাইরাসের প্রভাবে এভিয়েশন খাতের ধ্বস নামায় বিশ্বের নানা দেশের এভিয়েশন নিয়ন্ত্রণকদের কাছে এ আহবান জানায় তারা।
জরুরী অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে চলতি ২০২০ সালে স্লট নীতিমালা শিগগিরি বন্ধে তাদের কাছে জোরালো দাবী জানায় আয়াটা।
আয়াটা-র মহাপরিচালক ও সিইও অ্যালেক্সাদার ডি জুনায়ক জানিয়েছেন, “আয়াটা-র গবেষণায় দেখা গেছে, এশীয় রুটগুলোতে উড়োজাহাজ চলাচল মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে যেটি বিশ্বব্যাপী বিমান পরিবহণ নেটওয়ার্কে প্রভাব ফেলেছে। এমনকি কোভিড-১৯ এর প্রকোপ দেখা যায়নি এমন দেশেও বিঘ্নিত হচ্ছে উড়োজাহাজ চলাচল।”
তিনি আরও বলেন, “স্লট ব্যবহার বিধিমালা বন্ধে আগে থেকেই কথা ওঠেছিল, যদিও আমরা বিশ্বাস করি এখন সেই পরিস্থিতি পুরোপুরি এসে গেছে। তাই আমরা বিশ্বব্যাপী এভিয়েশন খাতের নিয়ন্ত্রণকারীদের আহ্বান জানাচ্ছি, আজকের জরুরী অবস্থা বিবেচনায় এই শিল্পকে বাঁচাতে এবং ভবিষ্যতে এই খাতরে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ তৈরিতে অস্থায়ী ভিত্তিতে স্লট ব্যবহার বিধিমালা স্থগিত করার। ”
আয়াটা-র তথ্যমতে, সাধারণত বিশ্বের মোট যাত্রীর প্রায় ৪৩ শতাংশ ২০০ এরও বেশি বিমানবন্দরের সমন্বিত স্লট ব্যবস্থাপনায় উড্ডয়ন করে থাকে। বর্তমান নিয়ম হল, বিমানসংস্থাগুলোকে তাদের বরাদ্দকৃত স্লটের কমপক্ষে ৮০ শতাংশ ব্যবহার করতে হবে। সেটি যদি তারা করতে ব্যর্থ হয় তাহলে প্রতিষ্ঠানটি পরবর্তী ভ্রমণ মৌসুমে তাদের স্লট হারায়। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণকারীরা স্লটের নিয়ন্ত্রণে কিছুটা শিথিলতা দেখায়।
Taiwan's #TPE airport is dead, like, dead. Saw zero passenger besides me through T1 check-in, security, customs, CX lounge. #nCoV2019 pic.twitter.com/toPT6haiPw
— Paul Huang (@PaulHuangReport) March 4, 2020
কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রকোপে ইতিমধ্যেই এভিয়েশন শিল্প ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিঘ্ন ঘটেছে এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার এভিয়েশনশিল্প। এরমধ্যে কয়েক হাজার ফ্লাইট বাতিল ও স্থগিত হয়েছে, ফাঁকা হয়েছে বিমানবন্দর। অনেক এয়ারলাইন্স তাদের কর্মীদের অবৈতনিক ছুটিতে পাঠিয়েছে। অনেক বিমান সংস্থার পাইলট এবং কর্মীরা ভাইরাসে আক্রান্তের ভয়ে কাজে যোগ দিতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
ডি জুনায়ক বলেন, “বিশ্ব অর্থনীতি যে ক্ষতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তার মধ্যে এভিয়েশন শিল্প প্রথম সারিতে আছে। তাই এখন আমাদের জন্য অপরিহার্য হল এভিয়েশনের অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত পরিস্থিত বিবেচনা করে যৌক্তিকভাবে বিমান পরিচালনার পদ্ধতি বের করা। যাতে আমরা সবচেয়ে বাজে অবস্থার সম্মুখীন না হই। ”
Yesterday, we flew out of one of the busiest airports in the world. Basically empty. Our flight was delayed two hours because they needed to disinfect it before we could board. In Seattle, we went through temp checks, paperwork for the CDC, questions, and given packets to read pic.twitter.com/O0ez8tQTwh
— Matthew Tyler (@MatthewTyler674) March 4, 2020
বরাদ্দ করা স্লটের কমপক্ষে ৮০ শতাংশ ব্যবহারের নিয়মকে বর্তমান পরিস্থিতর জন্য সম্পূর্ণ অযৌক্তিক দাবী করে জুনায়ক আরো বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় চীন এবং হংকং এই স্লট নীতিমালা থেকে দূরে সরে এসেছে। তাই সামনে আমাদের সবাইকে এই নিয়ম মেনে চলার থেকে সাময়িক বিরতি নিতে হবে।
দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকালীন মৌসুম বা শীতকালীন ভ্রমণ মৌসুমে বিমান চলবে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া নিয়ে যেহেতু সংশয় আছে সেহেতু বিমানসংস্থাগুলোর ক্রু বা ফ্লাইট শিডিউল করাটা এখন অসম্ভব।
তাই পরিস্থিতি মাথায় নিয়ে আমাদের ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত স্লট নীতিমালা থেকে সরে আসতে হবে। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের বাজার যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা সাড়া দিতে পারব, যাত্রীবিহীন ফ্লাইটের ধাক্কা সামলে উঠতে পারব এবং ফ্লাইটগুলোকে তাদের প্রয়োজন অনুসারে রুট পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিতে পারব।