শাহজালাল বিমানবন্দরে যান্ত্রিক ক্রুটিতে এয়ারএশিয়া

২৬ ঘণ্টার ভোগান্তিতে যাত্রীরা

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান্ত্রিক ত্রুটিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরগামী এয়ারএশিয়ার একটি ফ্লাইটের যাত্রীরা। বুধবার মধ্যরাতে অন্য একটি ফ্লাইটে এসব যাত্রীদের নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।

এতে মালয়েশিয়া প্রবাসী অনেক বাংলাদেশি নির্ধারিত সময়ে কর্মস্থলে যোগ দিতে পারেননি। আবার কানেক্টিং ফ্লাইট ধরতে পারেনি ব্রুনাইগামী বেশ কয়েক বাংলাদেশি শ্রমিক। এ নিয়ে বিমানবন্দরে যাত্রীদের সঙ্গে এয়ারএশিয়ার কর্মীদের ব্যাপক বাকবিতণ্ডা হলেও ২৪ ঘণ্টা পরও ফ্লাইটটি ছাড়তে পারেনি।

ফ্লাইট পরিবর্তন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাজেট এয়ারলাইন্সটির যাত্রীরা। যাত্রীদের হোটেলে রাখার ব্যবস্থা করলেও লাগেজ ফেরত না দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা ।

Travelion – Mobile

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এয়ারএশিয়ার এয়ারবাস-৩২০ এয়ারক্রাফটি ঢাকা থেকে ছেড়ে বুধবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৬টায় কুয়ালালামপুর পৌঁছানোর কথা ছিল। সেই অনুযায়ী যাত্রীদের বোডিং, চেকিং এবং ইমিগ্রেশন করানো হয়।

পরবর্তীতে যাত্রীদের এয়ারক্রাফটে উঠিয়ে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়। এরপর কেবিন ক্রুরা বলেন, বিমানবন্দরে কর্তৃপক্ষের সমস্যার কারণে তারা যেতে পারছেন না। রাত ১টা ৩৯ মিনিটে এক পর্যায়ে যাত্রীরা হৈ চৈ শুরু করলে পাইলট উড়োজাহাজে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে যাত্রীদের নেমে যেতে বলেন।

ফ্লাইটের যাত্রী মালয়েশিয়া প্রবাসী মো. সেলিম নামে বলেন,’প্লেনে উঠার অনেকক্ষণ বসেছিলাম। ছাড়তে দেরি হওয়াতে এয়ার হােস্টেজর কাছে জানতে চাইলে বলেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের ডকুমেন্টেশনের সমস্যা দেরি হচ্ছে, তাদের কোন সমস্যা না। ঘণ্টাখানেক পর পাইলট ঘোষণা দিলেন সবাইকে নামতে হবে, বিমানে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আজকে আর যাবে না। এরপর আমাদের বিমান থেকে নামিয়ে আনে।’

মালয়েশিয়া সরকারের হেলথ ট্রাভেল কাউন্সিলের আমন্ত্রণে মেডিক্যাল ট্যুরিজম বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে এই ফ্লাইটের যাত্রী য়েছিলেন কামরুন নাহার। তিনি বলেন, আজ ( বুধবার) আমাদের কুয়ালালামপুরে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল, সব ভণ্ডুল হয়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টা এক কাপড়ে হোটেলে বসে আছি। লাগেজ না দেওয়ায় দুর্বিসহ সময় কাটছে। আমি রিটার্ন টিকেট পেছাতে চেয়েছিলাম, এয়ারএশিয়ার পক্ষ থেকে আমার কাছে ১৮০০ রিঙ্গিট (৩৬ হাজার টাকা) দাবি করেছে।’

‘২৪ ঘণ্টা ফ্লাইট ডিলে হওয়াতে যাত্রীদের বাকবিতণ্ডায় এয়ারএশিয়া কর্মকর্তারা বলেন, কারা হোটেল, কারা বাসায় চলে যাবেন বলেন। আমরা হোটেল উঠি’,বলেন

ব্রুনাইতে প্রথমবার যাচ্ছিল কিছু শ্রমিক। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে তাদের। দেশটির রাজধানী বন্দর সেরি বেগাওয়ানের কানেক্টিং ফ্লাইট হারাতে হয়েছে তাদের। নতুন করে কানেক্টিং ফ্লাইট কিভাবে করবেন সে চিন্তায় তারা দিশেহারা, জানালেন তাদের কয়েকজন।

জানতে চাইলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার তৌহিদ-উল- আহসান বলেন,
বিমানবন্দরের কোনো সমস্যা ছিল না। এটা এয়ার এশিয়ার একে-৭০ ফ্লাইটটির যান্ত্রিক ত্রুটি সমস্যা ছিল। তাদের এয়ারক্রাফটি ৬ নম্বর পার্কিং বেতে ছিল। রাত ১টা ৩৯ মিনিটে পাইলট এটিসিকে জানায়, ইঞ্জিনের সমস্যা দেখা দেওয়ায় তারা টেক অফ করতে পারছে না। আমরা জানতে পেরেছি আজ রাত ২টায় এটি ছেড়ে যেতে পারে।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করেও এয়ারএশিয়ার বিমানবন্দর ও ঢাকা অফিসের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

২০১৫ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশে এয়ারএশিয়ার ফ্লাইট অপারেশন শুরু করে। এয়ারবাস ৩২০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করে মালয়শিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি। ঢাকা থেকে প্রথমে কুয়ালালামপুর হয়ে ১৬০টি গন্তব্যে যায় তারা। ঢাকা-কুয়ালালামপুর সপ্তাহে সাতটি ফ্লাইট পরিচালিত হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!