কুয়েতে বাংলাদেশের সাংসদ কাজী পাপুল রিমান্ডে

কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউশন মানবপাচার ও অর্থ পাচারের অভিযোগে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ শহীদ ইসলাম প্রকাশ কাজী পাপুলকে রিমান্ডে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে পাবলিক প্রসিকিউশন কাজী পাপলুর সাক্ষ্য শোনার অনুরোধ রাখতে এবং এর বিস্তারিত বিবরণ ও তদন্ত প্রতিবেদনের সরবরাহের আদেশও দিয়েছেন।

সোমবার (৮ জুন) এই তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কুয়েতের দৈনিক পত্রিকা আরব টাইমসের অনলাইন সংস্করণে।

মুদ্রাপাচার ও মানবপাচারের অভিযোগে কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) গত শনিবার পাপুলকে দেশটির মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল সোমবার রিমান্ডের আবেদন করলে কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউশনের বিচারক তা মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে পাপুলের পক্ষে জামিনের আবেদন নাকচ করা হয়।

Travelion – Mobile

আরব টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত বাংলাদেশি এমপি কাজি পাপলু পাবলিক প্রসিকিউশনকে আগে জানিয়েছিলেন যে, তিনি কুয়েতে ১০ বছর ধরে কাজ করছেন এবং তার বৈধ ভিসা বা আকামা রয়েছে এবং তিনি একটি পরিচ্ছন্ন সংস্থার অংশীদার যেটি তিনি কুয়েতের এসে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যেখানে তিনি একজন জেনারেল ম্যানেজার হিসাবে কাজ করেন।

তিনি আরও বলেছিলেন যে তিনি কুয়েতে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের জন্য কোনও ক্ষতিপূরণ আদায় না করেই কাজের ব্যবস্থা করেন এবং এটি সামাজিক দায়িত্ব হিসেবেই তিনি করে থাকেন।

বাংলাদেশের এই সাংসদ রাষ্ট্রীয় কৌসুলিদের কাছে সাত বাংলাদেশির স্বীকারোক্তি অস্বীকার করেন। তাদের অভিযোগ ছিল তারা প্রত্যেকে কুয়েতে আসার জন্যে বাংলাদেশি এই সাংসদকে ২৫০০ দিনার করে জমা দেন যেখানে সাংসদ তাদের ব্যক্তিগত চালক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল। অথচ শেষমেষ তারা সেখানে গিয়ে দেখল তাদের জন্য কোন ধরনের চাকরির সুযোগই সেখানে রাখা হয়নি বরং পরবর্তীতে এই সাংসদ তাদের আকামা নবায়নের নামে আবারো নতুন করে অর্থ দাবী করে বসল।

এই বাংলাদেশি সাংসদকে কুয়েতের মিশরেফ এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দারা। তারা সরকার থেকে গ্রেফতারের অনুমতি পাওয়ার পর সেখানে অভিযান চালায়। তাঁর বিরুদ্ধে মানব পাচার (আকামা ও বসবাসের অনুমতি বাণিজ্যে) ও অথ পাচারের অভিযোগ ছিল। ক্লিনিং কোম্পানির আড়ালে তিনি গোপনে এই ব্যবসা করতেন যেখানে সরকারি চুক্তির মাধ্যমে অগুণিত অদক্ষ কর্মীদের আনার সুযোগ ছিল।

এই ঘটনার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অনেক কর্মী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেছে যে তাদের বেতন অনেক দিন পর্যন্ত অপরিশোধিত রয়েছে। তারউপর অনেক কর্মী যাদের সরকারি চুক্তিমতে ক্লিনিং কোম্পানির জন্য আনা হয়েছে তাদের সংখ্যা কয়েক হাজার যাদের রেকর্ডগুলো যাচাই করার সময় দেখা যায় তাদের অনেকের কাজের চুক্তি শেষ হওয়ার পরও তাৎক্ষণিকভাবে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়নি। এর ফলে অনেক অদক্ষ শ্রমিকের সারি বৃদ্ধি পায় যারা তাদের বেতন থেকে বঞ্চিত হয়। তাই অবিলম্বে এই কোম্পানির ফাইলটি বাতিল করার জন্য একটি সিদ্ধান্ত জারি করা হয় এবং তা পাবলিক প্রসিকিউশনে পাঠানো হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!