বালিতে নিষিদ্ধ হল শূকরের জন্য উড়োজাহাজের খাবার

রাতের খাবারে উড়োজাহাজের মজাদার সব উচ্ছিষ্ট খাবার উপভোগ করত ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের শূকরগুলো। তবে এখন থেকে তাদের সেই খাবার আর জুটবে না। সম্প্রতি আফ্রিকাতে সোয়াইন ফ্লু ছড়িয়ে পড়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বালি কর্তৃপক্ষ।

কিছু ফ্লাইট রয়েছে যেখানে দেয়া পনিরের স্যান্ডউইচ বা বার্গারের মত মজাদার খাবারগুলো কোন ক্ষুদার্থ শূকরের জন্য তুলে রাখার কথা ভাবতেও পারেনা কেউ। তবে ইন্দোনেশয়ার বালি দ্বীপে থাকা শূকরেরা এতদিন ধরে এমন সব মজাদার খাবারই উপভোগ করে আসছিল।

তবে আফ্রিকাতে সোয়াইন ফ্লুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ায় এই শূকরগুলি আর কোনও এয়ারলাইন স্ন্যাকস খেতে পারবে না। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উড়োজাহাজের উচ্ছিষ্ট খাবার থেকে এই ভাইরাস সংক্রামিত হতে পারে। এই খাবার মানুষের জন্য বিপজ্জনক না হলেও শুকরের জন্য প্রাণঘাতি হতে পারে।

Travelion – Mobile

সেভেন নিউজের তথ্যমতে বালি সরকার, খামারীদের এসব খাবার শূকরদের না দেওয়ার জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বিশেষ করে যে দেশগুলিতে সোয়াইন ফ্লু’র প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে সেসব দেশ থেকে আসা উড়োজাহাজের খাবারের ব্যাপারে তাদের সতর্ক করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, “উড়োজাহাজ থেকে অবশিষ্ট খাবার শুয়োরকে দেওয়া উচিত নয়। এসব ধ্বংস করা উচিত”।

আফ্রিকাতে সোয়াইন ফ্লু’র কারণে প্রতিবেশি অঞ্চল উত্তর সুমাত্রার প্রায় ৩৪,০০০ শূকর মারা গেছে। এ কারণে বালিতে থাকা ৭ লাখ ৬০ হাজার শূকরের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কোনও ঝুঁকি নিতে চায়না। শূকর খামারে উড়োজাহাজগুলোর খাদ্য বিতরণে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি যাত্রীদের শুকরের জন্য আনা কোন খাবার বা বস্তুর উপরও কড়াকড়ি আরোপ করেছে শুল্ক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের
ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের

শত শত এয়ারলাইন ভ্রমণকারীদের খাওয়ানো যে কোনও বিমানসংস্থার জন্য একটি কঠিন কাজ। তারা সাধারণত তাদের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাবার ফ্লাইটে রাখে, যাতে যাত্রীদের পছন্দের ভিত্তিতে পরিবেশন করা যায়।

ইকোনমি যাত্রীদের ক্ষেত্রে খুব বেশি খাবার উচ্ছিষ্ট না থাকলেও বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের জন্য সে হিসেব ভিন্ন। কারণ এখানে প্রয়োজনের চাইতেও কয়েকরকম বেশি খাবার সংগ্রহে রাখতে হয়। এ কারণে বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের থেকে অনেক বেশি খাবার উচ্ছিষ্ট হিসেবে পাওয়া যায়, যা ভাবলে একটু আফসোসই করতে হয়।

দুর্ভাগ্যক্রমে, বিমান সংস্থাগুলি এক্ষেত্রে বেশ অসুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। নষ্ট হওয়া খাবার তারা অন্য ফ্লাইটে যেমন ব্যবহার করতে পারে না তেমনি খাবার প্রস্তুত করা থেকে পরিবেশন এমনকি তা আবর্জনায় ফেলার ক্ষেত্রেও রয়েছে নির্ধারিত সময়ের কিছু নিয়মাবলী। এই কারণে, কিছু এয়ারলাইনস এবং বিমানবন্দর এসব খাবার গছিয়ে দিতে স্থানীয় শূকর চাষীদের সাথে অংশীদারি চুক্তি করে।

নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত সারা বিশ্বের শূকরদের নানা ধরনের মনুষ্য বর্জিত খাবার খাওয়ানোর চল ছিল। সে সময় যে কোনও স্কুলে শিশুদের ফেলে দেওয়া খাবার পরে স্থানীয় শূকর চাষীদের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হত। তবে ১৯৯৬ সালে বিএসই (BSE crisis) সংকটের পর থেকে শূকরদের এসব কম মানের পচা খাদ্য খাওয়ানোর চল বন্ধ হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!