ছায়াহীন হল তিন প্রবাসী পরিবার

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত

ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার কামাল উদ্দিনের ছেলে শাকিল মিয়া, টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতির আউলাতৈল গ্রামের ফোরকান আলীর ছেলে আল-আমিন এবং নরসিংদী জেলার মনোহরদীর উত্তর কাচিকাটা গ্রামের কামাল মিয়ার ছেলে কাওছার মিয়া।

সৌদি আরবের জেদ্দাপ্রবাসী এই তিন রেমিট্যান্সযোদ্ধা ছিলেন তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, সম্বল।

একটি দুঘর্টনা সারা জীবনের কান্না। তেমন একটি দুঘর্টনায় এই তিন প্রবাসী পরিবারের একমাত্র সম্বলই ছিনিয়ে নিয়ে যায়নি চুরমার করে দিয়েছে সকল স্বপ্ন, ছায়াহীন হল পরিবার।

Travelion – Mobile

সৌদি আরবের জেদ্দায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় অকালে না ফেরার দেশে চলে গেছেন এই তিন প্রবাসী বাংলাদেশি। গত বুধবার জেদ্দার হাইয়াল সামির এলাকায় তাদের বহনকারী গাড়িটিকে অপর একটি বড় লরী ধাক্কা দিলে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান গাড়িতে থাকা শাকিল মিয়া, আল-আমিন এবং কাওছার মিয়া- তিন রেমিট্যান্সযোদ্ধা।

নিহত তিনজনই সৌদি ইয়ামামা কোম্পানিতে পরিছন্নতা কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মঙ্গলবার রাত একটার সময় তারা কাজে গিয়ে বুধবার দুপুর বারোটার সময় কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার মুহূর্তে এই দুর্ঘটনা পড়ে।

সৌদি রেড ক্রিসেন্ট, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সিভিল ডিফেন্সের জরুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে তাদের মরদেহ জেদ্দা বাদশাহ আব্দুল আজিজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।

নিহতদের শাকিল মিয়া দেশে ছুটি কাটিয়ে কিছু দিন আগে সৌদি আরবে ফিরে আসেন। তিনি পরিবারের বড় ছেলে এবং একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার ছোট এক ভাই ও এক বোন আছে।

নিহত কাওছার ছিলেন পিতৃহীন এবং বিধবা মায়ের একমাত্র সন্তান। গত তিন বছর পূর্বে তার বাবাও সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিল। কাওছার ছিল পরিবারের একমাত্র সম্বল। এখন তার বিধবা মাকে দেখাশোনা করার আর কেউ রইলো না।

নিহত আল আমিনও ছিলেন তার পরিবারের বড় ছেলে এবং একমাত্র সম্বল। স্ত্রী বিলকিস বেগমের সঙ্গে পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবনে তাদের কোন সন্তান নেই।

প্রিয়জনকে হারিয়ে তিন পরিবারেরই চলছে এখন শোকের মাতম। শেষবারের মতো তাদের দেখতে চায় পরিবার। মরদেহ যেন দ্রুত দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে সেজন্য সরকার ও বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা ।

জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের কাউন্সেলর আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে যতদ্রুত সম্ভব নিহতদের মরদেহ দেশে পাঠানো হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!