’অনুপ্রবেশকারী’ মুক্ত হতে চায় সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগ
শুরু হচ্ছে শুদ্ধি অভিযান
দলের শুদ্ধি অভিযানে নামছে সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের অন্যতম শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ শাখা সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগ। ২০২০ সালের কাউন্সিলকে সামনে রেখে ‘অনুপ্রবেশকারী’ মুক্ত করতে চায় সংগঠনটি। এ লক্ষ্যে গঠন করা হচ্ছে নিরপক্ষে ও শক্তিশালী তদন্ত কমিটি।
এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগের নির্বাহী পরিষদের সভায়। স্থানীয় সময় গত রোববার রাজধানী বার্নে সংগঠনের সভাপতি তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শ্যামল খানের সঞ্চালনায় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভার আলোচ্য বিষয় ছিল আসন্ন বিজয় দিবস, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তির আয়োজনের সিদ্ধান্ত এবং সে সাথে তহবিল গঠন, নতুন সদস্য সংগ্রহ ও সদস্যপদ নবায়ন এবং ‘অনুপ্রবেশকারী’ সনাক্তকরণে মতামত গ্রহণ। সবকিছু ছাপিয়ে শুদ্ধি অভিযান নিয়ে বেশ জমে উঠে আলোচনা।
মতামত দিয়ে গিয়ে কমিটির সদস্যরা ‘অনুপ্রবেশকারী’ সনাক্তকরণের মাধমে দলের শুদ্ধি অভিযানের উপর জাের দেন বেশি। মতামত দেন সেই সাথে নতুন সদস্য সংগ্রহ এবং সদস্যপদ নবায়নর বিষয়েও।
এর প্রেক্ষিত বক্তব্যের শুরুতেই সংগঠনের সভাপতি তাজুল ইসলাম নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন,’জামাত শিবির, বিএনপি, জাসদ, ফ্রিডম পার্টির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগে ঢুকে পড়েছে। সেই লক্ষ্যে আওয়ামী সংগঠনে শুদ্ধি অভিযানে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন দলের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাই আমাদেরও নিরব থাকার কোন সুযোগ নেই।’
জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্থাশীল এমন বিশ্বস্ত ও যোগ্য আওয়ামীযােদ্ধাদের নিয়ে গঠন করা হবে ৫ থেকে ৭ সদস্যের নিরপক্ষে ও শক্তিশালী তদন্ত কমিটি। সেই কমিটি সংগঠনের সকল সদস্যেকে যাচাই বাছাই করবে। কমিটির অনুসন্ধানের ভিত্তিতে শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে দলকে ‘অনুপ্রবেশকারী’ মুক্ত করা হবে, সভাপতির ঘোষণা।
সাধারন সম্পাদক শ্যামল খাঁন বলেন, সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২০ মে ২০২০। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সম্মেলন করা হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি। সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের পরবর্তী সভায় ২০২০ সালের কাউন্সিল এবং কাউন্সিলার নির্বাচন নিয়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
মূল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে চলতি বছরের ২৯ ডিসেম্বর জুরিখে বিজয় দিবস উদযাপন, ২০২০ সালের মার্চে অলিম্পিক শহর লুজান অথবা আন্তর্জাতিক শহর জেনেভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন এবং স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তির আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সংগঠনের উপদেষ্টামণ্ডলী ও নির্বাহী কমিটির সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে এইসব পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
সভায় আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনের উপদেষ্টা শেখ জহিরুল জহির, ইমরান খান মুরাদ, মোহাম্মদ মহসিন, বাবুল সরকার, ইশরাক আহমেদ নিপুন, আবুল খায়ের মনির, খলিলুর রহমান, সাবেক সভাপতি হারুণ ব্যাপারী, বর্তমান সহ-সভাপতি কারার কাউসার, নুরুল্লাহ চৌধুরী, স্বপন হাওলাদার, মিয়া সাব্বির রনি, জসিম ভুইয়া, কাজী রহিম, সোহেল আহমেদ রুবেন, গোলাম মোর্শেদ সাচ্চু, যুগ্ম সম্পাদক মাসুম খান দুলাল, শাহ্ আলম এগার, লুৎফুর রহমান খুকু, মুল্লুক সফর বিপুল, সৈয়দ গোলাম কামরুজ্জামান, রতন মিয়া বাগা, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদ জসিম, মিয়া লিটন, মোহাম্মদ আকবর আলী এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক গৌড়ী চরন অসীম।
এছাড়াও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ নেতা অমি রহমান পিয়াল, কাজী আসাদুজ্জামান এবং নজরুল জমাদার।
সভার শুরুতেই সংগঠনের উপদেষ্টা প্রয়াত আবুল বাশার ও সহ-সভাপতি সদ্য প্রয়াত মুজিবুর রহমান কিরণের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।