ইরানে ইউক্রেনের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, ১৭০ আরোহী নিহত

১৮০ জন যাত্রী নিয়ে ইরানের রাজধানী তেহরানের ইমাম খামেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়েছে ইউক্রেনের একটি উড়োজাহাজ । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুঘর্টনায় ১৭০ আরোহী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ।

ইউক্রেনের সরকারি বিমানসংস্থা ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭-৮00 উড়োজাহাজটি তেহরান থেকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের পথে যাত্রা করছিল।

রাডারের তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট পিএস ৭৫২ বিমানটি তেহরানের ইমাম খামেনি বিমানবন্দর থেকে সকাল ৬ টায় যাত্রা করে। বিমানটিতে ১৮০ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্য ছিল। দুর্ঘটনায় হতাহতের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়।

ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭-৮00 উড়োজাহাজ
ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭-৮00 উড়োজাহাজ

Travelion – Mobile

বিমানটি উড্ডয়নের মাত্র তিন মিনিটের মাথায় বিধ্বস্ত হয়েছে বলে ইরানের একটি টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, উড়োজাহাজটি আকাশ থেকে মাটিতে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই এতে আগুন ধরে গেছে।

উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের পর মাটি থেকে ৭ হাজার ৯২৫ ফুট ওপরে উঠেছিল। এরপর তেহরানের ইমাম খামেনি বিমানবন্দরের কাছেই এটি বিধ্বস্ত হয়।

ইরান সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশনের মুখপাত্র রেজা জাফরজাদেহ জানিয়েছেন, উড়োজাহাজ ভেঙে পড়ার খবর পাওয়ার পরেই সেখানে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, দমকল ও মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে।


ইরান ইমারজেন্সি সার্ভিসেসের প্রধান পিরহোসেইন কৌলিভান্দ জানিয়েছেন, “ভেঙে পড়ার পরেই উড়োজাহাজে আগুন লেগে গিয়েছে। কিন্তু আমরা টিম পাঠিয়েছি। আশা করছি কিছু যাত্রীকে আমরা বাঁচাতে পারব।”

দুর্ঘটনার বিস্তারিত কারণ বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি। ইরানের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ওই উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইট ফ্লাইটার্ডার-এর প্লেব্যাক ডেটা দেখায় যে, উড্ডয়নের দুই মিনিট পরেই উড়োজাহাজটি থেকে সিগন্যাল হারিয়ে গিয়েছিল। ২০১৬ সালে তৈরি এবং সরবরাহ করা বোয়িং ৭৩৭-৮00 উড়োজাহাজটি ইউআর-পিএসআর (UR-PSR) হিসাবে নিবন্ধিত হয়েছে।

টুইটারে পোস্ট বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা বোয়িং জানিয়েছে তারা এই দুর্ঘটনা সর্ম্পকে অবগত এবং ‘আরও তথ্য সংগ্রহ করছে’।

ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে এক ঘণ্টার ব্যবধানে দু’বার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই অঞ্চলের বেশিরভাগ আকাশসীমাই বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে, তেহরানের কাছে ইউক্রেনের ওই যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটি বিধ্বস্তের ঘটনায় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক অস্থিরতার কোনো সম্পর্ক নেই।


ইরানের পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে, বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছিল।

বোয়িং ৭৩৭-৮০০ হ’ল খুব সাধারণ একটি দ্বিগুণ ইঞ্জিনের সিঙ্গেল আইল (সরু বডি), যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ, যা সংক্ষিপ্ত থেকে মাঝারি-দূরত্বের রুটে জন্য ব্যবহৃত হয়। বিশ্বজুড়ে বিমান সংস্থাগুলোর বহরে এই মডেলের কয়েক হাজার উড়োজাহাজ রয়েছে।

১৯৯০ এর দশকের শেষদিকে প্রবর্তিত এই মডেল বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্সের আগের মডেল, দুটি মারাত্মক দুর্ঘটনার পরে প্রায় ১০মাস ধরে উড়াল বন্ধ রয়েছ ম্যাক্সের।

বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ এর আগে দুটি বড় দুর্ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে, ফ্লাইদুবাই বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ দুবাই থেকে রওনা হয়ে রাশিয়ার রোস্তভ-ডন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনায় পড়ে ছিল, এতে ৬২ জন যাত্রী নিহত হন।

২০১০ সালের মে মাসে দুবাই থেকে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস পরিচালিত আরও একটি ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ ভারতের মাঙ্গালোরুতে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয় এবং এতে ১৫০ জনের বেশি যাত্রী নিহত হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!