গুজব ও মিথ্যা রটনাকারীদের সন্ধানে পুলিশের সাইবার টিম

করোনার বিস্তার রোধে এবং সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কেবলমাত্র দেশ ও জাতির কল্যাণ নিশ্চিত করতে শুরু থেকেই বাংলাদেশ পুলিশের দুই লাখেরও বেশি সদস্য বিভিন্ন প্লাটফর্মে কাজ করে যাচ্ছে। এ অবস্থায় পুলিশের বিরুদ্ধে গুজব ও মিথ্যা না ছড়িয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।

২০১১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা দেশব্যাপী অবরোধে, অগ্নিসংযোগ ও হামলার সময় তোলা পুলিশের একটি ছবিকে এডিট করে এখনকার ছবি উল্লেখ করে নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া এবং অতীতে বিভিন্ন সময়ে মহাসড়কে রিক্সা, ভ্যান ও ব্যাটারি চালিত রিক্সার বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশের অভিযানের ভিডিওকে বর্তমান সময়ের ঘটনা দেখিয়ে ভাইরাল করার প্রেক্ষিতে পুলিশ সদর দপ্তর এ আহ্বান জানাল।

সোমবার (৩০ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) মো.সোহেল রানা স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের সাধারণ মানুষ এসব পোস্ট বিশ্বাস করছে এবং পুলিশের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে এগুলো ছড়িয়ে দিচ্ছে।

Travelion – Mobile

বিবৃতিতে বলা হয়, করোনার বিস্তাররোধে সারাদেশে লক্ষ কোটি মানুষের সঙ্গে পুলিশের প্রতিদিন ইন্টারঅ্যাকশন বা সাক্ষাত হচ্ছে। এর মধ্যে গুটিকয়েক ঘটনা বা ইন্টারঅ্যাকশনের সময় পুলিশের কতিপয় সদস্যের বিরুদ্ধে অনাকাঙ্ক্ষিত বলপ্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়গুলো নিউজ মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য যেকোনো উপায়ে পুলিশ সদর দফতরের দৃষ্টিতে আসা মাত্রই মাঠ পর্যায়ে ইউনিট কমান্ডারদের তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সম্মানিত ইন্সপেক্টর জেনারেল ব্যক্তিগতভাবে ভিডিও বার্তায় এবং মোবাইল ফোনে অপারেশনাল সব কমান্ডারের সঙ্গে কথা বলেছেন। অপারেশনাল ইউনিট কমান্ডাররাও মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তাদেরকে একইভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন। ফলে একই ধরণের ঘটনার আর কোনো পুনরাবৃত্তি হয়েছে বলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের দৃষ্টিতে পড়েনি কিংবা জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য কোনো প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় এমন কোনো সংবাদ আমাদের চোখে পড়েনি।

মহাসড়কে রিক্সা, ভ্যান ও ব্যাটারি চালিত রিক্সার বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশের অভিযানের পুরানো ভিডিওকে বর্তমান সময়ের ঘটনা দেখিয়ে প্রচার করা হচ্ছে।
মহাসড়কে রিক্সা, ভ্যান ও ব্যাটারি চালিত রিক্সার বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশের অভিযানের পুরানো ভিডিওকে বর্তমান সময়ের ঘটনা দেখিয়ে প্রচার করা হচ্ছে।

বার্তা আরও বলা হয়, তারপরও কিছু নিউজ মিডিয়ায় নতুন করে পুরাতন অভিযোগগুলো নিয়ে এমনভাবে নিউজ ছাপা হচ্ছে যাতে মনে হচ্ছে, এখনও বলপ্রয়োগ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া একটি দুষ্টুচক্র অতীতের বিভিন্ন সময়ের পুরাতন ছবি ও ভিডিও যেগুলোর বিষয়ে তদন্ত করে সেই সময়েই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল তা এডিট করে বা কৌশলে ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন করে পোস্ট দিচ্ছেন।

এমনকি ২০১১ সালে পুলিশ কর্তৃক বিএনপি-জামাতের অগ্নি-সন্ত্রাস দমনের ছবিও ফটোশপ করে ব্যবহার করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ সেগুলো সহজেই বিশ্বাস করে তার বিপরীতে তাদের উষ্মা প্রকাশ করছেন এবং তা শেয়ার করছেন।

এ ধরণের মিথ্যাচারের ফলে পুলিশের প্রায় শতভাগ সদস্য যারা দেশ ও জাতির এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ সৎকারসহ নানা উপায়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে চলেছেন, তারা মানসিকভাবে ডিমোটিভেটেড হচ্ছেন। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে গুজব ছড়ানো ও মিথ্যাচার বন্ধ করে পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে বিনীত অনুরোধ করা হচ্ছে।

অন্যথায় গুজব ছড়িয়ে ও মিথ্যাচার করে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়ালে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাইবার টিমগুলো গুজব ও মিথ্যা রটনাকারীদের খুঁজে বের করতে কাজ করছে বলেও বার্তায় উল্লেখ করা হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!