সুলতান কাবুস পেলেন ‘গান্ধী শান্তি পুরস্কার’

আধুনিক ওমানের রূপকার, প্রয়াত সুলতান কাবুস বিন সাইদকে ২০১৯ সালের জন্য আন্তর্জাতিক গান্ধী শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করেছে ভারত সরকার। এই আন্তর্জাতিক পুরষ্কার ভারত ও ওমানের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে প্রয়াত সুলতান কাবুস বিন সাইদের অতুলনীয় দৃষ্টি ও নেতৃত্বের সঙ্গে উপসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও অহিংস প্রচারের জন্য তাঁর প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

সোমবার ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালের গান্ধী শান্তি পুরস্কারের জন্য ওমানের প্রয়াত সুলতান কাবুস বিন সাইদ আল সাইদ এবং ২০২০ সালের গান্ধী শান্তি পুরস্কারের জন্য বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং নাম ঘোষণা করে।

আন্তর্জাতিক গান্ধী শান্তি পুরস্কার ভারত সরকার প্রদত্ত মহাত্মা গান্ধীর নামাঙ্কিত একটি বার্ষিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার। ১৯৯৫ সালে মহাত্মা গান্ধীর ১২৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে গান্ধীজির মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভারত সরকার এই পুরস্কার চালু করে। অহিংসা ও অন্যান্য গান্ধীবাদী পদ্ধতিতে আর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক পরিবর্তন সাধনের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের প্রতি এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভারতের প্রধান বিচারপতি, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং অপর দুই বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের নিয়ে গঠিত একটি জুরি বোর্ড প্রতি বছর পুরস্কারপ্রাপকের নাম স্থির করেন।

Travelion – Mobile

আগের খবর : আন্তর্জাতিক গান্ধী শান্তি পুরস্কার পেলেন বঙ্গবন্ধু

ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, মহাত্মা গান্ধী যে অহিংসার পথ দেখিয়ে গেছেন, একই ধরনের পথে ওমানের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক রূপান্তরে অসামান্য অবদানের জন্য মরহুম সুলতান কাবুসকে এই পুরস্কার জন্য মনোনীত করেছে ভারত সরকার। গত ১৯ মার্চ জুরি বের্ডের বৈঠকে আলোচনা-সমালোচনার পরে সর্বসম্মতিক্রমে সুলতান কাবুসকে ২০১৯ সালের জন্য গান্ধী শান্তি পুরষ্কার হিসাবে নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জুরির নেতৃত্ব দেন।

“সুলতান কাবুস ছিলেন এক দূরদর্শী নেতা, আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে মধ্যপন্থী ও মধ্যস্থতার নীতিই যাকে বিশ্বজুড়ে প্রশংসা ও সম্মান দিয়েছিল। তিনি বিভিন্ন আঞ্চলিক বিরোধ এবং দ্বন্দ্বের মধ্যে শান্তি প্রচেষ্টা সমর্থন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। সুলতান কাবুস ছিলেন ভারত ও ওমানের মধ্যকার বিশেষ সম্পর্কের স্থপতি। তিনি ভারতে পড়াশোনা করেছিলেন এবং সর্বদা ভারতের সাথে একটি বিশেষ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। তার নেতৃত্বে ভারত ও ওমান কৌশলগত অংশীদার হয়ে ওঠে এবং আমাদের পারস্পরিক স্বার্থ সংরক্ষণ, ব্যাপক অংশীদারিত্ব জোরদার এবং সর্ম্পকের আরও নতুন উচ্চতা বাড়িয়েছে,” সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

সুলতান কাবুসের মৃত্যুতে শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারত-ওমানের মধ্যে বন্ধন রচনায় তার অবদানের কথা স্মরণ করে বলেছিলেন, “তিনি ছিলেন ভারতের একজন সত্যিকারের বন্ধু এবং ভারত ও ওমানের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার জন্য দৃঢ় নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন”। মোদী তাকে “দূরদর্শী নেতা এবং রাষ্ট্রনায়ক” এবং “আমাদের অঞ্চল ও বিশ্বের জন্য শান্তির বাতিঘর” হিসাবেও স্মরণ করেছিলেন।

গান্ধী পুরস্কারের অর্থমূল্য ১ কোটি রুপি। সঙ্গে দেওয়া হয় মানপত্র ও ঐতিহ্যপূর্ণ হস্তশিল্প সামগ্রী। দক্ষিণ আফ্রিকার নেতা নেলসন মান্ডেলা, আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু, তানজানিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস নায়ার অতীতে গান্ধী শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!