ওমানে নিষিদ্ধ হচ্ছে পলিথিন শপিং ব্যাগ!

পলিথিনই একমাত্র বস্তু পণ্য বহন বা প্যাকেটজাত করা ছাড়া এর আর কোনো উপকারিতা নেই। পলিথিনের উৎপাদনকারী থেকে বাজারজাতকারী ও ব্যবহারকারীরা সবাই জটিল স্বাস্থ্যঝুঁঁকির মুখে রয়েছে। পলিথিন মাটির সঙ্গে মেশে না। ফলে মাটির উর্বরতা শক্তি নষ্ট করে। ডাস্টবিনে ফেলা পলিথিন বৃষ্টির পানির সঙ্গে ড্রেনে ঢুকে পড়ে। ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। পলিথিন নদীর তলদেশে জমা হয়ে নদীর তলদেশ ভরাট করে ফেলে। পলিথিন পোড়ালে বায়ুদূষণ ঘটে। পলি ব্যাগ ব্যবহারে চর্মরোগ, ক্যান্সারসহ আরও জটিল রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি আছে। হতে পারে চর্মরোগ। পলিথিনে মাছ, মাংস মুড়িয়ে রাখলে কিছুক্ষণ পর এতে রেডিয়েশন তৈরি হয়ে খাবার বিষাক্ত হয়ে ওঠে।

জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলি বাস্তবায়নের জন্য পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত জাতীয় কর্মপরিকল্পনাগুলিতে প্লাস্টিক পণ্য এবং বর্জ্যব্যবস্থাপনাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে পলিথিন শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এমন সব ক্ষতির আর হুমকির উপাদানের পলিথিন শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ হচ্ছে মরুর দেশ ওমানে। দেশের পরিবেশের উপর প্লাস্টিকের মারাত্বক ক্ষতিকারক দিকগুলি বিবেচনায় আগামী বছরের প্রথম দিকে দেশটিতে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে একবার ব্যবহার উপোযোগী প্লাস্টিক বা পলিথিন শপিং ব্যাগ। এর পরিবর্তে পরিবেশ-বান্ধব শপিং ব্যাগের প্রচলন করার পরিকল্পনা করছে দেশটির সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

Travelion – Mobile

এই পদক্ষেপটি প্রস্তাব করেছে ওমানের পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয় (এমইসিএ), যা বর্তমানে বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে ।

তাই এমইসিএর রাসায়নিক বিভাগ একবার ব্যবহার উপযোগী পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধকরণ আগামী বছর কার্যকরের লক্ষ্যে খসড়া প্রস্তাবনার বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য এবং তাদের পুনঃ ব্যবহারযোগ্য ব্যাগের সাথে প্রতিস্থাপনের জন্য গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ের সচিবালয়ে বৈঠক করেছেন।

খসড়া অনুসারে, সুপারমার্কেট এবং খুচরা বিক্রেতাকে পরের বছর থেকে প্লাস্টিকের ক্যারিয়ার ব্যাগ সরবরাহ করতে বাধা দেওয়া হবে এবং এগুলো প্রতিস্থাপন ব্যবস্থা করা হবে।
প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে শেষ করার এক বছরের বাড়তি সময় দেওয়া হবে।

প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে শেষ করার এক বছরের বাড়তি সময় দেওয়া হবে
প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে শেষ করার এক বছরের বাড়তি সময় দেওয়া হবে

এমইসিএ কর্মকর্তার মতে, প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে শেষ করার জন্য তাদের এক বছরের বাড়তি সময় দেওয়া হবে। “জনগণ এর যথেষ্ট পরিমাণে (প্লাস্টিক) ব্যবহার করেছে এবং এটি আমাদের পরিবেশ এবং জীবনকে নষ্ট করছে। এখন সময়ের দাবি এটি বন্ধ করার।

মন্ত্রণালয় কর্মকর্তারা বলছেন,’আমরা এটিকে প্রতিরোধ করতে এবং এই ব্যাগগুলিকে পরিবেশ বান্ধব, জৈব জোটবদ্ধ এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যাগগুলির সাথে প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করছি।”

এমইসিএ-এর পরিবেশ বিষয়ক মহাপরিচালক আহমেদ আল হিনাই বলেছেন, “এক ব্যবহার উযযোগী পলি ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে, বিশেষত বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলোচনা চলছে। যদিও এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জারি করা হয়নি, আমরা আগামী ২০২০ সালের শুরুতে বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক এটি জারির অপেক্ষায় রয়েছি।”

“২০২০ সালের শুরুতে যদি পলিথিন শপিং ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাহলে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহারের জন্য কারখানা ও দোকানগুলিকে এক বছরের জন্য সময় দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পরে তাদের প্রচলন এবং ব্যবহার এক বছরের জন্য পর্যবেক্ষণ করা হবে”, তিনি যোগ করেন।

এই বৈঠকের বাস্তবায়ন মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার সাথে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি ও সরকারী ও বেসরকারী খাতের সাথে সহযোগিতা আরও গভীর করার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের প্রচেষ্টাকে আরো জোরদার করবে।

[প্রিয় পাঠক, আকাশযাত্রা প্রবাস বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকসহ কমিউনিটি ও সংগঠনের নানান খবর, ভ্রমণ, আনন্দ-বেদনার গল্প, ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণসহ যে কোনো বিষয়ে লিখে পাঠাতে পারেন। লেখা ছবিসহ মেইল করুন [email protected] এই ঠিকনায়]

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!