সাহিত্য-সংলাপে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মেলবন্ধন

সাহিত্য এবং সাংস্কৃতিক সংযোগকে উপজীব্য করে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর বিশিষ্ট লেখকদের একত্রিত করার উদ্দেশ্যে সাহিত্য- সংলাপে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মেলবন্ধন’ শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত ১৭ অক্টোবর মেক্সিকোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং মেক্সিকোর জাতীয় যাদুঘরের যৌথ উদ্যোগে রাজধানীর ইতিহাস আর ঐতিহ্যের প্রাণকেন্দ্র ডাউন টাউনে ‘সাহিত্য- সংলাপে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মেলবন্ধন’ শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে উপস্থিত সকলকে বাংলাদেশে্র সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। যাদুঘরের পরিচালক আলেহান্দ্রা গোমেজ কোলোরাদো তার স্বাগত বক্তব্যে দুই দেশের মধ্যেকার সাংস্কৃতিক সংযোগ তৈরিতে বাংলাদেশ দূতাবাস কতৃক আয়োজিত সাহিত্য-সংলাপ আলোচনা এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র উদযাপনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। মেক্সিকোর বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পাবলো রুলফো, আরতুরো ভাজকেজ, ফাব্রিসিও রামিরেস, ইউহেনিও পারতিদা, এরনেসতো লুমব্রেরাস এবং বাংলাদেশী স্বনামধন্য লেখক আনিসূজ জামান সেমিনারে বক্তব্য প্রদান করেন।

Travelion – Mobile

আলোচনাকালে বক্তাগণ বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মধ্যেকার সাংস্কৃতিক বন্ধন আরো দৃঢ়করণ এবং মেক্সিকোর পাঠকের কাছে বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে সঠিকভাবে তুলে ধরার উপর গুরত্বারোপ করেন। সঞ্চালক ফাব্রিসিও রামিরেস অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। অন্যান্য বক্তাগণ দুই দেশের সাহিত্য অঙ্গনে সেতুবন্ধন তৈরিতে অনুবাদের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। সেইসাথে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর সাহিত্যকর্ম সরাসরি স্প্যানিশ হতে বাংলা এবং বাংলা হতে স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদের উপর জোর দেন যাতে করে পাঠকেরা উভয় দেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অবহিত হবার পাশাপাশি ভুল অনুবাদ থেকে উভয় দেশের সাহিত্যকে রক্ষা করতে পারেন । তাছাড়া ভৌগলিক দুরত্ব স্বত্বেও দুই দেশেই ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের এবং মুল্যবোধের মধ্যে অভিন্নতা রয়েছে বলে তারা মত প্রকাশ করেন ।

রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম তার বক্তব্যে সম্মানিত অতিথিদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি দুই দেশের সাহিত্য জগতের মধ্যে দূরত্ব নিরসনে যারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন তাদের কথা স্মরণ করেন এবং তিনি দুই দেশের, বিশেষত বাংলাদেশের সাহিত্যকর্ম স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদ করবার উপরে গুরুত্বারোপ করেন। অনুষ্ঠানে বিদগ্ধ বক্তাগণ আগামী এক বছরে পাঁচজন উদীয়মান বাংলাদেশী সাহিত্যিকের সাহিত্য অনুবাদ করবেন বলে অবহিত করেন ।

অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ দূতাবাস উক্ত জাতীয় যাদুঘরকে বাংলাদেশের একটি নকশী কাঁথা এবং মেক্সিকান জনপ্রিয় চিত্রশিল্পী মিসেস ইসাবেল আনিসের একটি চিত্রকর্ম উপহার হিসেবে প্রদান করে যা যাদুঘরের সংগ্রহশালায় প্রদর্শিত হবে।

সেমিনারের শুরুতে জাতীয় যাদুঘরের বিপণী বিতানে, রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম, যাদুঘরের পরিচালক আলেহান্দ্রা গোমেজ এবং দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীগণের উপস্থিতিতে “বাংলাদেশ কর্ণার”উদ্বোধন করেন, যা যাদুঘরের সংগ্রহ সমৃদ্ধকরণের পাশাপাশি দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বিনিময় করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। উক্ত কর্ণারটিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন হস্তশিল্প ও প্রকাশনা সমূহ প্রদর্শন ও বিক্রয় করা হবে এবং বিক্রয়কৃত অর্থ যাদুঘরের কল্যাণে ব্যয় করা হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!