বিশ্বের নবীনতম প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন, নতুন রেকর্ড!

বিশ্বের নবীনতম প্রধানমন্ত্রীর রেকর্ডটি করতে যাচ্ছে ফিনল্যান্ড। মঙ্গলবার শপথ নেওয়ার সময় এ রেকর্ড গড়ছেন দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ৩৪ বছরের সানা মারিন। ফিনল্যান্ডের ইতিহাসেও নবীনতম প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মারিন । আগে তিনি দেশের পরিবহণ মন্ত্রণালয় সামলাতেন।

এতদিন বিশ্বের নবীনতম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইউক্রেনের ওলেক্সি হঙ্কারুক। তবে ৩৫ বছর বয়সী এই প্রধানমন্ত্রীকে তারুণ্যে ছাপিয়ে গেলেন ফিনল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী।

শপথ মঙ্গলবার হলেও নির্বাচিত হয়েছেন সে হিসেবে এই মুহূর্তে বিশ্বের নবীনতম রাষ্ট্রনেতা হলেন ফিনল্যান্ডের মারিন, তাঁর পরেই রয়েছেন ইউক্রেনের ওলেক্সি হঙ্কারুক

Travelion – Mobile

উত্তরমেরুর কাছে অবস্থিত ছোট্ট দেশ ফিনল্যান্ডকে প্রথমবিশ্বের দেশ হিসাবে ধরা হয়। এই দেশের মানুষের স্বাচ্ছন্দ্য ইউরোপের অনেক দেশকেও অবাক করে দেয়। স্ক্যান্ডেনেভিয়ার এই দেশটিতে জন সংখ্যা কম, সমৃদ্ধি আকাশছোঁয়া।

সম্প্রতি ফিনল্যান্ডে ডাকধর্মঘটের জন্য প্রধানমন্ত্রী সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটের অ্যানট্টি রিনের উপর থেকে সমর্থন তুলে নেয় জোটশরিক সেন্ট্রাল পার্টি। ফলে প্রধানমন্ত্রী পদ খালি হয়ে যায়।

বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী রিনের স্থলাভিষিক্ত কে হবেন, তা নিয়ে রবিবার ভোটাভুটি হয় ফিনল্যান্ড সংসদে। সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটরা সানা মারিনকে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে সানা মারিন সাংবাদিকদের বলেন, “আস্থা ফেরানোর জন্য আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। আমি কোনও দিনই আমার বয়স ও লিঙ্গ নিয়ে ভাবিত নই। আমি কেন রাজনীতিতে এসেছি সেই কারণটি নিয়েই আমি চিন্তা করি এবং আস্থাভোটে আমি কেন জয়ী হয়েছি সেই কারণটা নিয়েও আমি ভাবছি।”

সানা মিরেলা মারিনের
সানা মিরেলা মারিনের

দেশে মন্দা ভাব কাটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল মারিনের দল, কড়া পদক্ষেপ করে দেশের অর্থনীতির হাল ফেরানোর শর্তেই তারা সেন্ট্রাল পার্টির সমর্থন পেয়েছিল। পাঁচ দলের জোট সরকার গড়েছিল ফিনল্যান্ডে। মারিন বলেন, “আমাদের সরকারের প্রতিশ্রুতি কী, সে কথা সকলেই জানেন।”

৭০০ জন ডাককর্মীর বেতন কমিয়ে দেওয়া নিয়ে প্রবল রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় মধ্যে পদত্যাগ করতে হয় প্রধানমন্ত্রী রিনেকে। ব্যাপক ভাবে দর্মঘট চলতে থাকায় ডাকব্যবস্থায় সরকার যে সংস্কার করেছিল, সেই সিদ্ধান্তও প্রত্যাহার করে নিতে হয়। তার জেরে গত সোমবারই সেন্ট্রাল পার্টি ঘোষণা করে দেয়, প্রধানমন্ত্রী হিসাবে আস্থা হারিয়েছেন রিনে।

সমকামি অভিভাবকের সন্তান সানা মিরেলা মারিনের জন্ম ১৯৮৫ সালের ১৬ নভেম্বর ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি শহরে। তিনি ২০১৭ সালে টাম্পেরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রশাসনিক বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

মারিন ২০১২ সালে টাম্পেরের সিটি কাউন্সিলের নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন সিটি কাউন্সিলের চেয়ারপারসন । ২০১৩ সালে তিনি সিটি কাউন্সিলের পুনর্নির্বাচিত হন। তিনি টাম্পেরি প্রাদেশিক পরিষদেরও সদস্য ছিলেন।

২০১৪ সালে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির দ্বিতীয় উপ-চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয় সানা মারিন।

২০১৫ সালে তিনি পিরকানমার নির্বাচনী জেলা থেকে ফিনল্যান্ডের সংসদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। চার বছর পরে চলতি বছরে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৬ জুন তিনি পরিবহন ও যোগাযোগমন্ত্রী হন।

দীর্ঘদিনের সঙ্গী মার্কাস রিক্কানেনের সাথে তার একটি সন্তান রয়েছে।

মঙ্গলবার শপথ নেওয়ার পরে বিশ্বের সবচেয়ে নবীন নেত্রী রাষ্ট্রপ্রধানের রেকর্ড করা সানা মারিনকে প্রমাণ করতে হবে, দেশের মানুষ তাঁর উপরে আস্থা রেখে ভুল করেননি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!