মেক্সিকোতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

জন্মকথা, ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, বাণিজ্য, অগ্রযাত্রা এবং কূটনীতিক সম্পর্ক তুলে ধরার মাধ্যমে মেক্সিকোতে উদযাপিত হয়েছে বাংলাদেশের ৫১ তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাংলাদেশ মেলা, কূটনীতিক সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ সপ্তাহ জুড়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে এই উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ দূতাবাসে ।

ধারাবাহিক কর্মসূচির সবশেষ বৃহস্পতিবার (৩১মার্চ) রাজধানী মেক্সিকো সিটির হোটেল শেরাটনে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কংগ্রেসের সদস্য (চেম্বার অব ডেপুটিস) এবং মেক্সিকো-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের প্রেসিডেন্ট রোজালিন্ডা ডমিনগুয়েজ ফ্লোরেস এমপি বিশেষ অতিথি ছিলেন।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মেক্সিকোর সিনেটর, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, মেক্সিকান ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

Travelion – Mobile

বিশেষ অতিথি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং লিঙ্গ ক্ষমতায়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করবার আশা ব্যক্ত করেন।

স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম সকল মুক্তিযোদ্ধা এবং জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং জাতির জন্য তাঁদের সর্বোচ্চ ত্যাগের কথা উল্লেখ করেন। সেইসাথে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের চলমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিত্র আগতদের সামনে তুলে ধরেন।

লিংকন পার্কে ‘বাংলাদেশ মেলা’-এর  আয়োজন করে দূতাবাস।
লিংকন পার্কে ‘বাংলাদেশ মেলা’-এর আয়োজন করে দূতাবা।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রখ্যাত কন্ঠশিল্পী ফাহমিদা নবীর মনোজ্ঞ সংগীত পরিবেশনা উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে। এছাড়াও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি চিত্রকর্ম, রপ্তানিযোগ্য পণ্য এবং হস্তশিল্প প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয় এবং অতিথিদের বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের লোগো সম্বলিত উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

এর আগে ২৬ ও ২৭ মার্চ রাজধানীর লিংকন পার্কের নেলসন ম্যান্ডেলা কালচারাল স্পেস অ্যান্ড এসপ্ল্যানেডে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য ‘বাংলাদেশ মেলা’-এর আয়োজন করে দূতাবাস।

মিগেল হিদালগোর মেয়রের দপ্তরের সহায়তায় আয়োজিত মেলায় ‘বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন’-এ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, হস্তশিল্প, দেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যসহ (সিরামিক, চামড়া,পাট, চা ইত্যাদি) বাণিজ্য সুবিধাদি ও পর্যটন সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যাদি উপস্থাপন করা হয়।

মেলায় প্রদর্শিত বাংলাদেশি বিখ্যাত শিল্পীদের ১০টি চিত্রকর্মের পাশাপাশি মেহেদি সজ্জা এবং মেক্সিকো সিটিতে বাংলাদেশি মালিকানাধীন ‘ঢাকা বিরিয়ানি’-এর ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। এ ছাড়া নিউইয়র্কপ্রবাসী বাংলাদেশি নৃত্য শিল্পী মাজেদ লোদি ও ফারজানা জাবিন জ্যোতির নৃত্য পরিবেশনায়ও দর্শনার্থীরা বিমোহিত হন।

 নিউইয়র্কপ্রবাসী বাংলাদেশি নৃত্য শিল্পী মাজেদ লোদি ও ফারজানা জাবিন জ্যোতির নৃত্য পরিবেশনায়ও দর্শনার্থীরা বিমোহিত হন।
নিউইয়র্কপ্রবাসী বাংলাদেশি নৃত্য শিল্পী মাজেদ লোদি ও ফারজানা জাবিন জ্যোতির নৃত্য পরিবেশনায়ও দর্শনার্থীরা বিমোহিত হন।

মেয়রের দপ্তরের দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সমন্বয়কারী লুর্ডেস পোজো পিয়েত্রা সান্তা এবং সমন্বয়ক ওমর লোপেজ হার্নান্দেজ দুই দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ মেলা’-এর উদ্বোধন করে।

মেয়র দপ্তের সাংস্কৃতিক সমন্বয়কারী এনেল নচেবুয়েনা, আজারবাইজান, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, নাইজেরিয়া, এল সালভাদর এবং ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত, মেক্সিকোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক, স্থানীয় সাংবাদিক, শিক্ষাবিদসহ তিন হাজারের বেশি দর্শনার্থী বাংলাদেশ মেলা ও প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম বলেন, “মেক্সিকোতে বাংলাদেশ একেবারেই নতুন, আমরা এখানে এসেছি মাত্র ৮ বছর। এখনও অনেকের জানা নেই আমাদের দেশ সর্ম্পকে । তাই আরও মেক্সিকানদের সাথে আমরা যোগাযোগ বাড়াতে চাই এবং আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের এবং খাবারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই। যাতে তারা বাংলাদেশকে জানে, জানে যে আমাদের একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। ”

২৬ মার্চ সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের ও বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অপর্ণের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা দিসবের কর্মসূচির সূচনা করেন আবিদা ইসলাম।

YouTube video

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!