‘অবশেষে হলাম পর্তুগিজ’

দীর্ঘ ৭ বছর ৬ মাস ৩ দিন পরে ইউরোপের দেশ পর্তুগাল তথা ইউরোপীয়ান নাগরিকত্ব অর্জন করলাম। গত মঙ্গলবার অফিসিয়াল কনফার্মেশন পেলাম। পরের দিন পর্তুগিজ সিটিজেন কার্ডের আবেদন এবং শুক্রবার কাঙ্ক্ষিত সেই লাল পাসপোর্ট!

প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের পাশাপাশি পর্তুগালও এখন আমার নিজের দেশ। আসলে বিগত সাড়ে সাত বছর কখনোই মনে হয়নি ভিন দেশে রয়েছি। পর্তুগালের মানুষ এবং সরকার উভয়ই অভিবাসন বান্ধব ও মানবিক। এখানে রেসিজম একেবারে নেই বল্লেই চলে পাশাপাশি অভিবাসীদের জীবনযাপন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও চলাফেরা ও বেশ স্বাধীনতা রয়েছে।

পর্তুগালের পাসপোর্ট
পর্তুগালের পাসপোর্ট

পাসপোর্ট ইনডেক্স ২০২৩ এর তথ্য মতে পর্তুগিজ পাসপোর্ট বিশ্বের ৩ নাম্বার শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে যা দিয়ে বিশ্বের ৮৭ শতাংশ অঞ্চল বা দেশ অর্থাৎ ১৮৮ টি দেশে বিনা ভিসায় ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া বসবাসের জন্য দেশটি বিশ্বের সপ্তম শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে উঠে এসেছে সাম্প্রতিক সময়ে।

Travelion – Mobile

লিসবন ইউরোপের তৃতীয় প্রাচীন শহর যা এথেন্স ও রোমের পরে অবস্থান। খ্রিস্টপূর্ব ১২শ শতক থেকে এই শহরে মানুষজন বসবাস করে আসছে। দেশটি র্পোট ওয়াইন এর জন্য বিশ্ব খ্যাত যা ডোর নদীর উপত্যকায় উৎপাদন করা হয়। ফাদো মিউজিক ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

মাল্টিকালচারাল একাডেমিতে পর্তুগিজের ভাষা-সংষ্কৃতি নিয়ে ভ্রমণে অংশগ্রহণকারীদের কর্মশালা।
মাল্টিকালচারাল একাডেমিতে পর্তুগিজের ভাষা-সংষ্কৃতি নিয়ে ভ্রমণে অংশগ্রহণকারীদের কর্মশালা।

পর্তুগিজ ভাষা বিশ্বের ৫ম ভাষা যা প্রায় ২৩০ মিলিয়ন মানুষ প্রথম ভাষা হিসেবে ব্যবহার করে ও আরো প্রায় ২৫/৩০ মিলিয়ন মানুষ দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ব্যবহার করে। বিশ্বের ৬ টি দেশের অফিসিয়াল ভাষা হল পর্তুগীজ এবং বেশ কয়েকটি দেশের দ্বিতীয় অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে এটি ব্যবহার হয়ে আসছে। দেশটির আরো অনেক মজাদার বিষয় রয়েছে যা পরে হয়তো কখনো শেয়ার করবো।

দীর্ঘ এই পর্তুগাল তথা ইউরোপ যাত্রায় সাথে ছিলেন বা ছিলেন না এবং আলোচনা ও সমালোচনার মাধ্যমে যারা আমাকে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছেন সবাইকে ধন্যবাদ। কেউ কখনো একক ভাবে তার জীবনের নিদিষ্ট একটি অধ্যায় শেষ করতে পারে না। আমার বেলায়ও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

পর্তুগালের লিসবনের প্রাচীন মুরারিয়া এলাকায় ইউরোপীয় শিক্ষার্থীদের কাছে পতাকা নিয়ে বাংলাদেশের গল্প তুলে ধরছেন গাইড-লেখক।
পর্তুগালের লিসবনের প্রাচীন মুরারিয়া এলাকায় ইউরোপীয় শিক্ষার্থীদের কাছে পতাকা নিয়ে বাংলাদেশের গল্প তুলে ধরছেন গাইড-লেখক।

আমার এ যাত্রায় দেশে বিদেশে অনেকেই বিভিন্নভাবে পাশে ছিলেন এবং সহযোগিতা করেছেন। সবার হয়তো নাম ধরে ধন্যবাদ দেওয়া সম্ভব হবে না কিন্তু সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

জীবনের বড় একটি অধ্যায় শেষ হয়েছে এখন পরবর্তী অধ্যায়ে যাওয়ার পালা। বাবা মা, স্ত্রী সন্তান, ভাই বোন, আত্মীয় স্বজনসহ দেশে বিদেশে সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে দোয়া কামনা যেন অনাগত ভবিষ্যতে সুন্দর একটি জীবন গড়তে পারি যেখানে পরিবার, সমাজ ও দেশের কল্যাণে কাজ করার সুযোগ থাকবে।

প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!