কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক বরখাস্ত

১০০ কোটি টাকা অপচয় ও দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত হলেন কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আমিনুল হাসিব। তার দুর্নীতি আর অদক্ষতার কারণে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশের পর্যটন রাজধানীর বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প ।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিতে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের ও দুর্নীতির অভিযোগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বেবিচক।

তদন্তে বেরিয়ে এসেছে প্রকল্প পরিচালক আমিনুল হাসিবের নানা দুর্নীতি ও অদক্ষতার চিত্র। তিনি প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য চাহিদা মোতাবেক অর্থ যথাসময়ে জমা না দেওয়ায় সরকারের কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকার অপচয় হচ্ছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

Travelion – Mobile

২০১২ সালে ৪ অক্টোবর কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমিনুল হাসিব।

প্রকল্প পরিচালক হিসেবে আমিনুল হাসিবের দায়িত্ব ছিল নির্ধারিত তারিখের মধ্যে প্বূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজনীয় অর্থ জেলা প্রশাসকের সংশ্লিষ্ট তহবিলে জমা দেওয়া। কিন্তু তার দুর্নীতি ও ব্যর্থতার কারণে তা জমা না হওয়ায় ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি আইনানুগভাবে বাতিল হয়েছে।

এ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ পুরাতন আইনের আওতায় নির্ধারিত ছিল বলে জমির দাম কম হতো। কিন্তু অধিগ্রহণ কেসটি বাতিল হওয়ায় এখন ২০১৭ সালের আইনের আওতায় সম্পন্ন করতে হবে। এর ফলে জমির মূল্য তিন গুণ এবং এ সময়ে ওই এলাকায় জমির বর্ধিত মূল্যের হারে পরিশোধ করতে হবে। খাতে সরকারের কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের ভূমি উন্নয়নের কাজ
কক্সবাজার বিমানবন্দরের ভূমি উন্নয়নের কাজ

প্রকল্প পরিচালক স্থানীয় ভূমি মালিক ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কিছু কর্মচারীর যোগসাজশে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে অবৈধভাবে অর্থ গ্রহণের জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ ধরনের কাজ করেছেন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, আমিনুল হাসিব স্পেসিফিকেশন অনুসারে কক্সবাজার বিমানবন্দরের ৩৭ কোটি টাকা সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেননি। তাঁর ব্যক্তিগত ব্যর্থতা, অদক্ষতা ও দুর্নীতির কারণে এ প্রকল্পের কার্যক্রমে মারাত্মক ত্রুটি হয়েছে।

এ ছাড়া কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের জিডিপি গত বছরের ৪ নভেম্বর সরকারী অনুমোদন পায়। কিন্তু এক বছরেও প্রকল্পের টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি জারি করতে না পারার ব্যর্থতায় তাঁর বিরুদ্ধে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এর চাকরি প্রবিধানমালা-১৯৮৮ এর ৩৯(ক), ৩৯(ঘ), ৩৯(ঙ) এবং ৩৯(চ) ধারায় বর্ণিত দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অদক্ষতা, দুর্নীতিপরায়ণতা এবং আত্মসাতের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, ১০০ কোটি টাকা অপচয় ও দুর্নীতির দায়ে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। এ জন্য পিডি মো. আমিনুল হাসিবকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!