ওমানে বাংলাদেশ দূতাবাসের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন

ওমানে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ‘মুজিব বর্ষ’ ও মহান স্বাধীনতার ‘সুবর্ণজয়ন্তী’ উদযাপন করেছে বাংলাদেশে দূতাবাস। দেশটির সুলতান হাইতাম বিন তারিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে প্রেরিত এক অভিনন্দনবার্তায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

শুক্রবার (২৬ মার্চ) প্রত্যুষে রাজধানী মাস্কাটে দূতাবাস প্রাঙ্গণে আমাদের প্রাণের ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ সুরের মূর্ছনায় দূতাবাস কর্মকর্তা ও কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন ওমানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিজানুর রহমান।

কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্বের দূতাবাস মিলনায়তনে আয়োজিত দিবসের আলোচনা পর্বের শুরুতেই উপস্থিত স্বাধীনতার ‘সুবর্ণজয়ন্তী’ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ‘ভিডিও’ বার্তা প্রদর্শন করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। এ ছাড়া কমিউনিটি ব্যক্তিত্বদের নিয়ে ‘মুজিব বর্ষ’ ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে কেক কাটেন রাষ্ট্রদূত মিজানুর রহমান।

ওমানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দূতাবাস আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত, কর্মকর্তা এবং কমিউনিটি সংগঠকরা
ওমানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দূতাবাস আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত, কর্মকর্তা এবং কমিউনিটি সংগঠকরা

আলোচনা পর্বে অংশ নেন দূতালায় প্রধান নাহিদ ইসলাম, শ্রম কাউন্সেলর হুমায়ুন কবির, প্রথম সচিব আনোয়ার হোসেন, কাউন্সেলর (পলিটিক্যাল) মৌসুমী রহমান, বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব ওমানের সহ সভাপতি রেজাউল করিম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ওমান শাখার সভাপতি প্রকৌশলী মুস্তফা কামাল, সাধারণ সম্পাদক কিবরিয়া কামাল, চট্টগ্রাম সমিতি ওমানের সভাপতি মো. ইয়াছিন চৌধুরী সিআইপি, সাধারণ সম্পাদক লায়ন তাপস কুমার বিশ্বাস, ওমান বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মো. শাহাবুদ্দিন, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডশনের সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ বাংলাদেশি কমিউনিটি সংগঠকরা।

Travelion – Mobile

বক্তারা, ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত বাঙালি জাতির জীবনে ঘটে যাওয়া নির্যাতন–নিপীড়নের মধ্যে থেকে একটা জাতিকে স্বাধীনতাযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে আমাদের জাতিরজনকের নেতৃত্বের দৃঢ় প্রত্যয়ের কথা স্মরণ করেন। তারা বলেন, সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন নিয়ে বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করেছেন, যে চেতনায় উজ্জীবিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে।

রাষ্ট্রদূত মিজানুর রহমান তার বক্তব্যের শুরুতেই গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যাঁর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। সেই সঙ্গে তিনি বিনম্র শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন স্বাধীনতা যুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ, সম্ভম হারানো দুই লক্ষ মা বোন, জাতীয় চার নেতাকে এবং শ্রদ্ধা জানান সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি।

দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রাম ও তৎপরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর অনন্য নেতৃত্ব ও অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরেন। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ যুদ্ধ–পরবর্তী চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে কীভাবে যাত্রা শুরু করেছিল এবং সেই অবস্থান থেকে কীভাবে আজ একটি গর্বিত এবং আত্মবিশ্বাসী দেশে পরিণত হয়েছে, রাষ্ট্রদূত তা ব্যাখ্যা করেন।

ওমানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মাস্কাট দূতাবাস ভবনে আলোকসজ্জা
ওমানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মাস্কাট দূতাবাস ভবনে আলোকসজ্জা

রাষ্ট্রদূত বলেন, ২৬ মার্চ আমাদের বাঙালির জাতীর জীবনের এক অবিস্মরণীয় দিন। কারণ, এ দিন থেকেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। আর এই স্বাধীনতা অর্জনের ডাক দিতে গিয়ে আমাদের জাতির জনক নিশ্চিত মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছিলেন। নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও ‘সোনার বাংলা’ গড়ে দিতে, বাঙালি জাতিকে একটি স্বাধীন পতাকা দিতে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।

তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ার জন্য বঙ্গবন্ধু কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু অল্প সময়ে তিনি এ কাজ সমাপ্ত করতে পারেননি। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরীপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বৈশিক পরিমণ্ডলে একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুজিববর্ষে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হওয়ার চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা অর্জনের পথে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!