ইউক্রেনের উড়োজাহাজটি বিমানবন্দরেই ফিরছিল, তখনই বিধ্বস্ত

উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর আবার বিমানবন্দরে ফিরতে চেয়েছিল ইরানে বিধ্বস্ত ইউক্রেনের জাতীয় বিমানসংস্থার যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটি। তখনই আগুন ধরে এটি বিধ্বস্ত হয় ।

প্রাথমিক তদন্ত শেষে এমনটাই বলছে য ইরানের তদন্ত দল। তারা জানায়, বিমানবন্দর এলাকা ছেড়ে যাওয়ার পরই ত্রুটি ধরা পড়ে এবং উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে যায়।

বুধবার খুব সকালে রাজধানী তেহরানের ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছু সময় পর ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের বোয়িং-৭৩৭ উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। এতে উড়োজাহাজের ১৭৬ আরোহীর সবাই নিহত হন। দুর্ঘটনার কারণ জানা যায়নি।

Travelion – Mobile

ইরানের সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন (সিএওআই) এর প্রধান আলী আবেদজাদেহ বলেন, উড়োজাহাজটি বিমানবন্দর ছেড়ে প্রথমে পশ্চিমের দিকে এগোয়। এরপর সমস্যা দেখা দিলে ডানে ঘোরে। এবং বিধ্বস্ত হওয়ার সময় এটি বিমানবন্দরমুখী ছিল।

বিধ্বস্ত উড়োজাহাজ থেকে উদ্ধার করা মরদেহের সারি । ছবি: আমিন আউই
বিধ্বস্ত উড়োজাহাজ থেকে উদ্ধার করা মরদেহের সারি । ছবি: আমিন আউই

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে আবেদজাদেহ বলেন, বিধ্বস্ত হওয়ার আগেই উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে। আবার ইমাম খোমেনি বিমানবন্দরে ফেরত আসার চেষ্টার আগে পাইলট কোনো সমস্যা হয়েছে এমন কোনো কল দেয়নি।

তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্য ইউক্রেন ও প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িং-এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া সুইডেন ও কানাডায়ও পাঠানো হয়েছে। কারণ উড়োজাহাজে তাদের নাগরিকেরা ছিলেন।

ইউক্রেনের নিরাপত্তা কাউন্সিলের সেক্রেটারি ওলেকসি ড্যানিলভ বলেন, তদন্তকারীরা বিধ্বস্তস্থলে সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসস্তূপে তল্লাশি চালাতে চেয়েছিলেন। ড্যানিলভ বলেন, মধ্য আকাশে অন্য উড়োজাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষ, ইঞ্জিন বিস্ফোরণ অথবা উড়োজাহাজের ভেতরে কোনো সন্ত্রাসীর বহন করা বিস্ফোরকের বিস্ফোরণসহ সম্ভাব্য সব ধরনের কারণ খতিয়ে দেখা হবে।

ইরানে ইউক্রেনের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত
ইরানে ইউক্রেনের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত

এদিকে ইরান সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, কোনোভাবেই বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটির ব্ল্যাক বক্স বোয়িং কিংবা আমেরিকানদের হাতে দেওয়া হবে না। গ্লোবাল অ্যাভিয়েশন আইন অনুযায়ী তদন্তের নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকার ইরানের রয়েছে। কিন্তু প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানও সাধারণত এতে সম্পৃক্ত থাকে।

গত শুক্রবার ভোরে ইরাকের বাগদাদে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ইরানের কুদস ফোর্সের শীর্ষ জেনারেল কাশেম সোলাইমানির হত্যাকে ঘিরে চরম উত্তেজনার মধ্যে দুদেশের মধ্যেচরম উত্তেজনা দেখা দেয়।

সোলাইমানিকে হত্যার বদলা নিতে বুধবার ভোররাতে ইরাকে দুটি মার্কিন বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর কয়েক ঘণ্টা পর উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। তবে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে চলা উত্তেজনার সঙ্গে এই ঘটনার কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা জানা যায়নি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!