মাঝ আকাশেই মারা গেলেন ওমানপ্রবাসী এক বাংলাদেশি

প্রবাস থেকে যাত্রা করেন দেশের পথে । বিমানবন্দরে অপেক্ষায় একমাত্র ছোট্ট মেয়ে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে প্রবাসফেরত বাবাকে পেল ছোট্ট শিশুটি। কিন্তু বুকে জড়িয়ে আদর নেয়ার সুযোগ হল না তার। প্রাণহীন নিথর দেহের তো সাড়া দেয়ার ক্ষমতা নেই। আকাশ পথেই দুর আকাশে চলে গেছেন তিনি।

মাঝ আকাশে উড়োজাহাজের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ওমানপ্রবাসী এক বাংলাদেশি রেমিট্যান্সযোদ্ধা। রানা আহমদ তৌরিফ (৪৯) নামের ঔ যাত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ওমান রাজধানী মাস্কাট থেকে দেশে ফিরছিলেন। শুক্রবার (২৫ অক্টােবর) কলকাতার আকাশপথেই তার মৃত্যু হয় বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার (বিমানের হিসেবে শুক্রবার) মধ্যরাত ২ টা ৪৫ মিনিটে মাস্কাট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্য ছেড়ে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি ২২২ ফ্লাইটটির যাত্রী ছিলেন রানা আহমদ তৌরিফ। মাস্কাট-সিলেট সরাসরি আসা বিমানটিতে সিলেটের ১৮৬ জন ওমানপ্রবাসী যাত্রী ছিলেন।

ভারতের আকাশসীমায় থাকতেই তৌরিফ অসুস্থ বোধ করেন। কেবিন ক্রু তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ রাখার চেষ্টা করেন। অবস্থা বেশি খারাপ হলে কেবিন ক্রু পাইলটকে বিষয়টি জানান। পাইলট সিলেট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে (এটিসি) বিষয়টি অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান।

Travelion – Mobile

খবর পেয়ে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্র্তপক্ষ এম্বুলেন্সসহ জরুরী চিকিৎসার সকল ব্যবস্থা নেন। সকাল ৯ টা ৮ মিনিটে বিমান অবতরণ করলে তৌরিফকে দ্রুত নামিয়ে আনে বিমানবন্দরের মেডিকেল টিম।

বিমানবন্দরেরই প্রাথমিক পরীক্ষা করে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জানান ঘন্টা খানেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। সে হিসেবে ধরে নেয়া হ্চ্ছে কলকাতার আকাশেই শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা দিকে তিনি মারা যান। বাংলাদেশ বিমানের পক্ষ থেকে এমনটি জানানো হয়েছে বিমানবন্দরে তৌরিফকে নিতে আসা পরিবারের সদস্যদের।

পরে পরিবারের সদস্যদের মরদেহ হস্তান্তর করেন বিমান কর্তৃপক্ষ। পরে অ্যাম্বুলেন্স করে মরদেহটি নিজ গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। বাবাকে নিতে বিমানবন্দরে গিয়েছিল তৌরিফের ৬ বছরের একমাত্র মেয়েটি।

তৌরিফ সিলেট জেলার ওসমানীনগর উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাদিপুর গ্রামের আবদুল আহাদের ৪র্থ ছেলে। তিনি প্রায় ২৫ ধরে ওমানপ্রবাসী। সবশেষ রাজধানী মাস্কাটের রুই এলাকায় টেইলারিং পেশায় ছিলেন, আকাশযাত্রাকে জানান তার ছোট ভাই শাহীন আহমেদ।

তিনি আরও জানান, দেশে তৌরিফের স্ত্রী ও ৬ বছরের মেয়েটি রয়েছে। পরিবারের স্বচ্ছলতার জন্য প্রবাসের সংগ্রামী জীবনের কারণে তিনি অনেক দেরিতে সংসারী হয়েছিলেন। গত এক বছর আগে সবশেষ তিনি দেশে এসেছিলেন।

সাদিপুর ইউপি সদস্য কাজী জিল্লুর মিয়া জানান, শুক্রবার বাদ এশা জানাযা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। প্রবাসী তৌরিফ খুব ভাল একজন মানুষ ছিলেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কর্তৃপক্ষের কারো ভাষ্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

[প্রিয় পাঠক, আকাশযাত্রা প্রবাস বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকসহ কমিউনিটির নানান খবর, সংগঠনের খবর, ভ্রমণ, আড্ডা,আনন্দ-বেদনার গল্প, ছোট ছোট অনুভূতি, দেশের স্মৃতিচারণসহ যে কোনো বিষয়ে লিখে পাঠাতে পারেন। লেখা ছবিসহ মেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়]

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!