বাংলাদেশে বেড়াতে আসা আমিরাতি ব্যবসায়ী পুলিশের খপ্পরে!

সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ী আলী আহামেদ তার প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন কর্মরত দুই প্রবাসী বাংলাদেশির সাথে এসেছিলেন বাংলাদেশের গ্রামীণ সৌন্দর্য দেখতে। তবে তাকে দেখতে হলো বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় সদস্যের কুৎশিত চেহারা!

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বেড়াতে আসা আরব আমিরাতের ওই নাগরিক এবং স্থানীয় দুই দুবাইপ্রবাসীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে টাকাসহ বিমানের টিকেট হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে কোম্পানীগঞ্জ থানার দুই সাব ইন্সপেক্টেরের (এসআই) বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে নোয়াখালীর পুলিশ সুপারে কাছে অভিযোগ জানানোর পর ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

Travelion – Mobile

ভুক্তভোগীরা জানান, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের খাঁন পাড়া এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা বেগম তার বড় ভাই দেলোয়ার আনসার ও স্বামীকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের শারজা সিটিতে ওই দেশের নাগরিক আলী আহামেদের (৬০) ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আসছেন।

ফাতেমা বেগম ও তার স্বজন শহিদুল ইসলাম জানান, তারা চলতি মাসের প্রথম দিকে দেশে আসার সময় তাদের কফিল (মালিক) আলী আহামেদও বাংলাদেশ ও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সে অনুযায়ী গত ৩ নভেম্বর ফাতেমা বেগম ও তার পরিবারের সঙ্গে আলী আহামেদ কোম্পানীগঞ্জে বেড়াতে আসেন। সেখানে তারা একটি বাড়ি ভাড়া নেন।

ফাতেমা বেগম অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ফাতেমা বেগমের বাসায় গিয়ে তারা অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন বলে আলী আহামেদের লাল পাসপোর্ট ও তাদের বিমানের ফিরতি টিকেট দেখতে চান কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই জাকির হোসেন।

এরপর এসআই জাকির তাদের বিমানের টিকেট নিয়ে যান এবং থানায় দেখা করতে বলেন। এ ঘটনার ৮ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ফাতেমা বেগমের বাসায় যান কোম্পানীগঞ্জ থানার আরেক এসআই শিশির।

ফাতেমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, এসআই শিশির ঘরে ঢুকে আরব আমিরাতের নাগরিক আলী আহামেদ ও তাকে জড়িয়ে অশালীন কথা বলেন। এক পর্যায়ে তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তাদের গ্রেপ্তারের হুমকি দেন। পরে শিশিরকে ১২ হাজার টাকা দিলে তিনি চলে যান।

এরপর বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে জানালে তিনি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কাজী মো. আবদুর রহিমকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণিত হলে দোষী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ঔ আমিরাতি নাগরিকের নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

ফাতেমা বেগম ও শহিদুল ইসলাম জানান, পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দেওয়ার কারণে এসআই শিশির ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। শুক্রবার সকাল থেকে দফায় দফায় ফাতেমা বেগমের বাড়িতে লোক পাঠিয়ে এবং মুঠোফোনে তাদের অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেন।

তা না হলে ফাতেমা বেগম ও তার স্বজনদের মাদক এবং ডাকাতি মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এই অবস্থায় বিদেশি এই নাগরিক নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন তারা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!