‘আমার চোখে এটা বাংলাদেশি পাসপোর্টের জয়’

লিসবনে সংবর্ধনায় বিশ্ব পর্যটক কাজী আসমা আজমেরি

‘বিশ্বের নানা দেশের বিমানবন্দরে বাংলাদেশি পাসপোর্টের মানুষকে হয়রানি হতে দেখেছি। সেই চিন্তা থেকেই বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিশ্বভ্রমণের চিন্তা মাথায় আসে। আমি বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়েই পৃথিবীর সব দেশেই আমার পায়ের চিহ্ন রাখতে চাই ।’

এমন আবেগ আর সাহসী কন্ঠ বিশ্ব পর্যটক বাংলাদেশি মেয়ে কাজী আসমা আজমেরির। যিনি এরই মধ্যে বাংলাদেশি পাসপোর্টে ঘুরে ফেলেছেন বিশ্বের ১১৩ দেশ। সংবাদের শিরোনামও হয়েছেন দেশ ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে।

পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে মাল্টিকালচারাল একাডেমির দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ অভিব্যক্তি জানিয়ে বলেন, ‘অক্টোবর পর্যন্ত আমি ১১৩টি দেশ সফর করেছি, আমার চোখে এটা বাংলাদেশি পাসপোর্টের জয়।

লিসবনে বিশ্ব পর্যটক কাজী আসমা আজমেরিতে  উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়
লিসবনে বিশ্ব পর্যটক কাজী আসমা আজমেরিতে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়

‘বাংলাদেশ আমার দেশ, আমি চাই এ দেশকে মানুষ চিনুক। আমরা বাংলাদেশিরা কোনো কোনো দেশে হয়তো যাই শ্রমিক হয়ে, কিন্তু আমরা ভ্রমণপিপাসু এবং পর্যটক হিসেবেও যেতে পারি সেটা আমি বিশ্বকে দেখাতে চাই’, বলেন আসমা আজমেরি।

Travelion – Mobile

একাডেমির পর্তুগিজ ভাষা শিক্ষা কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশ্ব পর্যটক কাজী আসমা আজমেরি উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান বিভিন্ন দেশের অভিবাসী শিক্ষার্থীরা। ইউরোপ ভ্রমণের অংশ হিসেবে দ্বিতীয়বার লিসবন ভ্রমণে এসে এই অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হয়েছিলেন তিনি। একাডেমির শিক্ষক্ষ-শিক্ষার্থী আর অভিবাসীরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।’

লিসবনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন বিশ্ব পর্যটক বাংলাদেশি মেয়ে কাজী আসমা আজমেরি
লিসবনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন বিশ্ব পর্যটক বাংলাদেশি মেয়ে কাজী আসমা আজমেরি

স্মৃতিচারণে আসমা আজমেরি বলেন,’আমি ২০১০ সালে ভিয়েতনাম গিয়েছিলাম । সেখান থেকে রওনা হয়েছিলাম কম্বোডিয়ায়। কিন্তু এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন রিটার্ন টিকেট না থাকা এবং বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে আমাকে সেদেশে ঢোকার অনুমতি দেয়নি। উপরন্ত আমাকে ২৩ ঘন্টা জেলে আটকে রাখে। ‘

জেলে থাকার সেই ২৩ ঘন্টাই তার পর্যটক জীবনের টার্নিং পয়েন্ট উল্লেখ করে আসমা আজমেরী বলেন, জেলে থাকার সময়ই মনস্থির করলাম, আমাকে এমন কিছু করতে হবে যাতে বাইরের মানুষ বাংলাদেশের পাসপোর্টকে সম্মানের চোখে দেখবে, হয়রানি না করে। আমার আজকের বর্তমান অতীতের সেই দুঃসহ স্মৃতিরই রেশ কিংবা অবদান, বললেন আসমা।

 লিসবনে  পর্তুগাল মাল্টিকালচারাল একাডেমির সংবর্ধনা অনুষ্ঠান
লিসবনে পর্তুগাল মাল্টিকালচারাল একাডেমির সংবর্ধনা অনুষ্ঠান

সমাপনী ও অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও লিসবন সিটি কাউন্সিলর রানা তসলিম উদ্দিন, পর্তুগিজ শিক্ষিকা মারলিন, সোফিয়া ও পাওলা, পর্তুগাল অভিবাসন অধিদপ্তরে কর্মরত সহকারী অফিসার মঈন উদ্দিন আহমেদ, বরিশাল কমিউনিটির অব পর্তুগালের সাধারণ সম্পাদক মো. সাহিন সাঈদ, সজীব গ্রুপের সহকারি জেনারেল ম্যানেজার (রফতানি) মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান।

[প্রিয় পাঠক, আকাশযাত্রা প্রবাস বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকসহ কমিউনিটির নানান খবর, সংগঠনের খবর, ভ্রমণ, আড্ডা,আনন্দ-বেদনার গল্প, ছোট ছোট অনুভূতি, দেশের স্মৃতিচারণসহ যে কোনো বিষয়ে লিখে পাঠাতে পারেন। লেখা ছবিসহ মেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়]

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!