মাতাল কেবিন ক্রুর কারণে চারটি ফ্লাইট বিলম্ব!

বিমান ছাড়ার একটু আগেই এক কেবিন ক্রুর (ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট) শরীরে ধরা পড়ে উচ্চ মাত্রার এলকোহল। তাই জাপানের সবচেয়ে বড় বিমানসংস্থা অল নিপ্পন এয়ারওয়েজের (এএনএ) বিলম্বিত হল চার চারটি ফ্লাইট।

বোর্ডিংয়ের জন্য প্রস্তুত থাকা এ এন এ’র একটি ফ্লাইট এমন ঘটনায় তৎক্ষণাৎ বিকল্প ক্রুর ব্যবস্থা করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তাই পর পর চারটি ফ্লাইট বিলম্বে ছাড়তে হয় তাদের।

জাপান টুডেকে উড়োজাহাজ কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের এক ২০ বছর বয়সী কেবিন ক্রু আগের রাতে কিছুটা বেশিই মদ্যপান করে ফেলেছিলেন। পরের দিন ভোর ৬.৩০ এ ঐ কেবিন ক্রু তার প্রথম ফ্লাইটে ধরতে ফুকুওকা বিমানবন্দর আসে। তবে নিয়ম অনুযায়ী বোর্ডিংয়ের আগে করা অ্যালকোহল পরীক্ষায় তার শরীরে মদ্যপ থাকার আলামত মেলে।

Travelion – Mobile

এর জন্য নির্ধারিত যন্ত্রটি ঔ কেবিন ক্রুর শ্বাস পরীক্ষা করে দেখে তার শরীরে ০.১৪ মিলিগ্রাম অ্যালকোহল রয়েছে। এএনএ বিমানসংস্থার নীতি অনুযায়ী যে কোন পাইলট বা কেবিন সদস্য উড়োজাহাজে উঠার আগে তাদের শরীরে অ্যালকোহলের মাত্রা ০.০০ মিলিগ্রাম থাকতে হবে।

এছাড়াও অ্যালকোহলের ব্যাপারে এএনএ তাদের নিয়মগুলিও বেশ কঠিন করেছে। আগে কেবিন ক্রুদের মদ্যপান এবং কাজের মধ্যে ১২ ঘন্টার বিরতি থাকলেও তা বাড়িয়ে ২৪ ঘন্টায় উন্নীত করা হয়েছে।

সকাল ৭.২০ এর ঔ ফ্লাইটে তাৎক্ষণিকভাবে টোকিওগামী আরেক ফ্লাইটের কেবিন ক্রুকে বদলি করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। এই কারণে পরবর্তী ফ্লাইটগুলোতে পর্যাপ্ত কেবিন ক্রু ব্যবস্থা করা নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় পর পর চারটি ফ্লাইট বিলম্ব হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ বিলম্ব ছিল ২৫ মিনিট।

এ ঘটনায় ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্ট তার ভুলে বেশ লজ্জিত হয়েছে এবং উড়োজাহাজের নিয়ম লঙ্ঘনের ব্যাপারে সচেতন না থাকায় দুঃখ প্রকাশ করেছে।

তিনি জানান, আগের রাতে এক বন্ধুর সাথে তিনি চুচু নামে স্থানীয় একটি পানীয় পান করেছন। তবে তিনি বুঝতে পারেননি তার পরিমাণ অতিরিক্ত ছিল।

ব্যাপারটি হিসেব করে দেখা যায়। সাধারণত কোন ৭০ কেজি ওজনের মহিলা যদি এক পেগ মদ্যপান করে তবে তার শরীরে ০.০০৬ মিলিগ্রাম অ্যালকোহলের অস্তিত্ব মিলবে। যেহেতু এখানে ০.১৪ মিলিগ্রাম অ্যালকোহল পাওয়া গেছে সেহেতু বুঝে নেয়া যায় ঔ ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্ট অন্তত ৫-৬ ঘন্টা আগে ৭ থেকে ১০ পেগের মত মদ্যপান করেছিল।

অনেকের মনে হতে পারে কেবিন ক্রু’র এই অ্যালকোহলের মাত্রা তেমন কোন বড় ব্যাপার নয়। তবে এক্ষেত্রে ব্যাপারটি একেবারে ভিন্ন, যখন আপনাকে শত শত যাত্রীর সুরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকতে হয়। কেবল ফুড কার্ট ঠেলে খাবার ও পানীয় পরিবেশন কেবিন ক্রু’দের মূল কাজ নয়। বরং বিপদের মুহুর্তে আকাশে থাকা শত শত যাত্রীর জানমাল রক্ষায় তারা অনেক বেশি পটিয়সী।

বিলম্বে ফ্লাইট ছাড়লেও আনন্দের বিষয় হল, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এএনএ তাদের যথাযথ প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করেছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!