ইথিওপিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের ‘গণহত্যা দিবস’ পালন

ইথিওপিয়ায় যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে ‘গণহত্যা দিবস’ পালন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) বিকেলে রাজধানী আদ্দিস আবাবায় বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে দিবসটি উপলক্ষে একটি ভার্চুয়াল (ওয়েবিনার) স্মরণসভার আয়োজন করা হয়, যেখানে ইথিওপিয়া এবং পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের প্রবাসী বাংলাদেশি, বিদেশী নাগরিক এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ যুক্ত হয়েছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং ২৫ মার্চ ১৯৭১-এর কালরাত্রিতে শাহাদাত বরণকারী আবালবৃদ্ধবনিতাসহ স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মদানকারী সকল শহীদদের জন্য মোনাজাত ও দোয়া করা হয় এবং তাঁদের পবিত্র স্মৃতির সম্মানে একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।

ভার্চুয়াল মুক্ত আলোচনায় শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে দূতাবাসের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সুমন রেজা, মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার আহবানে সাঁড়া দিয়ে মুক্তিকামী বাঙালির প্রতিরোধের কাহিনী তুলে ধরেন এবং গণহত্যা বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন।

Travelion – Mobile

এরপর ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারীরা ২৫ মার্চের গণহত্যা, এর ব্যাপকতা এবং মুক্তি সংগ্রামে এর প্রতিক্রিয়াসহ বিভিন্ন দিক আলোচনা করেন, তারা ‘গণহত্যা’ দিবস পালনের বর্তমান সরকারী সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান এবং একে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলে মতামত প্রদান করেন।

তারা ২৫ মার্চ থেকে শুরু করে নয় মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসরদের নির্মম হত্যাযজ্ঞ, অত্যাচার এবং ধ্বংসলীলা তুলে ধরে সেসব মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের ক্রমাগত আন্তর্জাতিক বিচারের আওতায় আনা এবং চলমান বিচারপ্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তাঁরা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন এবং বিচার প্রক্রিয়ার সপক্ষে জনমত গড়ে তোলার জন্য আহবান জানান। অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি বাহিনীর পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিষয়টিও আলোচিত হয়।

দূতাবাসের কাউন্সেলরদ্বয়ের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারের সমাপনী বক্তব্যের শুরুতে ইথিওপিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যবৃন্দসহ বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামের সকল শহীদদের স্মরণে গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি ২৫ মার্চের গণহত্যার মর্মন্তুদ ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে গণহত্যার ব্যাপকতার ওপর আলোকপাত করেন। তিনি ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের বর্তমান সরকারের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটও তুলে ধরেন।

রাষ্ট্রদূত বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল মুক্তি সংগ্রাম থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রেখে দেশকে সমৃদ্ধ আগামীর পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি অনুরোধ জানান।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!