ভিডিও কলে মায়ের সঙ্গে কথা, এরপর আত্মহত্যা তরুণ প্রবাসীর

দোকান থেকে বের হয়ে বাড়িতে ফোন করে মায়ের সাথে ভিডিও কল দিয়ে কথা বলেন। এরপর নিজ রুমে গিয়ে গলায় দড়ি বেঁধে ঝুলে পড়লেন সিলিং ফ্যানের সাথে-নিমিষে নিভে গেল একটি তরতাজা প্রাণ, এক প্রবাসী বাংলাদেশি যুবকের জীবন।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) ওমানের রাজধানী মাসকেটের আমরাতে নিজের ঘরে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন মো. সাব্বির (২২)। তার আত্মহত্যার কোন কারণ এখনও জানা যায়নি।

মাত্র দেড় বছর আগে জীবনের তাগিদে ওমানপ্রবাসী হয়েছিলেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বিবিরহাট বাজার সংলগ্ন কামরাঙ্গা পাড়ার মো জাহাঙ্গীরের ছেলে সাব্বির। বাবা ও বড় ভাইও ওমানপ্রবাসী।

Travelion – Mobile

কখনো হার্ডওয়ারের দোকান, কখনো মাংসের দোকানে চাকরি করে মোটামুটি জীবন এগিয়ে নিচ্ছিলেন। ভাই আর বাবাও থাকেন তার থেকে মাইল পাঁচেক দূরে। ভাইয়ের মাংসের দোকানে ভিসা ট্রান্সপার করার প্রক্রিয়া চলছিল। এমন সময় হঠ্যত করেই আত্মহননের পথে যান সাবিবর।

তার সহকর্মী ও ঘনিষ্ট বন্ধু ফারুক বলেন,’সোমবার প্রতিদিনের মতো মনোযোগী হয়ে হার্ডওয়ার দোকানে ডিউটি করছিল সাব্বির । দোকান থেকে সন্ধ্যার একটু আগে বের হয়ে বাড়িতে ফোন করতে দেখি। তার মায়ের সাথে ভিডিও কল দিয়ে কথা বলে মুখ গম্ভীর হয়ে আমার কাছে রুমের চাবি চায়। বলল, বার্থরুমে যাবো, চাবিটা দাও।’

এর একটু পরই অপর এক রুমমেট এবং দোকান মালিক গিয়াস উদ্দিন রুমে ফিরে সিলিং ফ্যানের সাথে সাব্বিরের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। তিনি বলেন, ‘ছেলেটি আমার দোকানে চাকরি করতো। কথাবার্তায় বেশ মজা করতো, মিশুক টাইপের ছেলে ছিল। মাগরিবের নামাজ পড়তে আমি দোকান থেকে বাসায় গেছি, দরজা লক করা ছিল না। ঢুকেই ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে দেখতে পাই।’

পরে রুমমেটরা আরবাবকে এবং ভাই ও বাবাকে সাব্বিরের মৃত্যুর খবর জানায় । খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে অঅসে। তারা সুরতহাল তৈরি করে সাব্বিরের মরদেহ নিয়ে যায়।

নিহত সাব্বিরের ভাই সাকিল বলেন,’মৃত্যুর একটু আগেও আ্মাকে ফোন করে ভিসা ট্রান্সপারের ব্যাপারে কথা বলেছিল। আমি জানিয়েছিলাম আরও এক মাস সময় লাগবে। সে বলেছিল, তাকে ট্রান্সপার না করে ভিসাটা দিয়ে আমার অপর এক ভাইকে দেশ থেকে আনতে। ‘

যে ছেলে সকালেও হাসিখুশিতে দোকানে এসে ডিউটি করেছেন, সন্ধ্যায় অাত্মহত্যা করলেন! এর নেপথ্য কি তা বের করা সম্ভব হয়নি। তার ভাইও কোন সঠিক অনুমান করতে পারছেন না। তার ঘনিষ্ট বন্ধু, সহকর্মী ফারুক বললেন, প্রেমঘটিত কোন ব্যাপারও নয়, এ ধরণের বিষয় থাকলে সে অন্তত আামার সাথে শেয়ার করতো। তবে, সে একাধিক মেয়ের সাথে ফোনালাপ করতো তা জানতাম।’

তার ফেইসবুক ওয়ালেও আত্মহত্যার কোন ধরণের ইঙ্গিত পাওয়া যায় নি।

এদিকে দেশে ছেলের আত্মহত্যার খবর শুনে খবর নিহত সাব্বিরের মা দুইবার স্ট্রোক করে এখন হাসপাতালে। ‘

বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, মরদেহ দেশে পাঠানোর কাগজপত্র তৈরি হয়ে গেছে, বুধবার (৮ জানুয়ারি) মরদেহ দেশে পাঠানো যেতে পারে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!