বন্ধু তুমি, শত্রু তুমি!
বন্ধুর বিদেশ যাওয়া আটকাতে বিমানবন্দরে বোমা হুমকি
হিংসা এমন একটি বিষয় যা মানুষের সৎ কর্ম নষ্ট করে, অপরাধী করতে বাধ্য করে। তারই আরেকটা দৃষ্টান্ত দিল ভারতের হায়দরাবাদের এক যুবক। বিমানবন্দরে বোমা হুমকির ইমেল পাঠিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি। প্রতিপক্ষ কোন শত্রু নয় খোদ নিজের শৈশবের বন্ধুর প্রতি হিংসার বশে এমন অপরাধ করে বসে যুবকটি। বন্ধুকে কানাডা যাওয়া থেকে বিরত রাখতেই এমন প্রচেষ্টা তার। জানান দেন, ‘বন্ধু তুমি, শত্রু তুমি !
বুধবার হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতারণামূলক বোমা হুমকির ইমেল প্রেরণের জন্য কাতরাজু শাহশীকান্ত নামের ঐ যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ।
মঙ্গলবার বিমানবন্দরের গ্রাহক সহায়তা বিভাগে একটি ইমেল পেয়েছিল, যেখানে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি দাবি করেছেন যে তিনি বুধবার সেখানে বোমা বিস্ফোরণ করবেন। দুপুর আড়াইটায় ‘[email protected]’ আইডি থেকে পাঠানো মেলটিতে লেখা ছিল, “আমি আগামীকাল [বুধবার] বিমানবন্দরে বোমা ফাটিয়ে দিতে চাই।”
মেইলটি পাওয়ার পরে তাত্ক্ষণিকভাবে অনুসন্ধান অভিযান শুরু করে বিমানবন্দর নিরাপত্তা বিভাগ। তবে, তারা কিছুই খুঁজে পায় নি এবং মেলটি ‘ভূয়া’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়। পরে হুমকির বিষয়ে আরও তদন্তের জন্য পুলিশী অভিযোগ দায়ের করে বিমানবন্দর কর্র্তপক্ষ।
তদন্তে নামে হায়দরাবাদ মেট্রা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট। তদন্তে বেরিয়ে আসে, বন্ধু কানাডায় যাত্রা আটকাতে হুমকি পাঠিয়েছিলেন ওয়ারঙ্গালের বাসিন্দা কাতরাজু শাহশীকান্ত। ২৪ বছর বয়েসী এই যুবক ইর্ষান্বিত হয়ে এই কান্ড করেন। শৈশবের বন্ধু সাইরাম কালেরুর ভিসা পেয়ে কানাডা যাচ্ছে, অথচ তিনি এখনও বেকার- এই হিংসায় ইমেলে “বোমা বিস্ফোরণ” পরিকল্পনাটি তৈরি করেন তিনি।
অভিযুক্ত শাহশীকান্ত হায়দরাবাদের একটি ছেলে হোটেলে থাকে আর উপাল হায়দরাবাদের বাসিন্দা সাইরাম কালেরুর সাথে তার বন্ধুত্ব শৈশব থেকে।
বন্ধু সায়রাম সম্প্রতি উচ্চতর পড়াশোনার জন্য কানাডার ভিসা পান । তা সহ্য হয়নি শাহশীকান্তের । প্রথমে বন্ধু সায়রামের ভিসা বাতিল করার জন্য তিনি কানাডিয়ান ইমিগ্রেশনে একটি জাল ইমেল লিখেছিলেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
মঙ্গলবার, সায়রাম কানাডা যাচ্ছে জানতে পেরে হিংসুক শশীকান্ত হায়দরাবাদ বিমানবন্দরে বোমার হুমকি প্রেরণের জন্য ব্যবহার করেন তাঁর বন্ধুর ইমেলটিই ।
শমছাবাদ থানায় মামলা দায়েরের একদিন পরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করে শশীকান্তকে। বেসামরিক বিমান চলাচল আইনসহ ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) বিভিন্ন ধারায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।