ওমানে ঘরোয়া চিকিৎসাতেই সুস্থ করোনাক্রান্ত প্রবাসী পরিবার
মো. রিয়াদ। ওমানপ্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী। এক যুগ ধরে বসবাস করছেন রাজধানী মাস্কাটে। ওয়াদি কবির এলাকায় রয়েছে তার গাড়ির টায়ারের ব্যবসা। ছয়মাস আগে একমাত্র পুত্রসন্তানসহ স্ত্রীকে দেশ থেকে নিয়ে আসেন প্রবাসে। তিনি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাটের হাজ্বী রহমত আলী সারাং বাড়ির জামাল উদ্দিনের ছেলে।
তিনমাস মতো অতিবাহিত হওয়ার পর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ওমানেও শুরু হয় করোনার মহামারীর প্রাদূর্ভাব। লকডাউনে পরিবার নিয়ে গৃহবন্দি হয়ে পড়েন তিনি। মাঝে মধ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল কিনতে গিয়ে বের হতেন।
একদিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। সাথে সাথে স্ত্রী ও পুত্র সস্তানটিও অসুস্থ। সরকারের ব্যবস্থা করা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে করোনা পরীক্ষা করে তিনজনেরই রিপোট পজিটিভ আসে।
এরপর শুরু হয় স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে রিয়াদের প্রবাস জীবনে করোনাজয়ের যুদ্ধ। আর সেই যুদ্ধ হাসপাতালে গিয়ে নয়, নিজ বাসাতে কোয়ারেন্টিনে থেকেই। শেষপর্যন্ত মারণঘাতিকে পরাজিত করে নতুন জীবন পেয়েছেন।
রিয়াদ বলেন, “প্রবাসে এভাবে পরিবারে সবাই একসাথে পজিটিভ আসলে মনোবল কতোটা ভেঙ্গে যাবে তা কল্পনা করেন। তবুও আমি ভেবেছি, আমাকে শক্ত থাকতে হবে, অন্যথায় স্ত্রী পুত্রের কি হবে। যথারীতি চিকিৎসক আমাদের বাসায় থেকে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন। অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট হলে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে বললেন।”
“রোজ চারবার করে আদা, রসুন, লেবু, লং, এলাচি একটি ভাটিতে গরম করে তার ভাব নিতে বললেন। একই সাথে সেগুলো পানও করতাম। জ্বরের জন্য শুধুমাত্র পেনাডল দিয়েছিল। ফলমূল বেশি খেতাম। মহান রবেব দোয়ায় আমরা সবাই ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠি। প্রায় বিশদিন পর সম্পূর্ণ সুস্থ এখন আমরা,”বলেন রিয়াদ।
করোনা জয় করা এই বাংলাদেশি অদম্য যুবক আরও বলেন, “আসলে এ রোগের সবচেয়ে বড় সমস্যা মনোবল হারিয়ে ফেলা। মনোবল হারিয়ে বেশিরভাগ মানুষ হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যাচ্ছে। যাদের খুব বেশি শ্বাসকষ্ট নেই, তারা আলাদা হয়ে থেকে ঘরোয়াভাবে চিকিৎসা নিলেই দ্রুত সেরে উঠবেন। সবার আগে দরকার মনোবল শক্ত রাখা।”
তার দেখানো এই পথ অনুসরণ করে বাকি প্রবাসী বাংলাদেশিরাও মারণঘাতি করোনাভাইরাসকে পরাস্ত করতে পারবেন এমনটি প্রত্যাশা সবার।