কুয়েতে বাংলাদেশি এমপির সহযোগীদের নাম প্রকাশের দাবি

মানবপাচার ও অর্থপাচারের অপরাধে আটক বাংলাদেশি সাংসদ কাজী শহীদুল ইসলাম পাপুলর অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত কুয়েতি সহযােগীদের নাম প্রকাশের দাবি ওঠেছে। আর এই দাবি তুলেছেন দেশটির প্রভাবশালী সংসদ সদস্য ড. আবদুল করিম আল-কান্দারি।

শনিবার (১৩ জুন) নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তিনি বলেন,“মানব পাচার ও অর্থপাচারের অপরাধে জড়িত বাংলাদেশি সাংসদের নাম ঠিক যেমন ঘোষণা করা হয়েছে তেমনি যারা কুয়েতে তাঁর সাথে জড়িত তাদের নামও সরকারী কর্মকর্তাদের কাছ থেকে প্রকাশিত হওয়া উচিত। কারণ এটি দুর্নীতির অপরাধ সম্পর্কিত জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।”

বাংলাদেশি সাংসদ কাজী পাপুলের অপকর্ম কুয়েতে মানবপাচারের সবচেয়ে বড় ঘটনা হিসেবেই ধরা হচ্ছে। এমনটি ইংগিত পাওয়া যায় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায়।

Travelion – Mobile

শনিবার টুইট বার্তায় উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনাস আল-সালেহ বলেছেন, “বিগত সপ্তাহগুলিতে নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যদের অভিনন্দন দেওয়ার মতো দুর্দান্ত একটা কাজ হয়েছে। তারা একজন এশিয়ান প্রবাসীর দ্বারা মানবপাচার এবং ভিসা বাণিজ্যের বৃহত্তম মামলার সফল অভিযান সম্পন্ন করেছেন। সংস্থাগুলির সহযোগিতায় কর্মকর্তাদের একটি নেটওয়ার্ক দ্বারা পরিচালিত তদন্তে সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের অস্তিত্ব প্রকাশ পাওয়া যায়।”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভাগগুলো এখন মানবপাচার এবং ভিসা বাণিজ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, তদন্তে যার নাম ওঠে আসে তিনি সরকারি কর্মকর্তা বা বিশিষ্ট ব্যক্তি যাই হোন না কেন, তাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তদন্ত কর্তৃপক্ষের সামনে উপস্থিত হবে এবং জড়িত থাকা প্রমাণিত হলে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য তাকে পাবলিক প্রসিকিউশনকে রেফার করা হবে। ”

আরব টাইমস জানায়, গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশিদের সম্পৃক্ততা প্রকাশ্যে আসে। সেই সময় প্রকাশিত হয়েছিল এমপিসহ তিন জন বাংলাদেশি একত্রে মানবপাচার এবং অর্থ পাচারের বিশাল নেটওয়ার্ক গঠন করে, যাদের একজনকে ধরা হয়েছিল এবং দুজন দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।

এই তিনজন বাংলাদেশি কুয়েতের ৩ টি বড় সংস্থায় মর্যাদাপূর্ণ এবং বড় অবস্থানে আছেন এবং তারা প্রায় ৫০ মিলিয়ন দিনার ছাড়িয়ে বড় অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে সরকারী সাফ্রয় চুক্তিতে ২০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী নিয়ে এসেছিল।

তিন বাংলাদেশি মানব পাচারকারীর মধ্যে একজন সম্প্রতি (কাজী পাপুল) তার দেশে সংসদ সদস্য হন। এছাড়াও তিনি একটি বৃহত্তর ব্যাংকের পরিচালক। এ ঘটনা প্রকাশের পর তার কুয়েত সফর ৪৮ ঘন্টার বেশি হয়ে ওঠেনি, যদিও তিনি কুয়েতি কোম্পানির অংশীদার এবং পরিচালক এবং তিনি দীর্ঘকাল ধরে কুয়েতে কাজ করছেন।

সেই সময় আরও সূত্রগুলি প্রকাশ করে যে, কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে এই বাংলাদেশির নাম ওঠে আসে এবং তার পরিচালিত কোম্পানির ফাইল স্থগিত করা হয়েছিল। এ তথ্য জানতে পেরে প্রায় এক সপ্তাহ আগে তিনি দেশ ত্যাগ করেছিলেন।

মুদ্রাপাচার ও মানবপাচারের অভিযোগে গত ৬ জুন শনিবার রাতে মুশরিফ আবাসিক এলাকা থেকে এমপি পাপুলকে গ্রেপ্তার করে কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সোমবার রিমান্ডের আবেদন করলে কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউশনের বিচারক তা মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে পাপুলের পক্ষে জামিনের আবেদন নাকচ করা হয়। কুয়েতি আদালতে পাপুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন ভুক্তভোগী প্রবাসী বাংলাদেশিরা ।

আগের খবর : কুয়েতে ভিসা ব্যণিজ্যের বিরুদ্ধে অভিযানে বন্ধ হচ্ছে বহু কোম্পানির অফিস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!