বহুভাষিকতাকে এগিয়ে নিতে সব প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ : রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে যথাযােগ্য মর্যাদায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। কোভিড -১৯ জনিত স্থানীয় বিধিনিষেধ অনুযায়ী সামাজিক দুরত্ব মেনে সীমিত পরিসরে আয়োজন করা হয় দিবসের কর্মসূচি।

মিশনস্থ বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে আয়ােজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান একুশের ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরআগে প্রভাত ফেরীর মাধ্যমে অডিটোরিয়ামটিতে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন মিশনের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং মহান একুশের ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে একটি প্রামাণ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শণ করা হয় ।

Travelion – Mobile

আলােচনা পর্বে স্বাগত বক্তব্যে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য “শিক্ষায় এবং সমাজে বহুভাষার অন্তভূক্তি সযত্নে লালন করি” উল্লেখ করেবলেন,“বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক ফেরামে বহুভাষিকতাকে এগিয়ে নিতে সর্বাত্তক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে”।

বাহান্নের ভাষাশহীদ এবং ভাষা আন্দোলনের পথিকৃৎ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, “১৯৪৮ সালে বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবে ছাত্রলীগ, তমদুন মজলিশ ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। এই পরিষদই ভাষা আন্দোলনকে বেগবান করে । জাতির পিতা ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে বার বার গ্রেফতার হয়েছেন । জেলে থেকে ভাষা আন্দোলনের দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন । সেই দুর্বার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি শাসকগােষ্ঠীর জারি করা ১৪৪ ধারা ভাঙতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন ভাষা শহীদগণ”।

ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই কীভাবে জাতির পিতার নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে সে প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা । তিনি প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ভাষা উজ্জীবিত রাখতে পরিবার এবং কমিউনিটিতে বাংলার শুদ্ধ চর্চা অব্যাহত রাখতে প্রবাসী বাঙালিদের প্রতি আহ্বান জানান ।

বাংলাদেশের জন্য কোভিড -১৯ এর টিকা সংগ্রহের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন এবং চলমান টিকা প্রদান কর্মসূচিতে সরকার যে সফলতা দেখিয়েছে তা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে মর্মে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, “বিশ্বের ২৫ কোটি মানুষের ভাষা বাংলাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে যে প্রস্তাবনা রেখেছেন তা বাস্তবায়নে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে”।

প্রসঙ্গতঃ সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ভার্চুয়ালি জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, জাতিসংঘ সদরদপ্তর ও ইউনেস্কো এবং জাতিসংঘে নিযুক্ত ব্রাজিল, কানাডা, মিশর, জর্ডান, লিথুনিয়া এবং নিউজল্যান্ড মিশনের যৌথ উদ্যোগে পালিত হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের জাতিসংঘ ভিত্তিক উদযাপন । স্থানীয় সময় দুপুর ১২ টা থেকে ১.৩০ মিনিট পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান জাতিসংঘ ওয়েভ টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!