পর্তুগালে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন
পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলাদেশের ৫২ তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। এ উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও পর্তুগালের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অভ্যর্থনার আয়োজন করা হয়।
সোমবার (২০ মার্চ) লিসবনের হোটেল ম্যারিয়টে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ বছর মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পবিত্র মাহে রমজান ও সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে হওয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরামর্শক্রমে আগাম উদযাপন করে দূতাবাস।
পর্তুগাল সরকারের সমতা ও অভিবাসন বিষয়ক সচিব (প্রতিমন্ত্রী) ড. ইসাবেল আলমেইদা রদ্রিগেস, পর্তুগাল-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের সহ-সভাপতি পেদ্রো আনাস্তাসিও, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জর্জ সিলভা লোপেজ এবং পর্তুগালে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত,কূটনীতিক মিশনের প্রধান, পর্তুগালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী, সাংবাদিক এবং প্রবাসী বাংলাদেশি সংগঠক ও বিশিষ্টজনেরা অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
পর্তুগালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান ও তাঁর সহধর্মিনী অতিথিদের অতিথিদের স্বাগত জানান। এ সময় দূতাবাসের প্রথম সচিব মো. আলমগীর হোসেন সঙ্গে ছিলেন।
স্বাগত বক্তব্যের শুরুতে রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান তাঁর, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনাদের চরম আত্মত্যাগের কথা গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের নেতৃত্বে বিগত ১৪ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ শান্তি, উন্নয়ন, নিরস্ত্রীকরণ, জলবায়ু পরিবর্তন, ধর্মীয় মধ্যপন্থা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান,গত এক বছরে বাংলাদেশ ও পর্তুগালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিবাচক অগ্রগতির বিষয়টিও তুলে ধরেন যার মধ্যে অন্যতম হলো ২য় জাতিসংঘ সমুদ্র সম্মেলনের সাইড লাইনে অনুষ্ঠিত দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যেকার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীদের পর্যায়ে প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষিক সফর বিনিময়। প্রথম পর্তুগাল-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ গঠন, পর্তুগিজ সরকারের তিনটি প্রতিষ্ঠানের সাথে বাংলাদেশের তিনটি প্রতিষ্ঠানের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, ২০২১ থেকে ২০২২ সময়কালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় শতকরা ৫০ ভাগ বৃদ্ধি।
পর্তুগাল সরকারের সমতা ও অভিবাসন বিষয়ক সচিব (প্রতিমন্ত্রী) ড. ইসাবেল আলমেইদা রদ্রিগেস তার শুভেচ্ছা বক্তব্যের শুরুতে স্বাধীনতার ৫২তম বার্ষিকী ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশের সকল মানুষকে অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও পর্তুগালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিগত বছরগুলোতে অনেকে গভীর হয়েছে, আগামীতে আরও বাড়বে বলে আশা করছি।
তিনি পর্তুগালের অর্থনীতিতে বাংলাদেশি অভিবাসীদের অবদানের প্রশংসা করেন এবং পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের জীবনযাত্রা ও কর্মপরিবেশের উন্নয়নে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে মিলে কাজ করার প্রত্যায় প্রকাশ করেন।
পরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত অতিথিদের নিয়ে স্বাধীনতা দিবসের কেক কাটেন।
অনুষ্ঠানের শেষপর্বে দেশাত্মবোধক ও লোকগীতির সুরে প্রবাসী শিল্পীদের নৃত্য পরিবেশনা বিদেশি অতিথিদের মুগ্ধ করে।
এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানস্থলে ‘বিউটিফুল বাংলাদেশে’ শিরোনামের একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীরও আয়োজন করে দূতাবাস।