করোনা মহামারিতে শিশুদের ঝুঁকি, করণীয়
আমাদের মধ্যে একটি বিশ্বাস বেশ জনপ্রিয় হয়েছে যে শিশুরা কোভিড ১৯ বা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হবে না। এটি আসলে নির্ভরযোগ্য কোন সত্য নয়। কারণ বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানা গেছে, নানা বয়সের শিশুরা নানা অনুপাতে সংক্রমিত হয়েছে। ওমানে নবজাতকসহ বিভিন্ন বয়সি শিশুদের আক্রান্তের সংবাদ বিচলিত করেছে ওমানবাসীকে।
ওমানের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরে শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. জুমানা বিনতে আহমেদ আল-আবদাওয়ানি টাইমস অব ওমানের সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য দিয়েছেন।
তিনি পানি ও সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, দরজার হাতল ও ঘরোয়া বিভিন্ন বস্তু পরিস্কার রাখার পাশপাশি শিশুদের খেলনাও জীবাণুমুক্ত ও পরিস্কার রাখার উপর জোর দিয়েছেন।
এমনকি তিনি এক্ষেত্রে কেবলমাত্র বয়স্কদের ক্ষেত্রেই নয় শিশুদের ক্ষেত্রেও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “শিশুদের ক্ষেত্রে কেউ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সাধারণভাবে প্রচুর পানি পান করা ছাড়াও অন্যান্য ধরনের তরল বেশি বেশি গ্রহণ করতে হবে। ”
যদিও এই চিকিৎসক গবেষণার ফলাফল যাচাই করে এই ধারণাকে সমর্থন করেছেন যে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় কোভিড-১৯ অল্পবয়সীদের কম আক্রান্ত করে।
তার মতে, এর কারণ হল, শিশুদের ফুসফুসের অ্যালভিওলিতে রিসেপ্টর-এর অভাব থাকে, যেটি ভাইরাসকে শিশুদের শরীরে আক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে দেয়। এছাড়াও শিশুদের ফুসফুসের কোষের উপরিভাগে প্রোটিনের তারতম্য থাকে বয়স্কদের সাথে, এই প্রোটিনকে ব্যবহার করে একজন প্রাপ্ত বয়স্কের শরীরে ভাইরাস ফুসফুসের কোষগুলিতে প্রবেশ করে এবং নিজেদের পুনরুৎপাদন করতে পারে।
ডা. জুমানা উল্লেখ করেছেন যে এই ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রয়েছে। তবে , সংক্রামিত শিশুদের যত্নের ক্ষেত্রে মা কিংবা পরিবারের অন্য সদস্য সংক্রমণ এড়াতে গ্লাভস এবং ফেস মাস্ক পড়ে শিশুটিকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করার উপর জোর দিয়েছেন এই চিকিৎসক। প্রতিবারই তাদের জল এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং আইসোলেশন কক্ষের সব এলাকা জীবাণুমুক্ত করার জন্য নির্দেশিকাও দিয়েছেন তিনি।
শিশু যদি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আইসোলেশনে থাকে, তাহলে মেডিকেল টিম তাকে পরিচ্ছন্ন করার জন্য নিয়োজিত থাকবে এবং তার অভিভাবকদের সব ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে পরিচিত করবে।
ডা. জুমানা এ সময় আক্রান্ত শিশুর টীকা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং এই সময় এটি মোটেই স্থগিত করা উচিত নয় বলে জানান তিনি। তার মতে, এই টীকা শিশুদের অনেক রোগের হাত থেকে রক্ষা করে।
একই সাথে এই চিকিৎসক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বেশ কিছু নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা যেমন, হাসপাতালের অন্যান্য এলাকা থেকে বেশ কিছুটা দূরে টিকা দেওয়া জায়গাগুলো পৃথকিকরণ, ভিজিটরদের পরিদর্শন সময় সীমিত করা, সেইসাথে ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য নার্সদের দায়িত্ব দেয়ার উপর জোর দিয়েছেন।