ওমানে করোনা সংকটে প্রবাসী স্কুলগুলোর ‘ফি’ কমানোর ঘোষণা

ওমানের করোনভাইরাস (কোভিড -১৯) সংকটের মধ্যে অভিভাবকদের উপর আর্থিক বোঝা কমাতে প্রবাসী স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের ফি কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। এরই মধ্যে ভারতীয় ও পাকিস্তানি বিদ্যালয় ফি কমানোর ঘোষণা দিয়েছে আর বাংলাদেশ স্কুল ফি কমানোর কথা ভাবছে।

টাইমস অব ওমানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওমানে পাকিস্তানি স্কুলের সাতটি শাখা মে মাসে তাদের টিউশন ফি ১০ শতাংশ মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। করােনার পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের অর্থনৈতিক চাপ কমিয়ে স্বস্তি দিতে স্কুল স্টিয়ারিং কমিটি এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান স্কুলের এক কর্মকর্ত।

তিনি আরও জানান, টিউশন ফি কমানো ছাড়াও অতিরিক্ত কিছু ফি যেমন যারা কম্পিউটার ক্লাস ও ব্যবহারিক ল্যাব ক্লাস নিচ্ছে, কিংবা যারা একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা দিবে তাদের সবার জন্য মে মাসে এসব ফি মওকুফ করা হয়েছে। এ ছাড়াও যারা এপ্রিল মাসের ফি প্রদান করেছেন তাদের আগের সব লেট ফি বা জরিমানা ফি অথবা পুনরায় ভর্তির ফি একেবারের জন্য মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

Travelion – Mobile

ওইই কর্মকর্তা টাইমস অব ওমানকে বলেন,“ ওমানে পাকিস্তান স্কুলের সব শাখাই জুন ও জুলাই মাসের জন্য কোর্স ফি এমনিতেই নেয়না। তাই পরের মাসের জন্য কিন্ডারগার্টেনগুলোতে গ্রেড ১০-এর মধ্যে শিশুদের বাবা-মা’রা ৩৩ থেকে ৪০ ওমানি রিয়াল প্রদান করবেন। আর ১১ ও ১২ গ্রেডের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা ৪৫ থেকে ৫৪ ওমানি রিয়াল স্কুলগুলোকে দিতে হবে।

পাকিস্তান স্কুলের পরিচালনা পর্ষদ আরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যে সব অভিভাবক বা ছাত্রছাত্রী কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে এই শিক্ষার্বষের শেষ মাস পর্যন্ত ৫০ শতাংশ টিউশন ফি আপাতত মওকুফ করা হবে। যা পরবর্তীতে তারা পরিশোধ করতে পারবেন।

অন্যদিকে ইন্ডিয়ান স্কুলগুলি মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত কেবল শিক্ষার্থীদের বেসিক টিউশন ফি নেবে। এক্ষেত্রে সব এক্সট্রাকারিকুলার ফি মওকুফ করা হয়েছে। যেসব বাবা-মা ইতিমধ্যেই পরবর্তী মেয়াদের স্কুল ফি অর্থাৎ পাঠ্যক্রমিক/নন-টিউশন ফি পরিশোধ করেছেন সেক্ষেত্রে তাদের ওই অর্থ ভবিষ্যতের একাডেমিক ফি’র সাথে সমন্বয় করা হবে।

ওমানে বাংলাদেশ স্কুলও করোনা সংকটে ফি কমানোর চিন্তা-ভাবনা করলেও এখনও কোন ঘোষণা দেয়নি। বাংলাদেশ স্কুল মাস্কাটের স্কুলের পরিচালনা পর্যদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসাইন চৌধুরী টাইমস অব ওমানকে বলেন, এসব স্কুলগুলোর আয়ের উৎস যেহেতু অভিভাবকদের ফি সেহেতু এই সময়ে তাদের আর্থিক সহায়তার বিষয়টি দূতাবাসকে জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন,“আমাদের রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ার ইতিমধ্যে আমাদের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে অর্থ সহায়তার বিষয়টি জানিয়েছেন যেটি এখানকার স্কুলগুলোর তিন মাসের ফি-এর সমতুল্য।”

“আমরা জানি না এক্ষেত্রে কত টাকা পাব, কিন্তু যা টাকাই আমরা পাব সেটি বাবা-মায়েদের কাছ থেকে নেয়া স্কুলের ফি থেকে মওকুফ করা হবে,” তিনি যোগ করেন।

সাজ্জাদ হোসাইন চৌধুরী আরও বলেন, “আমরা এই মুহূর্তে কঠিন সময়ের মুখোমুখি, তাই আমরা দেশের অভ্যন্তরে অন্যান্য দাতাদের থেকেও অর্থ সহায়তার বিষয়টি নজরে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, কারণ আমরা এই সময়ে শিক্ষকদের বেতন দিতেও হিমশিম খাচ্ছি।”

এদিকে আ’সউদ গ্লোবাল স্কুল (এজিএস) জানিয়েছে, আসন্ন অ্যাকাডেমিক বছরে তারা তাদের ফি ২০ শতাংশ কমিয়ে আনবে। যে অভিভাবকরা ইতিমধ্যে পরবর্তী মেয়াদের স্কুল ফি জমা করেছেন তা পরের একাডেমিক বচলের অর্থ প্রদানের বিপরীতে সমন্বয় করা হবে।

এজিএস স্কুল পরিচালনাকারী আল নাজাহ এডুকেশনের সিইও কিশোর দাশ বলেন,”সম্প্রদায়ের সহায়তার জন্য ফি হ্রাস অপরিহার্য মাধ্যম এবং শিক্ষার্থী ও পরিবারের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা।”

আগের খবর
ওমানে মানি এক্সচেঞ্জসহ বেশকিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি
ওমানে কমছে করোনার হার, মাস্কাটে একদিনে আক্রান্ত ১৬!

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!