বাংলাদেশি প্রকৌশলী নিয়োগে আগ্রহী মালয়েশিয়ার পেনাংয়ের শিল্পোদ্যাক্তারা

মালয়েশিয়ার পেনাং রাজ্যের শিল্প উদ্যাক্তারা বাংলাদেশ থেকে প্রকৌশলী নিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। উত্তর-পশ্চিমের দ্বীপরাজ্যটির দুটি প্রধান ব্যবসায়িক সংগঠন পেনাং চাইনিজ চেম্বার অব কর্মাস (পিসিসিসি) এবং পেনাংয়ের ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্স (এফএমএম) এর সঙ্গে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ারের বৈঠকে এই আগ্রহের কথা ওঠে আসে।

উভয় ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতারা বাংলাদেশ থেকে প্রকৌশলী ও সাধারণ কর্মী নিয়োগে তাদের আগ্রহ ব্যক্ত করেন।

পেনাং চাইনিজ চেম্বার অব কর্মাসের (পিসিসিসি) সভায় সংগঠনের প্রেসিডেন্ট দাতো সেরি হং ইয়েম ওয়াহ বলেন, পেনাং রাজ্য মূলতঃ ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সেক্টর নির্ভর। কোভিড পরবর্তী বিশ্বে এ সেক্টর দ্রুত সম্প্রসারণমান হলেও দক্ষ জনবল, বিশেষ করে প্রকৌশলী সংকটের কারণে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার আশংকা রয়েছে ।

Travelion – Mobile

পেনাং রাজ্যে প্রকৌশলী নিয়োগে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, পেনাং রাজ্য সরকার পেনাংয়ে ২০টির মতো মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করছে। এ সব প্রজেক্টেও প্রকৌশলীর চাহিদা ব্যাপকযা বাংলাদেশি প্রকৌশলীর মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব।

পেনাংয়ের ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্স (এফএমএম) )- এর সভায় সংগঠনের চেয়ারম্যান দাতো জিমি সি. কে. অং বাংলাদেশের শ্রমিকদের কর্মঠ ও নিষ্ঠাবান বলে উল্লেখ বলেন, পেনাংয়ের শিল্প প্রতিষ্ঠানে দক্ষ ও অদক্ষ উভয় প্রকারের বিদেশি শ্রমিকের অভাব রয়েছে। এই রাজ্যের শিল্প উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রকৌশলীর পাশাপাশি অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগের বিষয়েও আমরা আগ্রহী।

মালয়েশিয়ার পেনাংয়ের ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্সের (এফএমএম) নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার। ছবি: সংগৃহীত
মালয়েশিয়ার পেনাংয়ের ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্সের (এফএমএম) নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার। ছবি: সংগৃহীত

হাইকমিনার মো. গোলাম সারোয়ার দুই সংগঠনের আগ্রহ ও প্রস্তাবণা স্বাগত জানিয়ে মালয়েশিয়ার চাহিদা অনুযায়ী সকল পেশায় দক্ষতাসম্পন্ন যে কোন সংখ্যক সাধারণ কর্মী ও প্রকৌশলী সরবরাহে বাংলাদেশের সদিচ্ছা ও সক্ষমতার বিষয়ে পেনাংয়ের শিল্পমালিকদের আশ্বস্ত করেন।

হাইকমিশনার উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশে অর্ধশত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও শতাধিক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং কারিগরী কলেজ থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার উন্নত কারিগরী জ্ঞানসম্পন্ন ও মেধাবী প্রকৌশলী চাকুরীর জন্য তৈরি হচ্ছে।

তিনি মালয়েশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয় যোগ্যতাসম্পন্ন ও মেধাবী গ্রাজুয়েটদের মালয়েশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের বিষয়েও হাইকমিশনের সহায়তার বিষয়ে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।

বৈঠকগুলোতে হাইকমিশনার পেনাংয়ের ব্যবসায়িক নেতাদের কাছে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিত্র এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের নেওয়া কর্মসূচির তুলে ধরে পেনাংয়ের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের সুযোগ গ্রহণেরও আহ্বান জানান।

মো. গোলাম সারোয়ার বলেন যে, যোগাযোগের প্রবেশগাম্যতা নিশ্চিতে আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ, বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ সম্বলিত ১০০টি ইকনোমিক জোন ও ২৮টি হাইটেক পার্ক স্থাপন এবং বিনিয়োগবান্ধব নীতিকৌশলের কারণে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আজ পরিচিতি লাভ করেছে।

বৈঠকগুলোতে সংগঠন দুটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক সংগঠনের শীর্ষ নেতারা এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সেলর (বাণিজ্যিক) মো. রাজিবুল আহসান ও পেনাংয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের অনারারি কনসাল দাতো শেখ ইসমাইল উপস্থিত ছিলেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!