‘মালয়েশিয়ান নারী বিয়ে করলে বিতাড়িত হবে বিদেশি কর্মী’

মালয়েশিয়ায় পিএলকেএসধারী (অস্থায়ী ওয়ার্ক পারমিট) বিদেশি কর্মীদের স্থানীয় নাগরিকদের (নারীদের) বিয়ে করা ইমিগ্রেশন আইনে নিষিদ্ধ। এই আইন না মানলে ওয়ার্ক পারমিট স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে এবং ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৬/৬৩ (অ্যাক্ট ১৫৫) অনুযায়ী মালেশিয়া থেকে বের করে দেওয়া হবে।

গত ৩ নভেম্বর বেরিতা হারিয়ানে এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ইমিগ্রেশন আইন ভঙ্গ করে কোনো পিএলকেএসধারী (শ্রমিক ভিসা) যদি স্থানীয় কোনো নারীকে বিয়ে করে তাহলে বিচ্ছেদ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

Travelion – Mobile

দেখা গেছে, বিদেশি কর্মীরা বিয়ে করে এবং একটা সময় পর মালয়েশিয়ায় স্ত্রী সন্তানদের রেখে নিজ দেশে ফিরে যায়। তখন এই স্ত্রী, সন্তানদের দেখার কেউ থাকে না।

দেশটির একটি এনজিওর তথ্যমতে, এ কারণে মালয়েশিয়ায় সিঙ্গেল মাদার এর সংখ্যা বেড়েছে, যা সামাজিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত।

পিএলকেস হলো মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে কাজ করতে আসা বিদেশি শ্রমিকদের একটি ওয়ার্ক পারমিট, যা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ১ থেকে ১০ বছরের জন্য ৭টি সেক্টরে দেওয়া হয়।

মুসলিম দম্পতির বিয়ে বৈধ হবে যদি বিয়ের আইনি শর্তগুলো পূরণ করা হয় এবং বিবাহবিচ্ছেদ শুধু তখনই ঘটবে যখন তালাকের আবেদন শরিয়া আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হবে।

অমুসলিম দম্পতিদের ক্ষেত্রে, সিভিল হাইকোর্টের মাধ্যমে বিয়ে নিবন্ধন ও বাতিল করতে হয়। পিএলকেসধারী যারা মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী বা কর্মরত তারা যদি মালেশিয়ায় স্থানীয় এমন কাউকে বিয়ে করতে চান, তবে তাদের আবেদন দূতাবাসে পাঠাতে হবে।

ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক দাতুক রুসলিন জুসোহ বলেছেন, স্থানীয়দের সঙ্গে পিএলকেএসধারীদের বিয়ের বিষয়ে রাজ্যের ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের সাথে আলেচনা করা হবে।

বিদেশির সঙ্গে স্থানীয়ের বিয়ের জন্য একটি নির্দেশিকা ও স্পষ্ট স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে। রাষ্ট্রীয়, ধর্মীয় ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষের এখতিয়ারের অধীনে এই বিয়ে সংক্রান্ত নির্ধারিত আইন লঙ্ঘন করলে ইমিগ্রেশন বিভাগ ব্যবস্থা নিতে পারে।

ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক বলেন, ‘অভিযোগ রয়েছে যে, স্থানীয় কারো সাথে বিদেশি, বিশেষ করে পিএলকেএস হোল্ডারদের বিয়ে সংক্রান্ত ইমিগ্রেশনের কঠোর শর্ত ও বিধিবিধান না মেনে সেগুলো উপেক্ষা করা হয়।’

‘আইন না মেনে বিয়ে হলে অভিবাসন আইন অনুযায়ী অবিলম্বে প্রদত্ত পারমিট বাতিল করে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে,’ বলেন তিনি।

সম্প্রতি, বেরিতা হারিয়ানে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশি পুরুষরা, বিশেষ করে পাকিস্তানিরা মালেশিয়ায় থাকার জন্য এবং ব্যবসা করার জন্য আইনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে স্থানীয় মালয় নারীদের বিয়ে করে। একটি ঘটনায় দেখা গেছে, এক পাকিস্তানি নাগরিক একজন বয়োজ্যেষ্ঠ মালয়েশিয়ান নারীকে বিয়ে করেছে এবং সে স্ত্রীর নামে ব্যবসা করেছে।

গত বছর, কেলান্টান ইমিগ্রেশন ডিরেক্টর আজহার আব্দুল হামিদ জানান, মালয়েশিয়ান স্ত্রীদের নাম ব্যবহার করে ব্যবসার অন্য আবেদন করা বিদেশিদের ১৫টি আবেদন বাতিল করা হয়েছিল।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বেরিতা হারিয়ানের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় নারীদের বিয়ে করা পাকিস্তানি পুরুষদের একটি কৌশল। এর মাধ্যমে তারা ব্যবসা পরিচালনার জন্য শহরের উপকন্ঠে অবস্থান করে। যেখানে কর্তৃপক্ষের নজরদারি খুব কম।

রুসলিন বলেছেন, বিদেশি যারা স্থানীয় নাগরিকদের বিয়ে করতে চান তাদের নিয়োগকর্তার তথ্যসহ একটি বিশেষ ফরম পূরণ করতে হবে। তা না হলে ওই বিয়ে ‘অবৈধ’ বলে বিবেচিত হবে।

পরিচালক বলেছেন, ‘বৈধভাবে মালয়েশিযায় বিদেশি শ্রমিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয় শুধু ভিসায় উল্লেখিত নির্ধারিত সেক্টরে কাজ করার জন্য বিয়ে করার জন্য নয়।’

প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!