ফ্লাইট থেকে মুসলিম যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ায় মার্কিন বিমানসংস্থার জরিমানা

কোনো নিয়মনীতি ভঙ্গ না করা সত্ত্বেও উড়োজাহাজ থেকে তিন মুসলিম যাত্রীকে নামিয়ে দেওয়ায় (অফলোড) ডেলটা এয়ারলাইনসকে ৫০ হাজার ডলার জরিমানা করেছে মার্কিন পরিবহন বিভাগ। আলাদা দুটি ঘটনায় ওই মুসলিম যাত্রীদের সঙ্গে ‘বৈষম্যমূলক আচরণ’ করার দায়ে এই জরিমানা করা হয়েছে।

জরিমানার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মার্কিন পরিবহন বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যাত্রীদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করায় ও বৈষম্যবিরোধী আইন লঙ্ঘন করায় ডেলটা এয়ারলাইনসকে জরিমানা করা হয়েছে।

সাধারণত ডেল্টা হিসাবে পরিচিত ডেল্টা এয়ারলাইন্স ইনক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান বিমানসংস্থা এবং যাত্রী বহন, উড়াল দূরত্ব,বহর আর রাজস্ব আয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানসংস্থা।

Travelion – Mobile

ডেল্টার সদর দফতর জর্জিয়ার আটলান্টায়। সহযোগী সংস্থা এবং আঞ্চলিক সংযোগ সংস্থাগুলির সাথে প্রতিদিন নয়টি হাব থেকে ৫,৪০০ টিরও বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমানসংস্থাটি । ৯০৭ টি উড়োজাহাজের বিশাল বহর নিয়ে ছয়টি মহাদেশের ৫২ টি দেশের ৩২৫ টি গন্তব্য চলাচল করে ডেল্টা।

২০১৬ সালের ২৬ জুলাই প্যারিসের শার্ল দ্য গল বিমানবন্দরে ডেলটা এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ২২৯ থেকে এক মুসলিম দম্পতিকে নেমে যেতে বলা হয়। ওই উড়োজাহাজেরই আরেক যাত্রী ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টের কাছে অভিযোগ জানিয়ে বলেছিলেন, ওই মুসলিম দম্পতির আচরণ নাকি তাঁকে ‘অস্বস্তিকর পরিবেশে’ ফেলছিল। ওই মুসলিম দম্পতির নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তাঁদের ‘মিস্টার এক্স’ ও ‘মিসেস এক্স’ নামে সম্বোধন করা হয়েছে।

ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টের কাছ থেকে জানার পর ওই ফ্লাইটের পাইলট এয়ারলাইনসের নিরাপত্তা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা পাইলটকে জানান, মিস্টার এবং মিসেস এক্স দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁদের নামে অতীতে কোনো অভিযোগও নেই।

কিন্তু নিরাপত্তা বিভাগের কাছ থেকে নিশ্চিত হওয়ার পরেও পাইলট তাঁদের উড়োজাহাজে রাখতে আপত্তি জানান। মার্কিন যোগাযোগ বিভাগ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ওই দম্পতি মুসলিম না হয়ে অন্য কোনো ধর্মের হলে তাঁদের সঙ্গে এমন বৈষম্যমূলক আচরণ করা হতো না।

একই ধরনের অপর ঘটনাটি ঘটেছে ওই বছরেরই ৩১ জুলাই। আমস্টারডাম থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা দেওয়া ফ্লাইট ৪৯-এর এক মুসলিম যাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান কয়েকজন যাত্রী। কিন্তু উড়োজাহাজের ফার্স্ট অফিসার ওই মুসলিম যাত্রীর আচরণে অস্বাভাবিক কিছু দেখেননি। এয়ারলাইনসের নিরাপত্তা বিভাগও তাঁর বিরুদ্ধে নেতিবাচক কোনো তথ্য দেয়নি।

পাইলট উড্ডয়নের জন্য প্রস্তুতও হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ওই যাত্রীকে উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় এবং তাঁর আসন তল্লাশি করা হয়। এ বিষয়ে মার্কিন পরিবহন বিভাগ বলেছে, ওই পাইলট ডেলটা এয়ারলাইনসের নীতিমালা ভঙ্গ করেছেন এবং যাত্রীর সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন।

ডেলটা এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ অবশ্য কোনো ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণের কথা অস্বীকার করেছে। তবে তারা স্বীকার করেছে, দুটো ঘটনাই আরও ভালোভাবে সামাল দেওয়া যেত।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!