বিশেষ ফ্লাইটে পর্তুগালে ফিরলেন ২২০ বাংলাদেশি
নানা ধরনের বাধা আর জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত ২২০ জন প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে বাংলাদেশ বিমানের ড্রীমলাইনের ৭৮৭ এর (বিজি-৪১২৯) বিশেষ ফ্লাইটটি লিসবনের হামবের্তো ডেলগাডা আন্তরজাতীক বিমান বন্দরে অবতরণ করে।
ফিরে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিমানবন্দরে স্বাগত জানান পর্তুগালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রুহুল আলম সিদ্দিকী ও তাঁর সহধর্মিণী। এ সময় দূতাবাসের তৃতীয় সচিব ও দূতালয় প্রধান আবদুল্লাহ আল রাজি ও অন্য কর্মকর্তারা, স্বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতারাসহ প্রবাসী সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং ঢাকা এয়ারপোর্টে যাত্রীদের অনাকাঙ্ক্ষিত ভোগান্তির জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করেন।
করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনায় পর্তুগালের সঙ্গে বহিঃবিশ্বের বিমানসহ যাএীবাহি সকল ধরনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে অনেক প্রবাসী ছুটিতে বাংলাদেশ গিয়ে আটকে পড়েন, যাদের মধ্যে অনেকের রেসিডেন্ট পারমিটেরর মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এমনকি অনেক প্রবাসীর পারিবারিক ভিসার মেয়াদও শেষ পর্যায়ে চলে আসে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন এসব প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
এই বাস্তবতায় দেশে আটকেপড়া প্রবাসীদের পর্তুগালে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে এবং কয়েকজন প্রবাসীর সহযোগিতায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়।
২৪ জুন বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় ঢাকা থেকে ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও লিসবন বিমানবন্দরে অবতরনের অনুমোদন না পাওয়ায় রওনা দেওয়া যায়নি। এই নানা জটিলতায় বারবার সময় পরিবর্তন করে অবশেষে ২৫ জুন মধ্য রাত ২টায় বাংলাদেশের হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রাজধানী লিসবনের উদ্দেশে উড়াল দেয় বিশেষ ফ্লাইটটি।
আগের খবর : বাংলাদেশে এমিরেটসের ফ্লাইট চলাচল শুরু
লিসবন বাংলাদেশ দূতাবাসের তৃতীয় সচিব এবং দূতালয় প্রধান আবদুল্লাহ আল রাজি ফ্লাইটের বিলম্ব নিয়ে বলেন, ‘এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য আমরা দুঃখিত। তবে পুরো প্রক্রিয়ার শুরুতেই আমরা পর্তুগালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কূটনৈতিকভাবে আবেদন করি এবং তারা তাদের ইমিগ্রেশনেরকাছে যাত্রীদের ভিসা ও রেসিডেন্ট পারমিট যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠায়। সেখান থেকে সব যাচাই-বাছাই হওয়ার পর এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত সতর্কতা নিশ্চিত হওয়ার পর ফ্লাইট সংশ্লিষ্ট সব বিষয় অনুমোদন করে।”
লিসবনের অনুমতির বিলম্বে সারাদিন খুব কষ্টের মধ্যে পার করলেও রাতের মধ্যেই বিমানে চড়ে ঢাকা ছাড়তে পেরে প্রবাসিদের সব কষ্ট মুছে যায়”-তিনি যোগ করেন।
জানা গেছে, ২২৫ জন প্রবাসী ফেরার কথা থাকলেও ৫ জন টিকিট কেনার পরও ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়াসহ নানা জটিলতায় বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়তে পারেননি।
সব প্রতিকূলতার অবসান করে পর্তুগালে ফিরতে পেরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন এবং লিসবন ও বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশ দূতাবাস, বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।